একদা আমার আম্মু আমাকে টিফিন সহকারে স্কুলে পাঠালেন। পথিমধ্যে আমি খুবই কষ্টদায়ক একটি দৃশ্য দেখতে পেলাম। তা হলো— এক গরীব বৃদ্ধা মহিলা তার ছেলেকে পড়াশুনার জন্য অনেক দূরে পাঠাবেন। কিন্তু ছেলেটাকে কী খাওয়ায়ে পাঠাবেন, তা নিয়ে তিনি খুব চিন্তায় পড়ে গেলেন। কারণ তার কাছে তখন কোনো খাবার ছিল না। বৃদ্ধা মহিলাটি তার কয়েক প্রতিবেশির কাছে গেলেন। কিন্তু তাদের কাছে খাবার থাকা সত্ত্বেও তারা খাবার দিলো না। আমি এতে খুব কষ্ট পেলাম এবং আমার টিফিন উনাকে দিয়ে দিলাম। মহিলাটি তার সন্তানকে তা খাওয়ালেন এবং আমার জন্য দু‘আ করলেন,
اللَّهُمَّ أَطْعِمْ مَنْ أَطْعَمَنِى وَاسْقِ مَنْ سَقَانِى.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আত্বইম মান আত্বআমানী ওয়াসক্বি মান সাক্বানী। অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি তাকে খাওয়াও যিনি আমাকে খাইয়েছেন এবং তাকে পান করাও যিনি আমাকে পান করিয়েছেন।[1]
অতঃপর ছেলেটি পড়াশুনার উদ্দেশ্যে বের হলো। দীর্ঘ ১০ বছর পর দেশে ফিরে আসলো এবং একটা ভালো চাকরি পেল। একদিন আমি খুব বিপদে পড়লাম। তখন আমার কিছু টাকার প্রয়োজন ছিল। হঠাৎ আমি পথে সেই মহিলাটিকে দেখতে পেলাম। আমি উনাকে সালাম দিলাম। মহিলাটির গায়ে সেদিনের মতো ছেঁড়া পোশাক নেই। সবকিছু ছিল নতুন এবং দামী। মহিলাটি আমাকে ব্যস্ত এবং চিন্তিত দেখে বললেন, তোমার নাম কী, মা? আমি আমার নাম বলার পর মহিলাটি আমাকে চিনতে পারলেন এবং আমার চিন্তার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। আমি কারণটি বলার পর মহিলাটি আমাকে বললেন, একদিন তুমি আমাকে সাহায্য করেছিলে। তাই আজ তোমাকে সাহায্য করা আমার কর্তব্য। তারপর মহিলাটি আমার প্রয়োজন মতো সাহায্য করলেন আর আমিও বিপদমুক্ত হলাম। আল-হামদুলিল্লাহ।
শিক্ষা : অন্যের উপকার করলে আল্লাহ তাকে যে কোনোভাবে হোক সাহায্য করবেন ইনশা-আল্লাহ।
মা‘রূফা বিনতে মীযানুর রহমান
ছাত্রী, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ,
রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।
[1]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০৫৫।