কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ঈমানের আলো ও মুনাফেক্বীর অন্ধকার (পর্ব-৭)

post title will place here

(খ) ছোট নিফাক্ব : এটাই আমলগত নিফাক্ব। তা হলো, মানুষের জনসম্মুখে সৎকাজ প্রকাশ করে এবং বিপরীতটি গোপন রাখে। এই প্রকার নিফাক্বের মূলনীতিগুলো আব্দুল্লাহ ইবনু উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুমা ও আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা-এর হাদীছের মধ্যে বিদ্যমান। তা পাঁচ প্রকার :

(১) কাউকে কোনো কথা বলা, যে তাকে ঐ কথার ব্যাপারে সত্যায়ন করে, অথচ সে তাকে মিথ্যা বলছে।

(২) যখন ওয়াদা দেয়, তা ভঙ্গ করে। তা আবার দুই প্রকার। যথা—

প্রথম প্রকার : ওয়াদা দেওয়া এবং তার উদ্দেশ্য থাকা যে, সে তার ওয়াদা রক্ষা করবে না। এটা সবচেয়ে নিকৃষ্ট ওয়াদা ভঙ্গ। যদিও সে বলে, আমি এটা করব ইনশাআল্লাহ। অথচ তার উদ্দেশ্য হচ্ছে, মিথ্যা ও ওয়াদা ভঙ্গ হিসেবে সে এটা করবে না। ইমাম আওযাঈ একথা বলেন।

দ্বিতীয় প্রকার : ওয়াদা দেওয়া এবং তার উদ্দেশ্য থাকা যে, সে তার ওয়াদা রক্ষা করবে। অতঃপর তার মনে হওয়া যে, সে ওয়াদা পূর্ণ করবে না। তাই সে কোনো কারণ ছাড়াই তার ওয়াদা ভঙ্গ করে।

(৩) যখন ঝগড়া করে, তখন মিথ্যা অর্থাৎ ফুজূর (فجور)-এর মাধ্যমে ঝগড়া করে। আর ফুজূর হলো, ইচ্ছাকৃতভাবে সত্যচ্যুত হয়। যাতে করে সত্য মিথ্যায় ও মিথ্যা সত্যয় পরিণত হয়। এটা মিথ্যা বলার দিকে আহ্বান করে।

(৪) যখন চুক্তি করে, তখন বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং চুক্তি পূর্ণ করে না। মুসলিম ও অমুসলিমদের মাঝে সকল চুক্তির ক্ষেত্রেই বিশ্বাসঘাতকতা হারাম। যার সাথে চুক্তি করা হয়েছে, যদিও সে কাফের হয়।

(৫) আমানতের খেয়ানত করা। সুতরাং কোনো মুসলিমের নিকট যখন আমানত রাখা হবে, তার উপর আবশ্যক হবে তা রক্ষা করা।

সারকথা হলো, ছোট নিফাক্বের সবকিছুই ফিরে যায় ভিতর ও বাহিরের ভিন্নতার দিকে, হৃদয় ও জিহ্বার ভিন্নতার দিকে এবং প্রবেশ ও বের হওয়ার ভিন্নতার দিকে। এজন্য সালাফে ছালেহীনের একদল বলেছেন,خشوعُ النفاق أنْ ترى الجسدَ خاشعاً والقلب ليس بخاشع ‘নিফাক্বের বিনম্রতা হলো, তুমি দেহকে বিনম্র দেখবে, কিন্তু অন্তর বিনম্র নয়’।[1]

এই প্রকার নিফাক্ব ব্যক্তিকে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের করে না। এটা নিফাক্ব নিম্নস্তরের নিফাক্ব। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ كَانَ مُنَافِقًا خَالِصًا وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْ النِّفَاقِ حَتَّى يَدَعَهَا إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ ‘চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান, সে হচ্ছে খাঁটি মুনাফেক্ব। যার মধ্যে এর কোনো একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফেক্বের একটি স্বভাব থেকে যায়: ১. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে, ২. কথা বললে মিথ্যা বলে, ৩. অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে এবং ৪. বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি দেয়’।[2] আবূ হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীছে এসেছে, তিনি বলেন,آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلَاثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ ‘মুনাফেক্বের চি‎হ্ন তিনটি— ১. কথা বললে মিথ্যা বলে, ২. যখন অঙ্গীকার করে, ভঙ্গ করে এবং ৩. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে’।[3]

