কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

দাওয়াত ও তাবলীগ

ভূমিকা:

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْر ‘তোমাদের মধ্যে একটা দল থাকা চাই, যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে ডাকবে’ (আলে ইমরান, ৩/১০৪)। মানবজাতি সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ জাতি হওয়া সত্ত্বেও যখন স্রষ্টাকে ভুলে সৃষ্টির উপাসনা শুরু করে, তখন আল্লাহ তাআলা পথভ্রষ্ট জাতির হেদায়াতের জন্য তাঁর পক্ষ থেকে যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রাসূল প্রেরণ করেন শুধু দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করার জন্য। যেমন আল্লাহ বলেন,وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে একজন করে রাসূল প্রেরণ করেছি এ মর্মে যে, তোমরা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করো আর তাগূত বা শয়তান থেকে দূরে থাকো’ (আল-নাহল, ১৬/৩৬)

দাওয়াত শব্দটি আরবী, এর মূলধাতু হচ্ছে دعو- যার শাব্দিক অর্থ আহ্বান করা, ডাকা, আমন্ত্রণ জানানো ইত্যাদি। যারা আহ্বান করে, তাদেরকে দাঈ বা দাওয়াতদাতা বলা হয়। তাবলীগ শব্দটিও আরবী, এর মূলধাতু হচ্ছে بلغ- যার শাব্দিক অর্থ পৌঁছে দেওয়া বা প্রচার করা। যিনি পৌঁছে দেন, তাকে মুবাল্লিগ বলা হয়।

আর আল্লাহর পথে দাওয়াত দেওয়ার অর্থ ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি লাভের উদ্দেশ্যে সর্বশেষ অহীর পথে আহ্বান করা। যার মূল উৎস পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ। অতএব, নিঃশর্তভাবে কেবল কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দিকে দাওয়াতই মানুষকে সঠিক হেদায়াত ও মুক্তির পথ দেখাতে পারে। আর এ দাওয়াত ও তাবলীগের সর্বপ্রথম দায়িত্ব পালন করেছেন আল্লাহর প্রেরিত নবী ও রাসূলগণ। তাদের মৃত্যুর পরে এ দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে আলেমসমাজের প্রতি।

দাওয়াতের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:

সকল কাজেরই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে। যেমন আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ ‘আমি মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমারই ইবাদতের জন্য’ (আয-যারিয়াত, ৫১/৫৬)। অনুরূপভাবে আল্লাহর পথে দাওয়াত ও তাবলীগ করার পেছনে কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে। যথা—

() মানুষকে অন্ধকার ও গোমরাহী থেকে হেদায়াত ও আলোর পথে নিয়ে যাওয়া: আল্লাহ তাআলা বলেন,اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ ‘আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের অভিভাবক, তিনি তাদের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে যান’ (আল-বাক্বারা, ২/২৫৭)

() মানুষের আক্বীদা ও আমল ছহীহ বিশুদ্ধ করার চেষ্টা করা: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَقَدِمْنَا إِلَى مَا عَمِلُوا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَنْثُورًا ‘আমরা তাদের কৃতকর্মের প্রতি মনোনিবেশ করব, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করে দিব’ (আল-ফুরক্বা, ২৫/২৩)

() মানুষকে জাহান্নামের পথ থেকে জান্নাতের পথে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,يَأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ ‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর’ (আত-তাহরীম, ৬৬/৬)

আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেওয়ার নিয়ম ও পদ্ধতি:

() হিকমতঅবলম্বন করা: দাওয়াত ও তাবলীগের জন্য সবচেয়ে যে জিনিসটি বেশি প্রয়োজন, তা হলো হিকমত ও কৌশল অবলম্বন করে যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে মানুষকে দাওয়াত দেওয়া। যাতে মানুষ সহজে দাওয়াত গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَ المَوعِظَةِ الحَسَنَةِ ‘আপনি মানুষকে দাওয়াত দিন আপনার রবের পথে হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা’ (আন-নাহল, ১৬/১২৫)

() নম্রতার সাথে কথা বলা: দাওয়াতী ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় কৌশল হলো মানুষের সাথে নরম ও কোমল মন নিয়ে কথা বলা। এতে করে সহজেই মানুষের অন্তরে পরিবর্তন দেখা দিবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,فَبِمَا رَحْمَةٍ مِنَ اللَّهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ ‘আপনি আল্লাহর দয়ায় তাদের প্রতি কোমল হৃদয়বান হয়েছিলেন। যদি আপনি তাদের প্রতি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতেন, তাহলে তারা আপনার আশপাশ হতে সরে পড়ত’ (আলে ইমরান, ৩/১৫৯)

