কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (২): রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমার উম্মাহ ৭৩ দলে বিভক্ত হবে; একটি দল জান্নাতী, বাকিরা জাহান্নামী’। প্রশ্ন হলো, জান্নাতী দল কারা? আর অন্যরা কি চিরস্থায়ী জাহান্নামী, নাকি শাস্তি ভোগ করে জান্নাতে যাবে? দলীলসহ জানতে চাই।

উত্তর: জান্নাতী (নাজাতপ্রাপ্ত) দল তারাই যারা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর ছাহাবীদের মানহাজে চলে। নাজাতপ্রাপ্ত দল মতবিরোধ ও মতভেদের সময় আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথার দিকে ফিরে যায়, আল্লাহ তাআলার এই বাণী অনুযায়ী, ‘তোমরা যদি কোনো বিষয়ে বিরোধে লিপ্ত হও, তবে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও— যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে থাক। এটি উত্তম এবং ফলাফলের দিক থেকে উত্তম’ (আন-নিসা, ৪/৫৯)। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘তবে না! তোমার প্রতিপালকের কসম! তারা মুমিন হবে না, যতক্ষণ না তারা তাদের পারস্পরিক বিবাদে তোমাকে বিচারক হিসেবে গ্রহণ করে; তারপর তুমি যা ফয়সালা করবে, তারা নিজেদের মনে তার কোনো আপত্তি পাবে না এবং সম্পূর্ণরূপে তা মেনে নিবে’ (আন-নিসা, ৪/৬৫)। নাজাতপ্রাপ্ত দল কারো কথাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথার ওপরে অগ্রাধিকার দেয় না, আল্লাহর এই বাণী অনুসরণ করে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে নিজেদের কিছু অগ্রাধিকার দিয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন এবং জানেন’ (আল-হুজুরাত, ৪৯/১)। আর বাকিদের পরিণাম ভিন্ন অর্থাৎ তাদের মধ্যে কেউ চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে থাকবে, যার বিদআত তাকে ইসলাম থেকে বের করে দিয়েছে, সে জাহান্নামে চিরকাল থাকবে। আর যারা কুফরী করেছে এবং আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করেছে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে’ (আল-বাকারা, ২/৩৯)। আবার কেউ কেউ জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করবে, তার অপরাধ সমপরিমাণ। তারপর তার ঈমান থাকার কারণে জাহান্নাম থেকে বের হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আবূ সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতীগণ যখন জান্নাতে আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে, তখন আল্লাহ বলবেন, যার অন্তঃকরণে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান আছে তাকে বের করো। অতঃপর তাদেরকে এমন অবস্থায় বের করা হবে যে তারা পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। তাদেরকে জীবন-নদে নামিয়ে দেওয়া হবে। এতে তারা তরতাজা হয়ে উঠবে যেমন নদীর তীরে জমাট আবর্জনায় শস্যদানা গজিয়ে ওঠে’। নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেন, ‘তোমরা কি দেখ না, সেগুলো হলুদ রঙের বাঁকা হয়ে উঠতে থাকে?’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬৫৬০)।

প্রশ্নকারী : কাউসার মাহমুদ

 বংশাল, ঢাকা।


Magazine