কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (২৩) : মোনাজাতে অনেক আলেমগণ বলতে শোনা যায়, ‘সবটুকু ছওয়াব সোনার মদিনা নবী পাকের রওজায় পৌঁছে দিন’ এ কথাটা কতুটুকু সঠিক? কুরআন হাদীছের আলোকে ব্যাখ্যা করবেন।

উত্তর :প্রথমত, এ ধরনের দু’আর কোনো ভিত্তি নেই। কেননা এই ধরনের দু’আর অস্তিত্ব ছাহাবী, তাবেঈ, তাবে’-তাবেঈদের যুগে ছিল না। বরং এটা পরবর্তী যুগের নব আবিষ্কৃত বিদ’আত। আর যে বিদ’আত করবে, আল্লাহ তার সেই আমল কবুল করবেন না। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এমন কোনো আমল করল যার ব্যাপারে শরীয়তের কোনো নির্দেশনা নেই তা প্রত্যাখ্যাত’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৭১৮; মিশকাত, হা/৫৩১৫)। দ্বিতীয়ত, মানুষ যত ছওয়াবের কাজ করবে তা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর আমলনামার মধ্যে এমনিতেই যুক্ত হয়ে যাবে। কেননা কোনো ব্যক্তি যদি কাউকে কোনো কল্যাণময় কাজের পথ দেখায়, তাহলে তার এই প্রদর্শিত পথের উপর পরবর্তী যত মানুষ চলবে, তার সমপরিমাণ ছওয়াব তার আমল নামায় লিখে দেওয়া হয়। আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হেদায়াতের দিকে আহ্বান জানায় তার জন্য সে পথের অনুসারীদের ছওয়াবের অনুরূপ ছওয়াব রয়েছে (ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৭৪; মিশকাত, হা/১৫৮)। তৃতীয়ত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পূর্ব-পরের সকল পাপ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাকে দিয়েছি স্পষ্ট বিজয়। যেন আল্লাহ তোমার পূর্বের ও পরের পাপ ক্ষমা করেন’ (আল-ফাতহ, ৪৮/১-২)। হাদীছে বর্ণিত হয়েছে: قَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ ‘তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে (ছহীহ বুখারী, হা/৪৯৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১৯৩)। অত্র কুরআন ও হাদীছ থেকে সুস্পষ্ট বুঝা যায় যে, আল্লাহ মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর সকল পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন। সুতরাং তিনি মানুষের ছওয়াবের প্রতি মুখোপেক্ষী নন।

প্রশ্নকারী : এবাদুল হক হাওলাদার

গোপালগঞ্জ।


Magazine