বড় নিফাক্ব ও ছোট নিফাক্বের মধ্যে পার্থক্য :

(১) বড় নিফাক্ব ব্যক্তিকে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের করে দেয়। পক্ষান্তরে ছোট নিফাক্ব (আমলগত নিফাক্ব) ব্যক্তিকে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের করে দেয় না’।[4]

(২) বড় নিফাক্ব সমস্ত আমল নষ্ট করে দেয়।

(৩) বড় নিফাক্ব আক্বীদার ক্ষেত্রে ভিতরে ও বাহিরে দু’রকম থাকে। আর ছোট নিফাক্ব আক্বীদা নয়, বরং শুধু আমলের ক্ষেত্রে অন্তর-বাহির দু’রকম থাকে’।[5]

(৪) বড় নিফাক্ব ব্যক্তি মারা গেলে তাকে জাহান্নামে চিরস্থায়ী করে। ছোট নিফাক্ব চিরস্থায়ী করে না।

(৫) বড় নিফাক্ব কোনো মুমিন থেকে প্রকাশ পায় না। কিন্তু ছোট নিফাক্ব কখনো কোনো মুমিন থেকে প্রকাশ পেতে পারে।

(৬) বড় নিফাক্বে লিপ্ত ব্যক্তি সাধারণত তওবা করে না’।[6] আর তওবা করলেও বাহ্যিকভাবে বিচারকের নিকট তার তওবার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। কারণ, তা জানা যায় না। যেহেতু তারা সবসময় ইসলাম প্রকাশ করে’।[7]

৩. মুনাফেক্বদের বৈশিষ্ট্যসমূহ :

মুনাফেক্বদের অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেগুলো আল্লাহ তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন এবং নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন। কোনো সন্দেহ নেই যে, আল্লাহ তাআলা মুনাফেক্বদের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করাতে মহান উপকার রয়েছে। তন্মধ্যে নিম্নে কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো :

(১) মুনাফেক্বদের অবস্থা ও বৈশিষ্ট্যসমূহ মুমিনদের অবহিত করার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের উপর অনুগ্রহ করেছেন। যাতে তারা সেগুলো থেকে দূরে থাকতে পারে।

(২) মুনাফেক্বদের পথে চলা থেকে ভীতিপ্রদর্শন ও তাদের বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হওয়া থেকে সতর্ক করা হয়েছে।

(৩) মুমিনদের উৎসাহিত করা হয়েছে, তাদের আল্লাহর সাথে সত্যবাদী হয়ে থাকতে, তাদের অন্তর স্বচ্ছ করতে ও তাদের নিজেদেরকে আল্লাহর জন্য সোপর্দ করতে।

মুনাফেক্বদের বৈশিষ্ট্য অনেক। তন্মধ্যে উদাহরণস্বরূপ কিছু নিম্নে উল্লেখ করা হলো :

