কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (১৩) : সাহু সিজদা ও তেলাওয়াতে সিজদার মধ্যে পার্থক্য কী? সাহু সিজদা কয়টি দিতে হয়?

উত্তর : ছালাতে ভুলক্রমে কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে শেষ বৈঠকের তাশাহহুদ শেষে সালাম ফিরানোর পূর্বে অথবা পরে দুটি ‘সাহু সিজদা’ দিতে হয়। রাকআতের গণনায় ভুল হলে বা সন্দেহ হলে বা কম-বেশি হয়ে গেলে বা ১ম বৈঠকে না বসে দাঁড়িয়ে গেলে ইত্যাদি কারণে এবং মুক্তাদীগণের মাধ্যমে ভুল সংশোধিত হলে ‘সাহু সিজদা’ আবশ্যক হয়। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের ছালাত পাঁচ রাকআত আদায় করলে তাকে বলা হলো ছালাতের রাকআত কি বেশি করা হয়েছে? তিনি বললেন, কী হলো! তারা বললেন, আপনি পাঁচ রাকআত ছালাত পড়েছেন। অতঃপর তিনি সালামের পরে দুটি সিজদা করলেন (ছহীহ বুখারী, হা/৪০১; ছহীহ মুসলিম, হা/৫৭২; মিশকাত হা/১০১৬)। ইমাম শাওকানী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ওয়াজিব তরক হলে ‘সাহু সিজদা’ ওয়াজিব হবে এবং সুন্নাত তরক হলে ‘সাহু সিজদা’ সুন্নাত হবে (আস-সায়লুল জারার ১/২৭৪)।

পক্ষান্তরে তেলাওয়াতে সিজদা হলো, পবিত্র কুরআনে এমন কতগুলো আয়াত রয়েছে যেগুলো তেলাওয়াত করলে বা শুনলে মুমিন পাঠক ও শ্রোতা সকলকে একটি সিজদা করতে হয়। তবে কেউ যদি এই সিজদা না করে তাহলে সে গুনাহগার হবে না। কারণ এটি ফরয সিজদা নয়। করলে নেকী আছে, না করলে গুনাহ নেই। ইবনু আব্বাস রযিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সূরা নাজমের মধ্যে সিজদা করলেন এবং তাঁর সঙ্গে মুসলিম, মুশরিক, জিন ও মানব সবাই সিজদা করল (ছহীহ বুখারী, হা/১০৭১; বুলূগুল মারাম, হা/৩৪১)। উল্লেখ্য যে, তেলাওয়াতে সিজদার জন্য ওযূ বা ক্বিবলা শর্ত নয়। বরং যে কোনো দিকে মুখ করে এই সিজদা দেওয়া যায়। একই আয়াত বারবার পড়লে তেলাওয়াত শেষে একবার সিজদা করলেই যথেষ্ট হবে। স্থান পরিবর্তন হলে আর সিজদা করতে হয় না বা ক্বাযাও আদায় করতে হয় না।

প্রশ্নকারী : নাজনীন পারভীন

জয়পুরহাট।


Magazine