কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (৩৪): পিতার মৃত্যু হলে সন্তানরা দাদার সম্পত্তিতে অংশ পায় না। অথচ ইয়াতীম নাতি-নাতনিদের প্রয়োজন বেশি থাকে, তবু ইসলামী শরীআতে তাদের অধিকার নেই। এতে আল্লাহর কী হিকমত রয়েছে?

উত্তর: ইসলামের বিধান অনুযায়ী নাতি তার দাদার ওয়ারিছ হবে না, যদি তার পিতা তার দাদার পূর্বে ইন্তিকাল করে থাকে এবং তার আপন চাচা জীবিত থাকে। এক্ষেত্রে কী হিকমত রয়েছে এটা জানার পূর্বে আমাদের জন্য আবশ্যক হলো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা যে, ইসলামের প্রত্যেক বিধানে আল্লাহ তাআলার হিকমত রয়েছে এবং মানুষের জন্য কল্যাণ, সেটা আমাদের বুঝে আসুক বা না আসুক। পবিত্র কুরআনে ওয়ারিছদের অংশ বর্ণনা করার পর আল্লাহ তাআলা বলেন,

آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ لَا تَدْرُونَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ لَكُمْ نَفْعًا فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا 

‘তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্য অধিক উপকারী তা তোমরা জান না। এটা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত অংশ। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়’ (আন-নিসা, ৪/১১)। উক্ত আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, কে ওয়ারিছ হবে আর কে হবে না এবং কার অংশ কী পরিমাণ হবে এ ব্যাপারে মানুষ জ্ঞান রাখে না; বরং আল্লাহ তাআলা সর্বাধিক জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা রাখেন। দ্বিতীয়ত, উক্ত বিধানের ক্ষেত্রে আলেমগণ যে হিকমতের কথা উল্লেখ করে থাকেন তা হলো, যখন উক্ত নাতির পিতা ইন্তিকাল করেছিলেন, তখন নাতি ওয়ারিছ হয়েছিল এবং তার উপস্থিতির কারণে তার চাচারা ওয়ারিছ হতে পারেনি। তেমনিভাবে যখন তার দাদা ইন্তিকাল করলেন, তখন তার চাচাদের উপস্থিতির কারণে সে ওয়ায়িছ হতে পারবে না, এটাই শরীআত। কারণ উভয়ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির সরাসরি সন্তানকে তার ভাই বা নাতির ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইসলাম তার দাদার জন্য এই সুযোগ রেখেছে যে, তিনি তার ইয়াতীম নাতি-নাতনিদের জন্য মোট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে ওছিয়ত করতে পারবেন (ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৬৮)। তাদের চাচাদের জন্য উচিত হলো, প্রাপ্ত সম্পত্তি থেকে কিছু অংশ উক্ত ইয়াতীম নাতি-নাতনিদের প্রদান করা। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَإِذَا حَضَرَ الْقِسْمَةَ أُولُو الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينُ فَارْزُقُوهُمْ مِنْهُ وَقُولُوا لَهُمْ قَوْلًا مَعْرُوفًا

‘আর যখন (মীরাছ) বণ্টনের সময় (ওয়ারিছ নয় এমন) আত্মীয়, ইয়াতীম ও মিসকীন উপস্থিত হয়, তখন তাদেরকেও তা থেকে কিছু দাও এবং তাদেরকে উত্তম কথা বলো’ (আন-নিসা, ৪/৮)। এছাড়াও এসময় চাচারা পরীক্ষিত। তারা পিতার স্থানে ভাতিজাকে লালনপালনের দায়িত্ব পালন করবেন, দায়িত্বে অবহেলা করলে গুনাহগার হবে।

প্রশ্নকারী : আব্দুর রাকিব বিন আহমেদ

ইকরা ফাউন্ডেশন, সখের বাজার, নীলফামারী।


Magazine