কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (১৪) : কিছু আলেম বলে থাকেন, ছালাতে ‘রাফ’উল ইয়াদাঈন’ ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাহ কোনোটি নয়। ইহা না করলেও ছালাত হয়ে যাবে। এমন বক্তব্য কি সঠিক?

উত্তর : রাফ’উল ইয়াদাঈন না করলে ছালাত হয়ে যাবে। তবে রাফ’উল ইয়াদাঈন রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর সুন্নাহ একথা অমান্য করলে নবীর সুন্নাহকে অবজ্ঞা করা হবে। রাফ’উল ইয়াদাঈন ছালাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ। এমনকি রাফ’উল ইয়াদাঈন না করলে ছালাতের ছওয়াব কমে যায়। ‘রাফ’ঊল ইয়াদাঈন’ করা সম্পর্কে চার খলীফাসহ প্রায় ২৫ জন ছাহাবী থেকে বর্ণিত ছহীহ হাদীছ রয়েছে। এক হিসাব মতে ‘রাফঊল ইয়াদাঈন’-এর হাদীছের রাবী সংখ্যা ‘আশারায়ে মুবাশ্শারাহ’সহ ৫০ জন ছাহাবী। এবং সর্বমোট ছহীহ হাদীছ ও আছারের সংখ্যা কমপক্ষে চার শত। ইমাম সুয়ূত্বী ও আলবানী প্রমুখ বিদ্বানগণ ‘রাফ’ঊল ইয়াদাঈন’-এর হাদীছকে ‘মুতাওয়াতির’ (যা ব্যাপকভাবে ও অবিরত ধারায় বর্ণিত) পর্যায়ের বলে মন্তব্য করেছেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী, ২/১০০, ১০৬ পৃ.; আলবানী, ছিফাতু ছালা-তিন্নবী, পৃ. ১০৯)| ইমাম বুখারী রহিমাহুল্লাহ বলেন,لَمْ يَثْبُتْ عَنْ أَحَدٍ مِّنْهُمْ تَرْكُهُ. وقَالَ لاَ أَسَانِيْدَ أَصَحُّ مِنْ أَسَانِيْدِ الرَّفْعِ অর্থাৎ কোনো ছাহাবী রাফ’ঊল ইয়াদাঈন তরক করেছেন বলে প্রমাণিত হয়নি। তিনি আরও বলেন ‘রাফ’ঊল ইয়াদাঈন’-এর হাদীছ সমূহের সনদের চেয়ে বিশুদ্ধতম সনদ আর নেই’ (ফৎহুল বারী, ২/২৫৭ পৃ., হা/৭৩৬-এর ব্যাখ্যা)। সুতরাং রাফ’উল ইয়াদাঈনকে উপেক্ষা করার কোনোই সুযোগ নেই। কেউ যদি স্বেচ্ছায় তা উপেক্ষা করে তাহলে সে সুন্নাহকে অমান্য করল (ছহীহ ইবনু খুযায়মা, হা/১৯৭; সিলসিলা ছহীহা, হা/২১৩০)| ছালাতে রাফ’ঊল ইয়াদাঈনের জন্য ১০টি করে নেকী বেশি হয় (সিলসিলা ছহীহা, হা/৩২৮৬)। উক্ববা ইবনু আমের জুহানী রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যখন মুছল্লী রুকূতে যাওয়ার সময় এবং রুকূ থেকে উঠার সময় দুই হাত উত্তোলন করবে তখন তার জন্য প্রত্যেক ইশারায় দশটি করে নেকী হবে (বায়হাক্বী, মা‘রেফাতুস সুনান, হা/৮৩৯; আলবানী, ছিফাতু ছালাতিন নবী, পৃ. ১২৯)। পক্ষান্তরে, রাফ’ঊল ইয়াদাঈন না করলে ছালাতের নেকী কম হয়। আম্মার ইবনু ইয়াসার রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এমন অনেক লোক আছে যারা ছালাত আদায় করে কিন্তু তাদের ছালাত পুরাপুরি কবুল না হওয়ায় পরিপূর্ণ নেকী প্রাপ্ত হয় না। বরং তাদের কেউ দশ ভাগের এক ভাগ, কেউ নয় ভাগের এক ভাগ, কেউ আট ভাগের এক ভাগ, কেউ সাত ভাগের এক ভাগ, কেউ ছয় ভাগের এক ভাগ, কেউ পাঁচ ভাগের এক ভাগ, কেউ চার ভাগের এক ভাগ, কেউ তিনের একাংশ বা অর্ধাংশ নেকী প্রাপ্ত হয়ে থাকে (আবূ দাঊদ, হা/৭৯৬)|

প্রশ্নকারী : মো. আব্দুল গফুর

জিপিও ৯০০০, খুলনা।


Magazine