কুরআন মাজীদ ও ছহীহ হাদীছ বুঝা ও মানার ক্ষেত্রে ছাহাবায়ে কেরামসহ পরবর্তী সালাফে ছালেহীনের বুঝ ও তাঁদের অনুশীলন অনুযায়ী চলা অনিবার্য; এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে চার ইমামসহ অতীতের বড় বড় সকল আলেমের বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের কথাগুলোকে গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করতে হবে।
কিন্তু তাঁদের ভুলগুলোও আমাদেরকে কামড়ে ধরে থাকতে হবে কেনো? কে এই বাধ্যবাধতা চাপিয়ে দিল? নির্দিষ্ট কোনো একজনের বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতেই হবে- এই আদেশ কে করলেন?!
কেউ না। না মহান আল্লাহ, না তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, না কোনো ছাহাবী বা তাবেঈ। এমনকি আপনার ইমামও এই আদেশ করেননি; বরং উল্টো স্রেফ কুরআন-হাদীছের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার আদেশ করেছেন।
ভুলভ্রান্তি গ্রহণের তো প্রশ্নই আসে না; বরং দলীলের আলোকে প্রত্যেক আলেম বা মাযহাবের অনাগ্রাধিকারযোগ্য (মারজূহ/مرجوح) মতটি ছেড়ে অগ্রাধিকারযোগ্য (রজেহ/راجح) মতটি গ্রহণ করা কি উচিত নয়?
আপনি বলতে পারেন, সবার তো সেই যোগ্যতা নেই। আমি বলব, আলেমগণ ও মাদরাসাগুলোর মূল দায়িত্বটা তাহলে কী?
মূল দায়িত্ব হচ্ছে, আপনি দলীলের আলোকে সঠিকটা জনগণের নিকট পৌঁছে দিবেন। আপনার ইমাম ঠিক এই অছিয়তটাই করে গেছেন।
[২]
কুরআন মাজীদ ও ছহীহ হাদীছ পরিপন্থি কোনো বক্তব্য অথবা যঈফ বা জাল হাদীছের উপর ভিত্তিশীল কোনো অভিমত চার ইমাম বা চার মাযহাবের দিকে সম্বন্ধিত করা প্রকৃত মাযহাবের নামে এক ধরনের মিথ্যাচার এবং চার ইমামের প্রত্যেকের অছিয়তের সরাসরি বিরুদ্ধাচরণ।
কারণ ছলেবলে কলে-কৌশলে চার ইমামের কারো ভুল বক্তব্য সঠিক প্রমাণ করতেই হবে— এমন কোনো ইঙ্গিতও কোনো ইমাম দিয়ে যাননি, দিতে পারেন না; বরং তারা সবাই ছিলেন হক্বপন্থি এবং সবাই কুরআন-হাদীছ আঁকড়ে ধরতেই বলেছেন। তাঁরা স্পষ্টই বলে গেছেন, ‘ছহীহ হাদীছই তাঁদের মাযহাব’।
তাহলে আপনি জাল-যঈফ, ভুলভ্রান্তি ইত্যাদির পেছনে পড়ে একদিকে যেমন কুরআন-হাদীছের বিরুদ্ধাচরণ করছেন, অন্যদিকে তেমনি আপনার ইমামসহ অন্যান্য সালাফে ছালেহীনের মূলনীতি ও অছিয়ত লঙ্ঘন করছেন। সেজন্য ভুলভ্রান্তি গ্রহণ তো বহু দূরের কথা; বরং দলীলের আলোকে প্রত্যেকের অনাগ্রাধিকারযোগ্য মতটি ছেড়ে দিয়ে অগ্রাধিকারযোগ্য মতটি গ্রহণ করা উচিত।
[৩]
বিশেষভাবে আমাদের হানাফী ভাইদের উদ্দেশ্যে বলব, তারা কি সত্যিকারার্থে ইমাম আবূ হানীফার অনুসরণ করতে পেরেছেন?