(এক) আল্লাহ তাআলা বলেন,وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللهِ وَبِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِينَ - يُخَادِعُونَ اللهَ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَمَا يَخْدَعُونَ إِلَّا أَنْفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُونَ - فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ فَزَادَهُمُ اللَّهُ مَرَضًا وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْذِبُونَ - وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ - أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ الْمُفْسِدُونَ وَلَكِنْ لَا يَشْعُرُونَ - وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا كَمَا آمَنَ النَّاسُ قَالُوا أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاءُ أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاءُ وَلَكِنْ لَا يَعْلَمُونَ - وَإِذَا لَقُوا الَّذِينَ آمَنُوا قَالُوا آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْا إِلَى شَيَاطِينِهِمْ قَالُوا إِنَّا مَعَكُمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِئُونَ - اللَّهُ يَسْتَهْزِئُ بِهِمْ وَيَمُدُّهُمْ فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ - أُولَئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُا الضَّلَالَةَ بِالْهُدَى فَمَا رَبِحَتْ تِجَارَتُهُمْ وَمَا كَانُوا مُهْتَدِينَ - مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِي اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهُ ذَهَبَ اللَّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِي ظُلُمَاتٍ لَا يُبْصِرُونَ - صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يَرْجِعُونَ - أَوْ كَصَيِّبٍ مِنَ السَّمَاءِ فِيهِ ظُلُمَاتٌ وَرَعْدٌ وَبَرْقٌ يَجْعَلُونَ أَصَابِعَهُمْ فِي آذَانِهِمْ مِنَ الصَّوَاعِقِ حَذَرَ الْمَوْتِ وَاللَّهُ مُحِيطٌ بِالْكَافِرِينَ - يَكَادُ الْبَرْقُ يَخْطَفُ أَبْصَارَهُمْ كُلَّمَا أَضَاءَ لَهُمْ مَشَوْا فِيهِ وَإِذَا أَظْلَمَ عَلَيْهِمْ قَامُوا وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَذَهَبَ بِسَمْعِهِمْ وَأَبْصَارِهِمْ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ ‘আর মানুষের মধ্যে কিছু এমন আছে, যারা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং শেষ দিনের প্রতি’, অথচ তারা মুমিন নয়। তারা আল্লাহকে এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে। অথচ তারা মূলত নিজেদেরকেই ধোঁকা দিচ্ছে এবং তারা তা অনুধাবন করে না। তাদের অন্তরসমূহে রয়েছে ব্যাধি। সুতরাং আল্লাহ তাদের ব্যাধি বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। কারণ তারা মিথ্যা বলত। আর যখন তাদের বলা হয়, তোমরা যমীনে ফাসাদ করো না’, তারা বলে, ‘আমরা তো কেবল সংশোধনকারী’। জেনে রাখো, নিশ্চয়ই তারা ফাসাদকারী; কিন্তু তারা বুঝে না। আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘তোমরা ঈমান আনো যেমন লোকেরা ঈমান এনেছে’, তারা বলে, ‘আমরা কি ঈমান আনব যেমন নির্বোধরা ঈমান এনেছে’? জেনে রাখো, নিশ্চয়ই তারাই নির্বোধ; কিন্তু তারা জানে না। আর যখন তারা মুমিনদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ এবং যখন তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে মিলিত হয়, তখন বলে, ‘নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সাথে আছি। আমরা তো কেবল উপহাসকারী’। আল্লাহ তাদের প্রতি উপহাস করেন এবং তাদেরকে তাদের অবাদ্ধতায় বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরার অবকাশ দেন। এরাই তারা, যারা হেদায়াতের বিনিময়ে পথভ্রষ্টতা ক্রয় করেছে। কিন্তু তাদের ব্যবসা লাভজনক হয়নি এবং তারা হেদায়াপ্রাপ্ত ছিল না। তাদের উপমা ঐ ব্যক্তির মতো, যে আগুন জ্বালালো। এরপর যখন আগুন তাদের চারপাশ আলোকিত করল, আল্লাহ তাদের আলো কেড়ে নিলেন এবং তাদেরকে ছেড়ে দিলেন এমন অন্ধকারে যে, তারা দেখছে না। তারা বধির-মূক-অন্ধ। তাই তারা ফিরে আসবে না। কিংবা আকাশের বর্ষণমুখর মেঘের ন্যায়, যাতে রয়েছে ঘন অন্ধকার, বজ্রধ্বনি ও বিদ্যুৎচমক। বজ্রের গর্জনে তারা মৃত্যুর ভয়ে তাদের কানে আঙুল দিয়ে রাখে। আর আল্লাহ কাফেরদেরকে পরিবেষ্টন করে আছেন। বিদ্যুৎচমক তাদের দৃষ্টি কেড়ে নেওয়ার উপক্রম হয়। যখনই তা তাদের জন্য আলো দেয়, তারা তাতে চলতে থাকে। আর যখন তা তাদের উপর অন্ধকার করে দেয়, তারা দাঁড়িয়ে পড়ে। আর আল্লাহ যদি চাইতেন, অবশ্যই তাদের শ্রবণ ও চোখসমূহ নিয়ে নিতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’ (আল-বাক্বারা, ২/৮-২০)। সুতরাং এই আয়াতগুলোতে মুনাফেক্বদের বৈশিষ্ট্য হতে নিম্নোক্ত নিকৃষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো প্রমাণিত হয়:

(১) তারা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং শেষ দিনের প্রতি’, অথচ তারা মুমিন নয়।

(২) তারা আল্লাহকে এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে।

(৩) তাদের অন্তসমূহে রয়েছে ব্যাধি।

(৪) আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘তোমরা যমীনে ফাসাদ করো না’, তারা বলে, ‘আমরা তো কেবল সংশোধনকারী।

(৫) যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘তোমরা ঈমান আনো যেমন লোকেরা ঈমান এনেছে’, তারা বলে, ‘আমরা কি ঈমান আনব যেমন নির্বোধরা ঈমান এনেছে’?

