কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (১৭) : বিবাহ সম্পাদনের সঠিক পদ্ধতি কী?

উত্তরবিবাহ পড়ানোর নিয়ম হলো, প্রথমে খুৎবা দেওয়া। অতঃপর কিছু কথার মাধ্যমে বিবাহ বাস্তবায়ন করা। নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুৎবার মধ্যে সূরা আলে ইমরানের ১০২ নং আয়াত, আন-নিসার ১ নং আয়াত ও আল-আহযাবের ৭০-৭১ নং আয়াত পাঠ করতেন। অতঃপর বিবাহ সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কথা বলতেন (দারেমী, হা/২২০২; ইবনু মাজাহ, হা/১৮৯২; আবূ দাঊদ, হা/২১১৮; নাসাঈ, হা/১৪০৪; মিশকাত, হা/৩১৪৯)। কাজেই খুৎবা পড়ার পর মেয়ের পিতা বা অভিভাবক বা তাদের উপস্থিতিতে অন্য কেউ বরের সামনে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বলবেন, আমার মেয়ে ওমুক এতো নগদ ও এতো বাকী মোহরের বিনিময়ে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে রাযী তুমি তাকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করো। তখন সে মেয়ের ওলী ও দুজন সাক্ষীকে শুনিয়ে বলবে, ‘ক্বাবিলতু’ (আমি গ্রহণ করলাম)। এরূপ তিনবার হওয়া ভালো। কারণ রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুরুত্বপূর্ণ কথা তিনবার বলতেন (ছহীহ বুখারী, মিশকাত, হা/৩০৮)। অতপর ওলীসহ অন্যরা তাদের মঙ্গলের জন্য নিম্নের দু‘আ পাঠ করবে। আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো ব্যক্তির বিবাহ সম্পাদনকালে বলতেন,بَارَكَ اللهُ لَكَ وَبَارَكَ عَلَيْكَ وَجَمَعَ بَيَنَكُمَا فِىْ خَيْرٍ،

উচ্চারণ : বা-রাকাল্লুহ লাকা ওয়া বা-রাকা আলাইকুমা ওয়া জামাআ বায়নাকুমা ফী খয়রিন। অর্থ: ‘আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন ও তোমাদের উভয়কে বরকত দান করুন। তিনি তোমাদের উভয়ের মাঝে দাম্পত্য মিলন কল্যাণমণ্ডিত করুন’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৯৫৭; তিরমিযী, হা/১০৯১; আবূ দাঊদ, হা/২১৩০; ইবনু মাজাহ, হা/১৯০৫; মিশকাত হা/২৪৪৫)।

উল্লেখ্য যে, বিবাহের খুৎবা দাঁড়িয়ে দেওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। তাছাড়া কনের কাছে গিয়ে বিবাহ পড়ানো বা তার জবানবন্দী গ্রহণেরও কোনো প্রমাণ নেই। বরং কনের অনুমতি অবিভাবক নিবে। সমাজে প্রচলিত এ সকল প্রথা মানব রচিত। যার কোনো শারঈ ভিত্তি নেই। বিয়ের খুৎবা নিম্নরূপ:

إِنَّ الْحَمْدَ لِلهِ نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِيْنُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ وَنَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ شُرُوْرِ أَنْفُسِنَا وَمِنْ سَيِّآتِ أَعْمَالِنَا مَنْ يَهْدِهِ اللهُ فَلاَ مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلاَ هَادِىَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اتَّقُوْا اللهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلاَ تَمُوْتُنَّ إِلاَّ وَأَنْتُمْ مُسْلِمُوْنَ. يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوْا رَبَّكُمُ الَّذِىْ خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيْراً وَنِسَاءً وَاتَّقُوْا اللهَ الَّذِىْ تَسَاءَلُوْنَ بِهِ وَالْأَرْحَامَ إِنَّ اللهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيْباً. يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اتَّقُوْا اللهَ وَقُوْلُوْا قَوْلاً سَدِيْدًا يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَمَنْ يُطِعْ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيْمًا

(ইবনু মাজাহ, হা/১৮৯২; আবূ দাঊদ, হা/২১১৮; নাসাঈ, হা/১৪০৪; দারেমী, হা/২২০২; মিশকাত, হা/৩১৪৯; আলে ইমরান, ৩/১০২; আন-নিসা, ৪/১; আল-আহযাব, ৩৩/৭০-৭১)| উল্লেখ্য যে, বিবাহ বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত হলো ১. মেয়ের ওলী বা অভিভাবকের অনুমতি (আবূ দাঊদ, হা/২০৮৫; মিশকাত, হা/৩১৩০)। ২. কন্যার সম্মতি বা অনুমতি (ছহীহ বুখারী, হা/৫১৩৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪১৯; মিশকাত, হা/৩১২৬)। ৩. স্বামীর গ্রহণ এবং ৪. দু’জন সাক্ষী।

প্রশ্নকারী : মাহমুদুল হাসান

চারঘাট, রাজশাহী।


Magazine