উত্তর : কথাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং কুরআন মাজীদের সাথে সাংঘর্ষিক। মানুষ সৃষ্টির মূল উপাদান হলো মাটি। এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি মৃত্তিকার মূল উপাদান হতে’ (মুমিনূন, ১২)। অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘তিনিই সেই মহান সত্তা, যিনি তোমাদেরকে প্রথমে মাটি ও পরে বীর্য হতে সৃষ্টি করেছেন’ (মুমিন, ৬৭)। আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ফেরেশতাদেরকে নূর থেকে ও জিন জাতিকে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর আদম জাতিকে সৃষ্টি করা হয়েছে সেই সমস্ত ছিফাত দ্বারা, যে ছিফাতে তোমাদেরকে ভূষিত করা হয়েছে’। অর্থাৎ মানব জাতিকে মাটি ও পানি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে (ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৯৬; মিশকাত, হা/৫৭০১)। উল্লেখ্য যে, ডারউইনের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যা-বিশেস্নষণ করে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছে যে, বানর হতে বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের সৃষ্টি। কিন্তু এই মতের স্বপক্ষে অদ্যবধি যারা সমর্থন করে আসছেন তারা গ্রহণযোগ্য কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি। তাছাড়া দাঊদ আলাইহিস সালাম-এর সময় নাফরমান ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের যাদের আকৃতি পরিবর্তিত হয়ে বানর-শূকরে পরিণত হয়েছিল (বাক্বারাহ, ৬৫)। ঐ বানর থেকে কোনো বংশ বিস্তার ঘটেনি। ইবনু আববাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তারা কিছু খেতে পারত না, পান করতে পারত না। তারা মাত্র তিন দিন বেঁচে ছিল (তাফসীরে কুরতুবী, ১/৪৪১)। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, أَنَّ الْمَمْسُوخَ لَا يَنْسِلُ ‘চেহারা বিকৃতরা কোনো বংশ বিস্তার করে না’ (তাফসীরে কুরতুবী, ১/৪৪১)। আল্লাহ এদের সমূলে ধ্বংস করেছিলেন। সুতরাং বানর পূর্বকালে মানুষ ছিল বা মানুষ পূর্বকালে বানর ছিল, কোনটাই ঠিক নয়। বরং বানর আল্লাহ পাকের একটি স্বতন্ত্র সৃষ্টি।
প্রশ্নকারী : ইমন
কুষ্টিয়া।
