কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (৩৭) : মাসিক আল-ইতিছাম ৩য় বর্ষ ৮ম সংখ্যার ৩৭ নং প্রশ্নের জবাবে বলা হয়েছে, ‘রুকূর পরে বুকে হাত বাঁধা ঠিক নয়’। তাহলে হাত কোথায় রাখবে এবং তার পক্ষে সঠিক দলীল কী?

উত্তর : রুকূ থেকে উঠার পর উভয় হাত স্বাভাবিকভাবে ছেড়ে দেওয়াই সুন্নাতসম্মত। কেননা রুকূর পরে পুনরায় বুকে হাত বাঁধার স্পষ্ট কোনো দলীল পাওয়া যায় না। বিখ্যাত ছাহাবী আবু হুমায়েদ সা‘য়েদী রাযিয়াল্লাহু আনহুযিনি ১০ জন ছাহাবীর সম্মুখে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ছালাতের নমুনা প্রদর্শন করে সত্যায়ন প্রাপ্ত হয়েছিলেন, সেখানে বলা হয়েছে-فَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ اسْتَوَى حَتَّى يَعُودَ كُلُّ فَقَارٍ مَكَانَهُ ‘তিনি রুকূ থেকে মাথা উঠিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে গেলেন এমনভাবে যে, মেরুদ--র জোড়সমূহ স্ব স্ব স্থানে ফিরে আসে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৮২৮; মিশকাত, হা/৭৯২)। ওয়ায়েল বিন হুজ্র ও সাহ্ল বিন সা‘দ রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত ‘ছালাতে বাম হাতের উপরে ডান হাত রাখার ‘আম’ হাদীছের (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, হা/৭৯৭,৭৯৮) উপরে ভিত্তি করে রুকূর আগে ও পরে ক্বওমার সময় বুকে হাত বাঁধার কথা বলা হয়। কিন্তু হাত না বাঁধার দলীল হিসাবে পেশকৃত উপরোক্ত হাদীছগুলো রুকূ পরবর্তী ‘ক্বওমা’র অবস্থা সম্পর্কে ‘খাছ’ভাবে বর্ণিত হয়েছে। তাছাড়া বুকে হাত বাঁধার বিষয়টি হাতের স্বাভাবিক অবস্থার পরিপন্থী। এক্ষণে মেরুদ-সহ দেহের অন্যান্য অস্থিসমূহকে স্ব স্ব জোড়ে ফিরে আসতে গেলে ক্বওমার সময় হাতকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে দেওয়াটাই ছহীহ হাদীছসমূহের যথাযথ অনুসরণ বলে অনুমিত হয় (বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, ছিফাতু ছালা-তিন্নবী, পৃঃ ১২০; ছালাতুর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, পৃঃ ১০৭)। তবে স্মর্তব্য যে, উক্ত বিষয়টি ছালাতের মধ্যেকার সুন্নাতের পর্যায়র্ভুক্ত। অতএব এ বিষয়ে সকল প্রকার বাড়াবাড়ি হতে বিরত থাকা কর্তব্য।

প্রশ্নকারী : জহুরুল বিন আব্দুস ছাত্তার

নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।


Magazine