(৬) যখন তারা মুমিনদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ এবং যখন তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে মিলিত হয়, তখন বলে, ‘নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সাথে আছি। আমরা তো কেবল উপহাসকারী’।

(৭) তারা হেদায়াতের বিনিময়ে পথভ্রষ্টতা ক্রয় করেছে। কিন্তু তাদের ব্যবসা লাভজনক হয়নি এবং তারা হেদায়তপ্রাপ্ত ছিল না।

(দুই) আল্লাহ তাআলা বলেন,وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُعْجِبُكَ قَوْلُهُ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيُشْهِدُ اللَّهَ عَلَى مَا فِي قَلْبِهِ وَهُوَ أَلَدُّ الْخِصَامِ - وَإِذَا تَوَلَّى سَعَى فِي الْأَرْضِ لِيُفْسِدَ فِيهَا وَيُهْلِكَ الْحَرْثَ وَالنَّسْلَ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الْفَسَادَ - وَإِذَا قِيلَ لَهُ اتَّقِ اللَّهَ أَخَذَتْهُ الْعِزَّةُ بِالْإِثْمِ فَحَسْبُهُ جَهَنَّمُ وَلَبِئْسَ الْمِهَادُ ‘আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে, যার কথা দুনিয়ার জীবনে তোমাকে অবাক করে এবং সে তার অন্তরে যা রয়েছে, তার উপর আল্লাহকে সাক্ষী রাখে। আর সে কঠিন ঝগড়াকারী। আর যখন সে ফিরে যায়, তখন যমীনে প্রচেষ্টা চালায় তাতে ফাসাদ করতে এবং ধ্বংস করতে শস্য ও প্রাণী। আর আল্লাহ ফাসাদ ভালোবাসেন না। আর যখন তাকে বলা হয়, ‘তখন আত্মাভিমান তার জন্য যথেষ্ট এবং তা কতই না মন্দ ঠিকানা’ (আল-বাক্বারা, ২/২০৪-২০৬)। এই আয়াতগুলোতে মুনাফেক্বদের নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশ পায়:

(১) মনোমুগ্ধকর সুন্দর কথা বলা, অন্তরে যার প্রভাব আছে।

(২) এই কথার উপর আল্লাহকে সাক্ষী ও সমর্থক বানানোর দ্বারা আল্লাহকে মধ্যস্থতাকারী বানানো। আর এটা আল্লাহর উপর সবচেয়ে বড় অন্যায়।

(৩) আগত প্রত্যেক বিরোধিতাকে দমন করার জন্য ঝগড়ায় পারদর্শিতা ও সম্মত করার সামর্থ্য থাকা।

(৪) যখন মানুষের থেকে আড়াল হবে এবং তাদের নিকট থেকে ফিরে চলে যাবে, তখন সব পাপাচার করতে চেষ্টা চালাবে, যা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করে।

(৫) যখন তাকে আল্লাহভীরুতার (তাক্বওয়ার) আদেশ করা হয়, তখন সে অহংকার করে এবং তার আত্মগরিমা তাকে অধিকতর পাপাচারে লিপ্ত করে। সুতরাং পাপকর্ম ও অহংকারকে সে একত্রিত করে।

(তিন) আল্লাহ তাআলা বলেন,بَشِّرِ الْمُنَافِقِينَ بِأَنَّ لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا - الَّذِينَ يَتَّخِذُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ أَيَبْتَغُونَ عِنْدَهُمُ الْعِزَّةَ فَإِنَّ الْعِزَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًا ‘মুনাফেক্বদের সুসংবাদ দিন যে, নিশ্চয়ই তাদের জন্যই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব, যারা মুমিনদের পরিবর্তে কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারা কি তাদের কাছে সম্মান চায়? অথচ যাবতীয় সম্মান আল্লাহর’ (আন-নিসা, ৪/১৩৮-১৩৯)। উক্ত আয়াতদ্বয়ে মুনাফেক্বদের নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্যসমূহ রয়েছে:

