কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

সন্ত্রাস নির্মূলে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

ভূমিকা : 

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর অন্যতম সমস্যা হলো সন্ত্রাস। সন্ত্রাসের বিষাক্ত ছোবলে বিশ্বসভ্যতা আজ হুমকির সম্মুখীন। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র সন্ত্রাস আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। সন্ত্রাস একটি প্রাচীন সমস্যা হলেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের যুগ একবিংশ শতাব্দীতে এটি পুনরায় নবরূপে আবির্ভূত হয়েছে। সন্ত্রাস একদিকে যেমন বিশ্বশান্তিকে হুমকির মুখে দাঁড় করিয়েছে, অপরদিকে বিশ্বসভ্যতাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে।

সন্ত্রাস পরিচিতি :

আভিধানিক অর্থ : সন্ত্রাস শব্দটি আমরা বিশ্লেষণ করলে পাই সম+ত্রাস। ত্রাস শব্দের অর্থ— ভয়, ভীতি, শঙ্কা ইত্যাদি।[1] আর সন্ত্রাস শব্দের অর্থ হলো— মহাশঙ্কা, অতিশয় ভয়,[2] অতিশয় ত্রাস, ভয়ের পরিবেশ, রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের উদ্দেশ্যে অত্যাচার, হত্যা প্রভৃতি হিংসাত্মক ও ভয়ানক পরিবেশ সৃষ্টি করা।[3] সন্ত্রাসের আরবী প্রতিশব্দ ‘আল-ইরহাব’।[4] আল-ইরহাব মানে কাউকে ভয় দেখানো। কুরআনে কারীমে ভয় অর্থে এই শব্দের ব্যবহার রয়েছে। তবে আধুনিক আরবী ভাষায় সন্ত্রাস বুঝাতে ‘আল-ইরহাব’ শব্দ ব্যবহার করা হলেও প্রচলিত অর্থে সন্ত্রাস বলতে যা বুঝায় তা প্রকাশের জন্য ‘আল-ইরহাব শব্দের ব্যবহার কুরআনে পাওয়া যায় না। সন্ত্রাস বা সন্ত্রাসী কার্যক্রম বুঝাতে আল-কুরআনে ‘ফিতনা’ ও ‘ফাসাদ’ শব্দদ্বয়ের ব্যবহার দৃষ্টিগোচর হয় (আল-বাক্বারা, ২/২১৭; আল-ফাজর, ৮৯/১১-১২)। সন্ত্রাস শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো— Terror, Extreme fear— প্রচণ্ড ভীতি, সন্ত্রাস ইত্যাদি। আর Terrorist অর্থ সন্ত্রাসী। Terrorize হলো সন্ত্রাসিত করা, ভয় দেখিয়ে শাসন করা।[5]

পারিভাষিক অর্থ : পারিভাষিক অর্থে সন্ত্রাস হলো— যে কোনো স্বার্থ হাছিল করার জন্য খুন, হত্যা, অত্যাচার ইত্যাদি ত্রাসজনক পথ চয়ন করা, রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের উদ্দেশ্যে সংঘবদ্ধভাবে ত্রাস সৃষ্টি করে নিজের আয়ত্তে নেওয়ার নীতি অবলম্বন করা।[6]

(ক) যায়েদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনে হাদী আল-মাদখালী বলেন, ‘আল-ইরহাব’ (সন্ত্রাস) এমন একটি প্রতিষ্ঠিত শব্দ, বিভিন্ন আঙ্গিকে যার অনেক অর্থ রয়েছে। এর অন্তর্ভুক্ত হলো অন্যায়ভাবে নিরপরাধ, নির্দোষ মানুষকে ভয় দেখিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত করা। কখনো নিরীহ ব্যক্তিবর্গকে হত্যার সীমাহীন ভীতি প্রদর্শন, সুরক্ষিত সম্পদ বিনষ্ট বা লুট, সতী-সাধ্বী নারীর সম্মানহানি করা, মুসলিমজাতির ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি করা বা একতা বিনষ্ট করা।[7]

(খ) ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ স্বীকৃত সংজ্ঞা- ‘অসৎ ও অশুভ উদ্দেশ্যে সংঘটিত প্রত্যেক অপরাধমূলক কাজ তা যেখানে যার মাধ্যমে হোক না কেন তা অবশ্যই নিন্দা, তিরস্কার ও ভর্ৎসনাযোগ্য’।[8]

(গ) The New Encyclopedia Britannica গ্রন্থে বলা হয়েছে, Terrorism : the systematic use of violence to create a general climate of fear in a population and thereby to bring about a particular political objective. অর্থাৎ ‘একটি বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাছিলের জন্য সাধারণ জনগণের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করার পন্থাই হলো সন্ত্রাসবাদ’।[9] 