() উত্তম পন্থায় প্রশ্নের জবাব দেয়া: আল্লাহ তাআলা বলেন,ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ ‘আপনি উত্তম পন্থায় মন্দকে প্রতিহত করুন। তখন দেখবেন আপনার সাথে যে ব্যক্তির শত্রুতা রয়েছে, সে যেন আপনার অন্তরঙ্গ বন্ধু’ (হা-মীম আস-সাজদাহ, ৪১/৩৪)

() কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী দাওয়াতী কার্যক্রম চালানো: আল্লাহ তাআলা বলেন,إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَى إِلَيَّ إِنِّي أَخَافُ إِنْ عَصَيْتُ رَبِّي عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ ‘আমি তো আমার প্রতি যা অহী অবতীর্ণ হয়, তারই অনুসরণ করি। বস্তুত আমি যদি আমার রবের অবাধ্য হই, তাহলে আমি ক্বিয়ামতের কঠিন দিনের শাস্তির ভয় করি’ (ইউনুস, ১০/১৫)। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمْسَكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ الله وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ ‘আমি তোমাদের মাঝে দু’টি বস্তু রেখে যাচ্ছি, তোমরা যতক্ষণ পর্যন্ত তা ধরে রাখবে, তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। সে দু’টি বস্তু হচ্ছে আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাত’।[1]

() সর্বদা দাওয়াতের কার্যক্রম চালু রাখা: দাওয়াত দেওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। দিনে-রাতে প্রতিটি মুহূর্তে দাওয়াতী কাজ চালিয়ে যেতে হবে। সুখে-দুখে সব অবস্থায় দাওয়াতের ধারাবাহিকতা মানুষের মাঝে চালিয়ে যেতে হবে। যেমন নূহ আলাইহিস সালাম-এর দাওয়াতের পদ্ধতি সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,قَالَ رَبِّ إِنِّي دَعَوْتُ قَوْمِي لَيْلًا وَنَهَارًا فَلَمْ يَزِدْهُمْ دُعَائِي إِلَّا فِرَارًا ثُمَّ إِنِّي دَعَوْتُهُمْ جِهَارًا ثُمَّ إِنِّي أَعْلَنْتُ لَهُمْ وَأَسْرَرْتُ لَهُمْ إِسْرَارًا ‘নূহ বললেন, হে আমার পালনকর্তা! আমি আমার জাতিকে দিবারাত্রি দাওয়াত দিয়েছি, কিন্তু আমার দাওয়াত তাদের পলায়নকেই বৃদ্ধি করেছে। অতঃপর আমি তাদেরকে প্রকাশ্যে আহ্বান করেছি আর ঘোষণা সহকারে প্রচার করেছি এবং গোপনে, চুপিসারেও দাওয়াত দিয়েছি’ (নূহ, ৭১/৫-৯)

() গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ক্রমান্বয়ে পেশ করা: মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মু‘আয ইবনু জাবাল রাযিয়াল্লাহু আনহু-কে ইয়ামানে প্রেরণ করেন দাওয়াতের উদ্দেশ্যে, তখন তাকে তাদের মাঝে দাওয়াতের পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন,إِنَّكَ تَقْدَمُ على قَوْمٍ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ فَلْيَكُنْ أَوَّلَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَى أَنْ يُوَحِدُوا اللَّهَ تَعَالَى فَإِذَا عَرَفُوا ذلكَ فَأَخْبِرُهُمُ أَنَّ اللَّهَ فَرَضَ عَليهِم خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي يَوْمِهِمْ وَلَيْلَتِهِمْ فَإِذَا صَلَّوْا فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَليهِم زَكَاةً فِي أَمْوَالِهِمْ ‘তুমি আহলে কিতাবের কাছে যাচ্ছ, সেখানে গিয়ে তাদেরকে প্রথম তাওহীদের দাওয়াত দিবে যে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মা‘বূদ নেই আর মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল ও তাঁর বান্দা। তারা যখন এটা মেনে নিবে, তখন তুমি তাদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের দাওয়াত দিবে আর তারা যখন এটা মেনে নিবে, তখন তুমি তাদেরকে যাকাত প্রদান করার দাওয়াত দিবে’।[2]

দাওয়াতদাতার চরিত্র ও গুণালি:

দাওয়াত ও তাবলীগী কাজের মুখ্য ভূমিকা যারা পালন করে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে যে সমস্ত ব্যক্তিগত গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকা একান্ত প্রয়োজন, তা নিম্নরূপ—

() ইখলা ও বিশুদ্ধ নিয়্যত: আল্লাহ তাআলা বলেন,وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ ‘তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তারা যেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করে, তারই জন্য দ্বীনের প্রতি একাগ্রচিত্ত হয়ে’ (আল-বায়্যিনাহ, ৯৮/৫)। আর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,أخلِصْ دِينَك يَكْفِك القليلُ مِن العمَلِ ‘তুমি তোমার দ্বীনকে একনিষ্ঠভাবে পালন করো, তাহলে অল্প আমলই তোমার জন্য যথেষ্ট হবে’।[3]