(১) তারা কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তাদের ভালোবাসে ও তাদের সহযোগিতা করে।

(২) তারা কাফেরদের নিয়ে গর্ব করে এবং তাদের থেকে সাহায্য চায়।

(চার) আল্লাহ তাআলা বলেন,إِنَّ الْمُنَافِقِينَ يُخَادِعُونَ اللَّهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ وَإِذَا قَامُوا إِلَى الصَّلَاةِ قَامُوا كُسَالَى يُرَاءُونَ النَّاسَ وَلَا يَذْكُرُونَ اللَّهَ إِلَّا قَلِيلًا - مُذَبْذَبِينَ بَيْنَ ذَلِكَ لَا إِلَى هَؤُلَاءِ وَلَا إِلَى هَؤُلَاءِ وَمَنْ يُضْلِلِ اللَّهُ فَلَنْ تَجِدَ لَهُ سَبِيلًا ‘নিশ্চয়ই মুনাফেক্বরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয় এবং তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলেন। আর যখন তারা ছালাতে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায়, তারা লোকদেরকে দেখায় এবং তারা আল্লাহকে কমই স্মরণ করে। তারা এর মধ্যে দোদুল্যমান, না এদের দিকে আর না ওদের দিকে। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, আপনি কখনো তার জন্য কোনো পথ পাবেন না’ (আন-নিসা, ৪/১৪২-১৪৩)। উক্ত আয়াতদ্বয়ে মুনাফেক্বদের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রকাশ পায়:

(১) তারা আল্লাহর সাথে প্রতারণা করে। বস্তুত তিনি তাদেরকে প্রতারিত করেন।

(২) যখন তারা ছালাতে দাঁড়ায়, তখন তারা অলসতাবশত দাঁড়ায়।

(৩) তাদের আমলগুলো মানুষদের দেখায়।

(৪) তারা অল্পই আল্লাহকে স্মরণ করে থাকে।

(৫) তারা মুমিনদের দল ও কাফেরদের দলের মাঝে দোদুল্যমান থাকে।

(পাঁচ) মুনাফেক্বদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন,قُلْ أَنْفِقُوا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا لَنْ يُتَقَبَّلَ مِنْكُمْ إِنَّكُمْ كُنْتُمْ قَوْمًا فَاسِقِينَ - وَمَا مَنَعَهُمْ أَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقَاتُهُمْ إِلَّا أَنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَبِرَسُولِهِ وَلَا يَأْتُونَ الصَّلَاةَ إِلَّا وَهُمْ كُسَالَى وَلَا يُنْفِقُونَ إِلَّا وَهُمْ كَارِهُونَ ‘বলুন, ‘তোমরা স্বেচ্ছায় দান কর আর অনিচ্ছায়, তোমাদের থেকে কখনো তা গ্রহণ করা হবে না। তোমরা হলে এক ফাসেক্ব সম্প্রদায়। আর তাদের দান গ্রহণ করা থেকে একমাত্র বাধা এই ছিল যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছে, আর তারা ছালাতে আসে না, তবে অলস অবস্থায়। আর তারা দান করে না, তবে অপছন্দকারী অবস্থায়’ (আত-তওবা, ৯/৫৩-৫৪)। উক্ত আয়াতদ্বয়ে মুনাফেক্বদের বৈশিষ্ট্যসমূহ হতে তাদের নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রকাশ পায়:

(১) আল্লাহ তাদেরকে ফাসেক্ব হিসেবে চিত্রিত করেছেন। তিনি বলেন, إِنَّكُمْ كُنْتُمْ قَوْمًا فَاسِقِينَ ‘তোমরা হলে এক ফাসেক্ব সম্প্রদায়’।