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ইমাম আবূ হানীফার যারা অনুসারী, তাদের একদল আক্বীদা ও আমল উভয় ক্ষেত্রে তাঁকে ইমাম হিসেবে গ্রহণ করলেও বেশিরভাগ অনুসারীই তাঁকে আমলে ইমাম মানলেও আক্বীদায় ইমাম মানতে পারেননি। একথা স্বয়ং হানাফী ভাইয়েরাও অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন। মে, ২০১৯-এ জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া, নানুপুর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত ‘তাওহীদ বার্তা’ নামক তাওহীদের কিতাবে ‘আমরা কী হানাফী না মাতুরীদী?’ শিরোনামে স্পষ্টই বলা হয়েছে, ‘আক্বীদার কিতাব অধ্যয়ন করার পর জানা যায় যে, আমরা আক্বীদাগতভাবে মাতুরীদী। আর ফুরূআ’ত তথা শাখাগত মাসআলা-মাসায়েলের দিক দিয়ে হানাফী’।
অথচ ইমাম আবূ হানীফা তাঁর সবচেয়ে প্রশস্ত আক্বীদার বইটির নাম দিয়েছেন, ‘আল-ফিক্বহুল আকবার’ অর্থাৎ ‘সবচেয়ে বড় ফিক্বহ’ বা ‘শ্রেষ্ঠ ফিক্বহ’। এর মানে আক্বীদার জ্ঞান হচ্ছে তাঁর কাছে সবচেয়ে বড়, শ্রেষ্ঠ ও উচ্চতর জ্ঞান। আমাদের দুর্ভাগ্য একারণে যে, আমরা বেশিরভাগ হানাফী ইমাম আবূ হানীফার কাছ থেকে ‘শ্রেষ্ঠ ফিক্বহ’ তথা আক্বীদার জ্ঞান নিতে পারিনি। বরং আমরা ফিক্বহে হানাফী হওয়ার দাবি করেছি; কিন্তু আক্বীদায় হয়েছি মাতুরিদী বা আশ‘আরী আর তরীক্বায় হয়েছি চরমোনাই, কাদেরী, চিশতী, নক্বশাবন্দী বা আর কিছু -ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেঊন-।
তাহলে আপনি কীসের হানাফী?! যাকে আক্বীদায় বিশ্বাস করতে পারেননি, আক্বীদায় যার উপর নির্ভর করতে পারেননি, আক্বীদায় যার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে পারেননি, আমলে তার অনুসরণের ক্ষেত্রে চরম কট্টরপন্থি হয়ে যাওয়া গোড়া কেটে মাথায় পানি ঢালার নামান্তর নয় কি?! কারণ আক্বীদাই মূল, আক্বীদাই সর্বাগ্রে, আক্বীদাই সবকিছু। আক্বীদা ঠিক হলে সব আমল গ্রহণযোগ্য হবে, অন্যথা নয়।
আমাদের কি ফিক্বহ, আক্বীদা ও তরীক্বা সব বিষয়ে হানাফী হওয়া উচিত নয়? অবশ্যই উচিত। সেজন্য আপনি আমাকে প্রকৃত হানাফী বলতে পারেন। কারণ ইমাম আবূ হানীফাসহ অন্য তিন ইমামের অছিয়ত হরহামেশা লঙ্ঘন করে যদি আপনি হানাফী হতে পারেন, তাহলে তাদের সেই চিরন্তন অছিয়ত মেনে চলে আমি কেনো হানাফী হতে পারব না?!