() জ্ঞান অর্জন করা: দাওয়াত ও তাবলীগ করার পূর্বে কুরআন ও হাদীছের সম্যক জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মুবাল্লিগের জন্য একান্ত প্রয়োজন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ ‘আপনি জেনে রাখুন! আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোনো মা‘বূদ নেই’ (মুহাম্মা, ৪৭/১৯)

() ধৈর্যশীল হওয়া: দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে ধৈর্যধারণ করা প্রত্যেক দাঈর জন্য অতীব জরুরী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,أُولَئِكَ يُؤْتَوْنَ أَجْرَهُمْ مَرَّتَيْنِ بِمَا صَبَرُوا وَيَدْرَءُونَ بِالْحَسَنَةِ السَّيِّئَةَ ‘তাদের ছবরের কারণে তাদেরকে দু’বার পুরস্কৃত করা হবে এবং তারা ভালো দিয়ে মন্দের মোকাবিলা করে’ (আল-ক্বাছাছ, ২৮/৫৪)

() ইলম অনুযায়ী আমল করা: দাওয়াতদাতা যে বিষয়ের দিকে মানুষকে আহ্বান করবে, উক্ত বিষয়ের উপর নিজেকে যথাসম্ভব আমল করতে হবে। অন্যথা তার এ দাওয়াত কোনো উপকার বয়ে নিয়ে আসবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ .كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللَّهِ أَنْ تَقُولُوا مَا لَا تَفْعَلُونَ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা কেন এমন কথা বল, যা তোমরা নিজেরাই বাস্তবায়ন কর না? তোমরা যা করো না, তা বলা আল্লাহর নিকট অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ’ (আছ-ছ, ৬১/২-৩)

() আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখা: প্রতিটি ভালো কাজের পূর্বে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখা। এটা প্রতিটি মুমিন বান্দার জন্য একান্ত জরুরী। আর কাউকে দাওয়াত দেওয়ার পূর্বে প্রথমে আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, قُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكَّلُونَ ‘হে রাসূল! আপনি বলুন! আমার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট, ভরসাকারীরা তাঁর উপরই ভরসা করে’ (আয-যুমার, ৩৯/৩৮)

আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেওয়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য:

দাওয়াতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ ‘হে রাসূল! আপনি তাবলীগ (প্রচার) করুন, যা আপনার রবের পক্ষ হতে আপনার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে’ (আল-মায়েদা, ৫/৬৭)

আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেওয়ার হুকুম বা বিধান:

দাওয়াতের তিনটি স্তর রয়েছে। সেগুলো হলো—

() ফরযে আইন: যা প্রত্যেক মুমিন-মুসলিমদের উপর ফরয। যা ছেড়ে দিলে কঠিন গুনাহগার হবে। আর তা হলো যখন সমাজের লোকেরা গুনাহের কাজে লিপ্ত হবে, নেকীর কাজ ছেড়ে দিবে।

() ফরযে কেফায়া: কিছু সংখ্যক লোক দাওয়াতের কাজ করলে বাকীদের জন্য যথেষ্ট হবে। যখন মানুষেরা নেকীর কাজ বেশি করে আর গুনাহের কাজ ছেড়ে দেয়।

() দাওয়াতে মুবাহ: দাওয়াত দিলে ছওয়াব পাবে আর না দিলে গুনাহগার হবে না। যখন সমাজের লোকেরা নেকীর কাজ করতে থাকবে, তখন সমাজের ভিতর থেকে কিছু লোক এ দাওয়াতের কাজে সবসময় নিয়োজিত থাকবে। এই অবস্থায় দাওয়াত দেওয়া মুবাহ হয়ে যায়।

আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেওয়ার ফযীলত:

আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেওয়া ও তাবলীগ করার ফযীলত ও প্রতিদান অফুরন্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ ‘তার কথার চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে? যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎ আমল করে এবং বলে আমি একজন মুসলিম’ (হা-মীম আস-সাজদা, ৪১/৩৩)

উপসংহার:

আসুন! আমরা সবাই কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করে জাহান্নাম থেকে বাঁচার চেষ্টা করি আর জান্নাত লাভ করি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সেই তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!

শাহাদাত হোসেন সামি

 দক্ষিণ নাল্লাপোল্লা আদর্শ ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসা, সাভার, ঢাকা।


[1]. মুওয়াত্ত্বা মালেক, হা/১৫৯৪।

[2]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৯৩৭।

[3]. মুসতাদরাকে হাকেম, হা/৭৮৪৪।

Magazine