(২) তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অস্বীকার করেছে।

(৩) ছালাতে কেবল অলসতা ও অবহেলা প্রদর্শন করেই আসে।

(৪) অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা দান করে (বাধ্য হয়ে)। এই বৈশিষ্ট্যগুলোতে মুনাফেক্বদের এবং মুনাফেক্বদের ন্যায় কর্ম যারা করে, তাদের অত্যধিক নিন্দা করা হয়েছে। সুতরাং প্রত্যেকের উচিত পাপাচার হতে দূরে থাকা। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি ঈমান আনা, ছালাতে উপস্থিত হওয়া, কর্মঠ দেহ ও প্রাণবন্ত মন নিয়ে কেবল প্রশান্ত হৃদয় ও দৃঢ়চিত্তে ব্যয় করা ও এর প্রতিদান ও ছওয়াব শুধু আল্লাহর কাছে আশা করা এবং মুনাফেক্বদের সাথে সাদৃশ্য না রাখা।

(ছয়) আল্লাহ তাআলা বলেন,يَحْذَرُ الْمُنَافِقُونَ أَنْ تُنَزَّلَ عَلَيْهِمْ سُورَةٌ تُنَبِّئُهُمْ بِمَا فِي قُلُوبِهِمْ قُلِ اسْتَهْزِئُوا إِنَّ اللَّهَ مُخْرِجٌ مَا تَحْذَرُونَ - وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ - لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ إِنْ نَعْفُ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْكُمْ نُعَذِّبْ طَائِفَةً بِأَنَّهُمْ كَانُوا مُجْرِمِينَ ‘মুনাফেক্বরা ভয় পায় তাদের মনের কথা প্রকাশ করে তাদের ব্যাপারে কোনো সূরা নাযিল হয়ে যায় নাকি। বলুন, ‘ঠাট্টা করতে থাকো, তোমরা যে ব্যাপারে ভয় পাও, আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিবেন। তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা জোর দিয়েই বলবে, ‘আমরা হাস্যরস আর খেল-তামাশা করছিলাম। ‘বলুন, ‘আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও তাঁর রাসূলকে নিয়ে তোমরা বিদ্রুপ করছিলে। তোমরা ওযর পেশের চেষ্টা করো না, ঈমান আনার পর তোমরা কুফরী করেছ। তোমাদের মধ্যকার কোনো দলকে ক্ষমা করলেও অন্যদেরকে শাস্তি দিবে, কারণ তারা অপরাধী’ (আত-তওবা, ৯/৬৪-৬৬)। মুনাফেক্বরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদের নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছল্য করে। আল্লাহ তাদেরকে লাঞ্ছিত করেছেন এবং তাদের বৈশিষ্ট্যগুলো মুমিনদের জন্য বর্ণনা করেছেন।

(সাত) আল্লাহ তাআলা বলেন,الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُمْ مِنْ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمُنْكَرِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمَعْرُوفِ وَيَقْبِضُونَ أَيْدِيَهُمْ نَسُوا اللَّهَ فَنَسِيَهُمْ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ هُمُ الْفَاسِقُونَ - وَعَدَ اللَّهُ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا هِيَ حَسْبُهُمْ وَلَعَنَهُمُ اللَّهُ وَلَهُمْ عَذَابٌ مُقِيمٌ ‘মুনাফেক্ব পুরুষ ও মুনাফেক্ব নারী সব একই রকম, তারা অসৎকাজের নির্দেশ দেয় আর সৎকাজ হতে নিষেধ করে, (আল্লাহর পথে ব্যয় করার ব্যাপারে) হাত গুটিয়ে রাখে, তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, তাই তিনিও তাদেরকে ভুলে গছেন। মুনাফেক্বরাই তো ফাসেক্ব। আল্লাহ মুনাফেক্ব পুরুষ, মুনাফেক্ব নারী ও কাফেরদের জন্য জাহান্নামের আগুনের ওয়াদা দিয়েছেন, তাতে তারা চিরকাল থাকবে, সেটাই তাদের জন্য যথেষ্ট। তাদের উপর আছে আল্লাহর অভিশাপ, আর আছে তাদের জন্য স্থায়ী শাস্তি’ (আত-তওবা, ৯/৬৭-৬৮)। উক্ত আয়াতদ্বয়ে মুনাফেক্বদের নিম্নবর্ণিত কিছু বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে:

(১) মুনাফেক্বরা একে অপরের অংশ। তারা কতক কতককে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে।