আপনি যদি আপনার ইমামের আক্বীদা পোষণ করতে পারতেন এবং তাঁর অছিয়ত গ্রহণ করত ফিক্বহে তাঁর সঠিক বক্তব্যগুলো নিতে পারতেন, তাহলে আপনার সাথে আমার কোনো ঝামেলাই আসলে থাকত না।
[৪]
শিক্ষার্থীসহ সকল মুসলিমের নিকট কুরআন-হাদীছের বক্তব্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ফোকাস করতে হবে, একে প্রমোট করতে হবে, কেবল এর প্রতি আত্মসমর্পণ ও একে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার পূর্ণ মানসিকতা তাদের মাঝে তৈরি করতে হবে। সাথে সালাফে ছালেহীনের বুঝ গ্রহণের প্রতিও উৎসাহিত করতে হবে। প্রথমটায় কোনো প্রকার ভুল নেই, থাকতে পারে না; কিন্তু দ্বিতীয়টায় ভুল হওয়া খুবই স্বাভাবিক। বিখ্যাত চার মাযহাবসহ সালাফে ছালেহীনের বুঝ কুরআন-হাদীছের পেছনে পেছনে চলবে; কুরআন-হাদীছ তাদের বুঝের পেছনে পেছনে চলতে পারে না। সুতরাং প্রথমটাকে চোখ বন্ধ করে মানতে হবে, কিন্তু দ্বিতীয়টায় চোখ খোলা রেখে ভুলগুলো বাদ দিয়ে ঠিকগুলো মানতে হবে। আর যেহেতু চার মাযহাবও সালাফে ছালেহীনের বুঝেরই ধারাবাহিকতা, তাই সেখানেও ভুল হওয়া খুবই স্বাভাবিক। অতএব, সেখানে কোনো প্রকার অন্ধভক্তি থাকতে পারে না। বরং ভুলগুলো বাদ দিয়ে কেবল ঠিকগুলো গ্রহণ করতে হবে।
কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ ক্বওমী মাদরাসায় ঘটছে উল্টোটা! কুরআন-হাদীছকে প্রাধান্য না দিয়ে মাযহাবকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে! মাযহাবকে ফোকাস করা হচ্ছে! এর অন্ধভক্ত বানানো হচ্ছে! মাযহাব ঠিক রেখে কুরআন-হাদীছের ব্যাখ্যা করা হচ্ছে! আপনি কি হলফ করে বলতে পারবেন যে, মাযহাবের সব বক্তব্যই সঠিক? তাহলে এই অপচেষ্টা কেনো?
কুরআন-হাদীছের প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণের মানসিকতা তৈরি করার পর মাযহাবের সঠিক বুঝগুলো জনগণকে মানার প্রতি উৎসাহিত করলে কোনো সমস্যা ছিল না।
[৫]
যেহেতু বিখ্যাত চার ইমাম আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ইমাম এবং চার মাযহাব গ্রহণযোগ্য, সেহেতু তাদের সঠিক কথাগুলো গ্রহণ করা এবং নিজেকে যে-কোনো মাযহাবের দিকে সম্বন্ধিত করে হানাফী, মালেকী, শাফেঈ, হাম্বালী পরিচয় দিলেও কোনো সমস্যা নেই।
সমস্যা হলো কুরআন-হাদীছের উপর মাযহাবকে প্রাধান্য দেওয়া, মাযহাবের প্রতি অন্ধভক্তি দেখানো, যে-কোনো মূল্যে মাযহাবের প্রতিটি বক্তব্যকে সঠিক প্রমাণের অপচেষ্টা চালানো।
[৬]
দলীল শুধু কুরআন ও হাদীছ (ইজমা-ক্বিয়াস কুরআন-হাদীছের বাইরে নয়)। কোনো মুজতাহিদ সালাফ বা ইমামের বক্তব্য দলীল নয়। বরং তাঁদের বক্তব্য কুরআন-হাদীছের বুঝমাত্র, যা ভুলও হতে পারে, সঠিকও হতে পারে। উভয় অবস্থাতেই তাঁরা নেকী থেকে মাহরূম হবেন না।
সুতরাং ব্যক্তি যেই হোক না কেনো, আপনি তার কোনো ভুল কথা কুরআন-হাদীছের বিপরীতে দাঁড় করাতে পারেন না।