(ঘ) মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা F.B.I. এর মতে, Terrorism is the unlawful use of force or violence against person of property to intimidate or coerce a government, the civilian population or any segment there of in furtherance of political or social objectives. অর্থাৎ ‘সামাজিক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কোনো সরকার, বেসরকারি জনগণ বা অন্য যে কোনো অংশকে ভীতি প্রদর্শন বা দমনের জন্য ব্যক্তি বা সম্পদের উপর অবৈধ শক্তি প্রয়োগ করাকেই সন্ত্রাস বলা হয়’।[10]

মোটকথা, যে সকল কর্মকাণ্ড জনগণের মাঝে ভয়, ভীতি, ত্রাস, আতঙ্ক প্রভৃতি সৃষ্টি করে এবং জান ও মালের ক্ষতি করে, সেটাই হলো সন্ত্রাসীকার্যক্রম বা সন্ত্রাসবাদ। আর যে বা যারা এসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত, তারাই হলো সন্ত্রাসী।

সন্ত্রাস প্রতিরোধে আল-কুরআনের নির্দেশনা :

(ক) নিঃসন্দেহে সন্ত্রাস পৃথিবীতে ফাসাদ বা বিপর্যয় সৃষ্টি করে থাকে। অথচ পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা সম্পূর্ণ হারাম। এ ব্যাপারে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে নির্দেশনা এসেছে। মহান আল্লাহ বলেন,وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ ‘দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনের পর তোমরা তাতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। আর তাকে ভয় ও আশা সহকারে ডাকো। নিশ্চয় আল্লাহর অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী’ (আল-আ‘রাফ, ৭/৫৬)

(খ) মানবজীবন মহান আল্লাহর নিকট অত্যন্ত সম্মানিত ও পবিত্র। ইসলামে মানবহত্যা জঘন্য অপরাধ। মহান আল্লাহ একজন মানুষকে হত্যা করা সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করার সাথে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন,‏مَن قَتَلَ نَفْساً بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعاً وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعاً ‘যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করার কিংবা ভূপৃষ্ঠে কোনো গোলযোগ সৃষ্টি করার অপরাধ ছাড়াই কাউকে হত্যা করল, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকেই হত্যা করল। আর যে ব্যক্তি কোনো একজন মানুষের প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকেই রক্ষা করল’ (আল-মায়েদা, ৫/৩২)

(গ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ নিজেদের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য জঘন্যতম যে পন্থা অবলম্বন করে থাকে, তা হলো আত্মঘাতী হামলা। অথচ মহান আল্লাহ নিজের জীবন ধ্বংস করাকেও চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ ‘তোমরা নিজেদের জীবনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ো না’ (আল-বাক্বারা, ২/১৯৫)। তিনি আরও বলেন, وَلَا تَقْتُلُوا أَنفُسَكُمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا ‘তোমরা নিজেদের হত্যা করো না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর দয়ালু’ (আন-নিসা, ৪/২৯)

সন্ত্রাস প্রতিরোধে হাদীছের নির্দেশনা :

(ক) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ভয়াবহতা সম্বন্ধে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত কঠোর ঘোষণা দিয়েছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,لَزَوَالُ الدُّنْيَا أَهْوَنُ عَلَى اللَّهِ مِنْ قَتْلِ رَجُلٍ مُسْلِمٍ ‘একজন মুসলিমকে হত্যা করার তুলনায় সমস্ত দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাওয়া অবশ্যই আল্লাহর নিকট অধিক তুচ্ছ ও নগণ্য’।[11]

(খ) একে অপরের প্রতি অত্যাচার করা নিষিদ্ধ। এ সম্পর্কে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন,يَا عِبَادِى إِنِّى حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِى وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا فَلاَ تَظَالَمُوا ‘হে আমার বান্দাগণ! নিশ্চয় আমি আমার জন্য অত্যাচার হারাম করেছি এবং তা তোমাদের উপরও হারাম করে দিয়েছি। সুতরাং তোমরা পরস্পর অত্যাচারে লিপ্ত হয়ো না’।[12]

(গ) বিদায় হজ্জের সময় সোয়া লক্ষ মানুষের সামনে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা দিলেন, একজনের রক্ত, সম্পদ, সম্মানহানি করা অপরজনের জন্য হারাম। তিনি বলেন,اعْلَمُوا أَنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ حَرَامٌ عَلَيْكُمْ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا وَكَحُرْمَةِ شَهْرِكُمْ هَذَا وَكَحُرْمَةِ بَلَدِكُمْ هَذَا ‘জেনে রেখো! নিশ্চয় তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ, তোমাদের সম্মান পরস্পরের জন্য ঐরূপ পবিত্র যেরূপ এই দিন, এই মাস, এই শহর তোমাদের জন্য পবিত্র’।[13]