(২) তারা অসৎকর্মের নির্দেশ দেয় ও সৎকর্ম হতে বাধা দেয়।

(৩) তারা তাদের হাতগুলো দান-ছাদাক্বা ও অনুগ্রহের পথসমূহ হতে গুটিয়ে রাখে। সুতরাং তারা মানুষের মধ্য হতে সবচেয়ে কৃপণ।

(৪) তারা আল্লাহকে ভুলে যায়। তাই তারা অল্পই আল্লাহকে স্মরণ করে। তাই আল্লাহ তাঁর রহমত হতে তাদের ভুলে গেছেন এবং তাদেরকে কোনো কল্যাণের উপযুক্ত করেন না।

(৫) মুনাফেক্বরা হলো ফাসেক্ব।

(আট) আল্লাহ তাআলা বলেন,الَّذِينَ يَلْمِزُونَ الْمُطَّوِّعِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ فِي الصَّدَقَاتِ وَالَّذِينَ لَا يَجِدُونَ إِلَّا جُهْدَهُمْ فَيَسْخَرُونَ مِنْهُمْ سَخِرَ اللَّهُ مِنْهُمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ - اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّةً فَلَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ ‘মুমিনদের মধ্যে যারা মুক্ত হস্তে দান-ছাদাক্বা করে, তাদেরকে যারা দোষারোপ করে, আর সীমাহীন কষ্টে দানকারীদেরকে যারা বিদ্রুপ করে, আল্লাহ তাদেরকে জবাবে বিদ্রুপ করেন। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আপনি তাদের জন্য ক্ষমা চান অথবা তাদের জন্য ক্ষমা না চান। যদি আপনি তাদের জন্য ৭০ বার ক্ষমা চান, তবুও আল্লাহ তাদেরকে কখনো ক্ষমা করবেন না। কারণ তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে, আর আল্লাহ ফাসেক্ব লোকদেরকে হেদায়াত দেন না’ (আত-তওবা, ৯/৭৯-৮০)। উক্ত আয়াতদ্বয়ে মুনাফেক্বদের কিছু বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে। তন্মধ্যে নিম্নে কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো—

(১) স্বেচ্ছায় যারা অতিরিক্ত ছাদাক্বা করে, তাদেরকে তারা (মুনাফেক্বারা) কটাক্ষ করে। তারা অধিক ছাদাক্বা প্রদানকারীকে কটাক্ষ করে বলে, তার এই ছাদাক্বা করার দ্বারা তার লোকশ্রুতি ও সুনাম উদ্দেশ্য এবং তারা অল্প ছাদাক্বাকারী দরিদ্রকেও কটাক্ষ করে বলেন, এই ব্যক্তির দান-ছাদাক্বা হতে আল্লাহ অভাবমুক্ত।

(২) মুমিনদের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা।

(৩) তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবিশ্বাস করে।    (চলবে)


মূল : ড. সাঈদ ইবনু আলী ইবনু ওয়াহাফ আল-ক্বাহত্বানী রাহিমাহুল্লাহ

অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন

নারায়ণপুর, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।

[1]. ইবনু রজব, জামেউল উলূম ওয়াল হিকাম, ২/৪৮০-৪৯৫। তিনি বিষয়টি যথাযথ আলোচনা করেছেন এবং অনেকগুলো ফায়েদা উল্লেখ করেছেন। সুতরাং উক্ত গ্রন্থটি পাঠ করুন; মাজমূআতুত তাওহীদ, পৃ. ৭।

[2]. ছহীহ বুখারী, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘মুনাফেক্বের চি‎হ্ন’ অনুচ্ছেদ, ১/১৭, হা/৩৪; ছহীহ মুসলিম, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘মুনাফেক্বের স্বভাব’ অনুচ্ছেদ, ১/৭৮, হা/৫৮।

[3]. ছহীহ বুখারী, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘মুনাফেক্বের চি‎হ্ন’ অনুচ্ছেদ, ১/১৬, হা/৩৩; ছহীহ মুসলিম, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘মুনাফেক্বের স্বভাব’ অনুচ্ছেদ, ১/৭৮, হা/৫৯।

[4]. ড. ছালেহ আল-ফাওযান, কিতাবুত তাওহীদ, পৃ. ১৮।

[5]. প্রাগুক্ত।

[6]. প্রাগুক্ত।

[7]. ফাতাওয়া ইবনু তায়মিয়া, ২৮/৩৩৪।

Magazine