এখানে আরেকটি কথা বলে রাখি, যখন কোনো আলেমের বক্তব্য গ্রহণ করবেন বা কারো নিকট উপস্থাপন করবেন, তখন তা দলীল হিসেবে গ্রহণ করবেন না। বরং যেহেতু তিনি শরী‘আতের জ্ঞানে জ্ঞানী ও অভিজ্ঞ, সেহেতু তিনি কুরআন-হাদীছের নির্যাস থেকেই বলছেন— এই মনে করে গ্রহণ করবেন।
[৭]
‘চার মাযহাব গ্রহণযোগ্য’ মানে এই নয় যে, প্রতিটি মাযহাবের প্রতিটি মতই সঠিক; বরং এর মানে হচ্ছে, ২/১টি মাসআলা ছাড়া চার ইমামের আক্বীদা একই রকম ছিল এবং সঠিক ছিল। আর তাঁদের ফিক্বহী গবেষণা অধিকাংশই সঠিক ছিল।
সুতরাং আপনার উচিত, তাঁদের আক্বীদা গ্রহণ করা এবং তাঁদের সঠিক মাসআলাগুলো মেনে চলা। আর তাঁদের ভুলগুলো তাঁদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা বজায় রেখে এড়িয়ে চলা ও তাঁদের জন্য দু‘আ করা।
‘চার মাযহাব গ্রহণযোগ্য’ মানে ইজতেহাদী মাসআলায় মতভেদের সুযোগ আছে এবং মানার ক্ষেত্রেও প্রশস্ততা আছে। ফলে নিজে একটা মানলেও আরেক জন আরেকটা মানতে পারেন। এর কারণে কেউ কারো উপর অবিচার করে মসজিদ-মাদরাসা ভাঙার দুঃসাহস দেখানো তো দূরের কথা, সামান্যতম চাপও প্রয়োগ করতে পারেন না। তবে সুন্দরভাবে অগ্রাধিকারযোগ্য মতটির প্রতি উৎসাহ করা যেতে পারে।
ইজতিহাদী মাসআলায় মতভেদ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক, যার ফলশ্রুতিতে প্রসিদ্ধ চার মাযহাব তৈরি হয়েছে এবং আজও বিদ্যমান আছে; বরং এর বাইরেও আরো মাযহাব ছিল এবং আছে। অতএব, আমার একটা পছন্দ হলেও আরেকজনের অন্য একটা পছন্দ হতে পারে। ফলে পরস্পরের প্রতি সম্মান ও সংহতি বজায় রেখে সুন্দর সহাবস্থান করতে হবে। কাউকে কোণঠাসা করে রাখার হীন মানসিকতা পরিহার করতে হবে। কারো প্রতি কোনো ধরনের সীমালঙ্ঘন করা যাবে না।
[৮]
(ক) মুজতাহিদ আলেমগণ কারো তাক্বলীদ করবেন না। অবশ্য, বিশেষ কোনো কারণে বিশেষ কোনো মাসআলায় তাক্বলীদ করতে পারেন।
(খ) সাধারণ আলেম, যারা মুজতাহিদ নন, তবে তারা দলীলের আলোকে রাজেহ-মারজূহ বা অগ্রাধিকারযোগ্য-অনাগ্রাধিকারযোগ্য-এর মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন, তারা দলীলের আলোকে মুজতাহিদ আলেমের অগ্রাধিকারযোগ্য বক্তব্যটি গ্রহণ করবেন। সঠিক সেই বক্তব্য যে আলেমের বা যে মাযহাবের হোক-না কেনো। উল্লেখ্য, পৃথিবার বেশিরভাগ আলেম এই শ্রেণির।
(গ) কিন্তু সাধারণ জনগণ, যাদের মাঝে অগ্রাধিকারযোগ্য-অনাগ্রাধিকারযোগ্য বিষয় বাছাইয়ের সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য বিশ্বস্ত কোনো মুজতাহিদ আলেমের তাক্বলীদ করার ব্যাপারে বেশিরভাগ উলামায়ে কেরামের অনুমোদন রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে শুধু একজনের কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতেই হবে ব্যাপারটা সেরকম নয়। আবার সবার নিকট থেকে কেবল তাঁদের ছাড়গুলো খুঁজে বেড়াতে হবে এবং গ্রহণ করতে হবে সেটাও বিধিবদ্ধ নয়। তবে গোঁড়ামি ও অন্ধভক্তি ছাড়া যে-কোনো একজনের বক্তব্য বা যে-কোনো একটি মাযহাব অনুযায়ী চলাও অনুমোদিত হতে পারে।
