উত্তর: কোনো ব্যক্তি যদি মনে মনে তার ইবাদতের বাহ্যিক স্বীকৃতির প্রত্যাশা করে এমনকি কেউ তাকে সেই ইবাদতের দিকে সম্বন্ধ করে না ডাকলে মন খারাপ করে, তাহলে বুঝতে হবে সে অন্তরে যশ-খ্যাতি ও লৌকিকতা লালন করে। এমন ব্যক্তিকে উক্ত আমলের কারণেই জাহান্নামে যেতে হবে।
রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যার বিচার করা হবে, সে হচ্ছে এমন একজন, যে শহীদ হয়েছিল। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং আল্লাহ তার নিয়ামতরাশির কথা তাকে বলবেন এবং সে তার সবটাই চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে) তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, এর বিনিময়ে কী আমল করেছিলে? সে বলবে, আমি তোমারই পথে যুদ্ধ করেছি এমনকি শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছি। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছ। তুমি বরং এ জন্যেই যুদ্ধ করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে বলে, তুমি বীর। তা বলা হয়েছে, এরপর নির্দেশ দেয়া হবে। সে মতে তাকে উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার করা হবে যে জ্ঞান অর্জন ও বিতরণ করেছে এবং কুরআন মাজীদ অধ্যয়ন করেছে। তখন তাকে হাযির করা হবে। আল্লাহ তাআলা তার প্রদত্ত নিয়ামতের কথা তাকে বলবেন এবং সে তা চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে) তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, এত বড় নিয়ামত পেয়ে বিনিময়ে তুমি কী করলে? জবাবে সে বলবে, আমি জ্ঞান অর্জন করেছি এবং তা শিক্ষা দিয়েছি এবং তোমারই সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরআন অধ্যয়ন করেছি। জবাবে আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছ। তুমি তো জ্ঞান অর্জন করেছিলে এজন্যে যাতে লোকে তোমাকে জ্ঞানী বলে। কুরআন তিলাওয়াত করেছিলে এ জন্যে যাতে লোকে বলে, তুমি একজন ক্বারী। তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেয়া হবে, সে মতে তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার হবে যাকে আল্লাহ তাআলা সচ্ছলতা এবং সর্ববিধ বিত্ত-বৈভব দান করেছেন। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে প্রদত্ত নিয়ামতসমূহের কথা তাকে বলবেন। সে তা চিনতে পারবে (এবং স্বীকারোক্তিও করবে)। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, এসব নিয়ামতের বিনিময়ে তুমি কী আমল করেছ? জবাবে সে বলবে, সম্পদ ব্যয়ের এমন কোনো খাত নেই যাতে সম্পদ ব্যয় করা তুমি পছন্দ কর, আমি সে খাতে তোমার সন্তুষ্টির জন্যে ব্যয় করেছি। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছে। তুমি বরং এজন্যে তা করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে দানবীর বলে অভিহিত করে। তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেয়া হবে। সে মতে তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৯০৫)। তাই কাউকে ‘হাজী’ ‘আলহাজ্জ’ ‘মুছল্লী’ ‘ছালাতী’ যাকাতী’ ইত্যাদি বলে সম্বোধন করা যাবে না।
প্রশ্নকারী : আরিফুল ইসলাম
কিশোরগঞ্জ।