কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (৪০): একজন স্ত্রী রাগের মুহূর্তে স্বামীকে বলে, ‘তোমাকে ডিভোর্স’। এ কথা শোনার পর স্বামীও রাগের মাথায় বলে, ‘তোমাকে ডিভোর্স, তোমার ১৪ গুষ্টিকে ডিভোর্স’। কিন্তু স্বামীর তালাক দেওয়ার কোনো নিয়্যত (ইচ্ছা) ছিল না। সে কথাগুলো শুধু রাগ ও গালির ভাষায়, তালাকের উদ্দেশ্য ছাড়া উচ্চারণ করেছে। স্বামী জানে যে, ‘তোমাকে তালাক দিলাম’— এই কথা নিয়্যতসহ বললে তবেই তালাক হয়। এখন প্রশ্ন হলো এমতাবস্থায় তাদের মধ্যে তালাক সংঘটিত হয়েছে কি? যদি হয়, তাহলে কয়টা হয়েছে? ফিরিয়ে নেওয়ার উপায় কী?

উত্তর: স্ত্রীর বলাতে তালাক হয়নি। স্বামীর তালাক দেওয়াতে এক তালাক পতিত হয়েছে। তালাকের অধিকার একমাত্র স্বামীর। স্ত্রী তালাকের অধিকার রাখে না। অতএব, স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিলে তালাক হবে না। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, إِنَّمَا الطَّلاَقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ ‘তালাক শুধু সেই দিতে পারে, যে চালানোর দায়িত্ব নিয়েছে (তথা স্বামী)’ (ইবনু মাজাহ, হা/২০৮১; ইরওয়াউল গালীল, হা/২০৪১)। তালাকের স্পষ্ট শব্দ তথা ‘তালাক বা ডিভোর্স’ শব্দের মাধ্যমে তালাক দিলে নিয়্যত ছাড়া রাগের মাথায় হলেও তা কার্যকর হবে। আবূ হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তিনটি বিষয় এমন যে, ইচ্ছাকৃত করলে ইচ্ছাকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছাকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হলো তালাক, বিয়ে এবং তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা’ (ইবনু মাজাহ, হা/২০৩৯; আবূ দাঊদ, হা/২১৯৪)। আর একসাথে তিন তালাক দিলে তা এক তালাকই হয় (ছহীহ মুসলিম, হা/৩৫৬৫)। এক্ষণে স্বামী তিন মাসিকের মাঝে বিবাহ ছাড়া স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় আচরণের মাধ্যমে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারে। তিন মাস পার হয়ে গেলে নতুনভাবে বিবাহ হতে হবে। উল্লেখ্য, সমাজে প্রচলিত চুক্তিভিত্তিক ‘হালালা বা হিল্লা’ পদ্ধতি সম্পূর্ণ শরীআত পরীপন্থী হারাম কাজ (ইবনু মাজাহ, হা/১৯৩৬)।

প্রশ্নকারী : রুনা

ঢাকা।


Magazine