কিন্তু আমাদের দেশের ক্বওমী মাদরাসাগুলো কি এখানে কাজ করতে পারে না? সাধারণ জনগণ যে মুজতাহিদ আলেমের তাক্বলীদ করছেন, তাঁর সব বক্তব্যকে সঠিক হিসেবে উপস্থাপনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে না নিয়ে মাযহাবের ভুল ও অনাগ্রাধিকারযোগ্য বক্তব্যগুলো শ্রদ্ধার সাথে দূরে সরিয়ে সেখানে সঠিক ও অগ্রাধিকারযোগ্য বক্তব্যগুলো ঢুকিয়ে দেওয়া কি উচিত ছিল না? সঠিক সেই বক্তব্য যে আলেমের বা যে মাযহাবের হোক-না কেনো; ঠিক যেমনটি ইমাম আবূ ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ করেছিলেন। জনগণকে সঠিকগুলোর প্রতি উৎসাহিত করার কাজটাই আমানতের দাবি নয় কি? আলেমগণ ও মাদরাসাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কাজ কি এটা হওয়া দরকার ছিল না?
এতে কি আপনি মনে করছেন যে, আপনি আপনার ইমাম বা মাযহাবের বিরোধিতা করছেন? কস্মিনকালেও না। বরং আপনি আপনার ইমামের অছিয়ত পূরণ করছেন এবং তাঁর নির্দেশিত ছহীহ হাদীছভিত্তিক মাযহাবকে প্রমোট করছেন।
অতএব, আপনি নিজে ইমাম আবূ ইউসুফ ও মুহাম্মাদের মতো ইমাম আবূ হানীফার যোগ্য শিষ্য হোন এবং অন্যকেও বানানোর চেষ্টা করুন। অন্যথা মাযহাবের ভক্ত বানানো যাবে; কুরআন-হাদীছের নয়।
[৯]
একটি মাসআলায় একাধিক মত থাকলে সবগুলোই ছহীহ ও হক্ব হতে পারে না; বরং হক্ব একটাই। কিন্তু যেহেতু মতভেদপূর্ণ মাসআলা, সেহেতু একটি ছাড়া বাকীগুলো ভুল হলেও সে ব্যাপারে ছাড় রয়েছে এবং নমনীয় হতে হবে। তবে হক্বটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে।
[১০]
বিশ্বাস করুন, আল্লাহর কসম করে বলছি! বিখ্যাত চার ইমাম ও তাঁদের মাযহাবসহ সকল সালাফে ছালেহীন ও তাঁদের মতামতের প্রতি আমি অত্যন্ত ইতিবাচক এবং শ্রদ্ধাশীল।
সুতরাং আমার এই লেখার একমাত্র উদ্দেশ্যই হচ্ছে, সালাফে ছালেহীনের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা বজায় রেখে কুরআন-হাদীছের নিঃশর্ত অনুসরণের বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা এবং জনমনে গ্রথিত করা। কোনো আলেম, ইমাম বা মাযহাবের প্রতি সামান্যতম নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করা আমার মোটেও উদ্দেশ্য নয়। অন্তরের খবর আমার রবই ভালো জানেন।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে কুরআন ও হাদীছের খালেছ অনুসারী হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!
বি. এ. (অনার্স), উচ্চতর ডিপ্লোমা, এম. এ. এবং এম.ফিল., মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব; অধ্যক্ষ, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।