মক্কা বিজয়ের পর যখন কাফের-মুশরিকদের দল ঘরের দরজা বন্ধ করে ভয়ে থরথর করে কাঁপছিল আর ভাবছিল যে, আমরা তো রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হত্যা করার জন্য তার কাঁধে কাপড় বেঁধে হ্যাঁচকা টান দিয়েছিলাম, তার পিঠে উটের পচা নাড়িভুঁড়ি চাপিয়েছিলাম, তাকে কতভাবেই না কষ্ট দিয়েছিলাম, বেলাল রাযিয়াল্লাহু আনহু, খাব্বাব রাযিয়াল্লাহু আনহু প্রমুখ ছাহাবাকে কতই না কষ্ট দিয়েছি, মনে হয় আজ মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের গণহারে হত্যা করবেন। অথচ রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিঃশর্ত ক্ষমা করে দিলেন।

উক্ত ঘটনা থেকে দিবালোকের ন্যায় প্রতীয়মান হয় যে, ইসলাম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে নয়, বরং ক্ষমা করাকেই অধিক পছন্দ করে। এছাড়াও কয়েক শতাব্দী মুসলিমগণ ভারত উপমহাদেশ শাসন করেছেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, কোনোদিন কোনো হিন্দু বা বৌদ্ধকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করায় হত্যা করা হয়েছে বা তাদের কোনো মন্দির বা প্যাগোডা ভেঙে মাসজিদ বানানো হয়েছে— এমন ঘটনা খুঁজে পাওয়া যায় না। ইসলাম যদি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সাপোর্ট করত, তাহলে হিন্দুস্থানে হিন্দুদের কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যেত না।

হিন্দুস্থানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাই প্রমাণ করে, ইসলাম শান্তির ধর্ম।

উপসংহার :

আল-কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দলীল দ্বারা বুঝা যায়, ইসলাম হলো শান্তি, শৃঙ্খলা, দয়া, দাক্ষিণ্যের ধর্ম। আর সন্ত্রাসবাদ ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। শান্তি ও সন্ত্রাসবাদ প্রত্যয়দ্বয় দুই মেরুতে অবস্থানকারী দুটি বিষয়। সুতরাং ইসলামের সাথে এর দূরতমও কোনো সম্পর্ক নেই। অতএব, ইসলামী শাসনব্যবস্থা ক্বায়েমের নামে বিভিন্ন পন্থায় জনগণকে হত্যা করা নিছক সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ছাড়া আর কিছুই নয়। যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত, তারা ইসলাম ও মুসলিমদের প্রকাশ্য শত্রু। আল্লাহ আমাদের সন্ত্রাসের বিষাক্ত ছোবল থেকে মুক্ত থাকার তাওফীক্ব দিন— আমীন! ছুম্মা আমীন!!

শুআইব বিন আহমাদ

 শিক্ষার্থী, মাদরাসা দারুস সুন্নাহ, মিরপুর, ঢাকা।


[1]. ড. এনামুল হক ও অন্যান্য কর্তৃক সম্পাদিত, ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (ঢাকা : বাংলা একাডেমি, ১৯৯৬), পৃ. ৫৭৩।

[2]. বাংলা একাডেমি সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান (প্রকাশিত : ১৯৯৬), পৃ. ৫৪১।

[3]. রিয়াজ আহমদ, ব্যবহারিক শব্দকোষ (ঢাকা : সাহিত্য বিলাস, ২০০৮), পৃ. ২৬২।

[4]. আবু তাহের মেসবাহ সম্পাদিত ‘আল মানার’ বাংলা আরবী অভিধান (ঢাকা : মোহাম্মদী লাইব্রেরী, ১৯৯০), পৃ. ১২৮২।

[5]. সংসদ বাঙ্গালা অভিধান, (কলিকাতা : সাহিত্য সংসদ, ২২তম মুদ্রণ, ১৯৯৮), পৃ. ৬৬১।

[6]. বাংলা একাডেমি সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান, পৃ. ৫৪১।

[7]. যায়েদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু হাদী আল-মাদখালী, আল-ইরহাব ওয়া আছারু আলাল আফরাদ ওয়াল উমাম (দাম্মাম : দারু সাবীলিল মুমিনীন, ১ম প্রকাশ, ১৪১৮ হি.), পৃ. ১০।

[8]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১১৪।

[9]. The New Encyclopaedia Britannica, (U.S.A.-2002), p. 650.

[10]. ফোরকান আলী, সন্ত্রাসবাদ, ক্ষমতার লড়াইয়ের হাতিয়ার (দৈনিক ইনকিলাব, ২৫ জুন ২০০৭), পৃ. ১৪।

[11]. তিরমিযী, হা/১৩৯৫, ছহীহ।

[12]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৭৭।

[13]. ছহীহ ইবনু খুযায়মা, হা/২৮০৮।



Magazine