কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (৭) : হে আল্লাহ তোমার পবিত্রতার কসম, তোমার ইজ্জতের কসম, তোমার সম্মানের কসম, তোমার গুণাবলীর কসম, কাবা গৃহের রবের কসম, হে আল্লাহ তোমার পবিত্র কুরআনকে সামনে রেখে, তোমার কুরআনকে সাক্ষী রেখে, আমার সৃষ্টিকর্তার নামে শপথ করে বলছি, এখন থেকে আমি তুমি যা অপছন্দ করো তা আমি করবো না। প্রশ্ন হলো- নিজেকে পাপ থেকে দূরে রাখতে, শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচতে, নফসের ধোঁকা, যৌবনের ধোঁকা থেকে বাঁচতে। এই ভাবে কসম করা বা আল্লাহকে কথা দেয়া যাবে কি?

উত্তরশয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচার জন্য কসমের পথ অবলম্বন না করে তাক্বওয়ার পথ অবলম্বন করা অধিক উত্তম। কেননা তাক্বওয়া তথা আল্লাহভীতি মানুষের কাজকর্মকে সঠিক করে দেয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কাজগুলোকে শুদ্ধ (সঠিক) করে দেবেন এবং তোমাদের পাপগুলো ক্ষমা করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই এক মহা সাফল্য অর্জন করল’ (আল আহযাব, ৩৩/৭১)। এ মর্মে আরো অসংখ্যক আয়াত রয়েছে। তবে, ভালোকাজের সংকল্প করাও একটি ভালো কাজ। আর ভালোকাজের কসম করলে তা পুরণ করা জরুরি। তাই কেউ চাইলে পাপ কাজ বর্জনের জন্য আল্লাহর জাতি নাম ও গুণবাচক নামে কসম করতে পারে। যদি কসমের উপর টিকে থাকতে না পারে তাহলে তার জন্য কাফফারা প্রদান করতে হবে। ইমরান ইবনু হুসাইন রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘পাপের ব্যাপারে মানত করলে সে মানত পূরণ করতে নেই। আর বান্দা যার মালিক নয় সে বস্তুর মানতও পূরণযোগ্য নয়’। ইবনু হুজর রহিমাহুল্লাহ-এর বর্ণনায় আছে যে, আল্লাহর নাফরমানীর বিষয়ে মানত সংঘটিত হয় না (ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৪১; ইবনু মাজাহ, হা/২১২৫)। আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কোন বিষয়ে কসম করার পর অন্য বিষয় যদি তা থেকে ভাল দেখে তবে, সে তার কসমের কাফফারা দিয়ে দিবে এবং ঐ (উত্তম) কাজটি করবে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৬০৫)। কসমের কাফফারা হলো- ১. দশজন মিসকীনকে মধ্যম মানের খাদ্য দান ২. অথবা তাদেরকে পরিধেয় বস্ত্র প্রদান করা ৩. অথবা সামর্থ না থাকলে, তিনদিন ছিয়াম পালন করা (আল-মায়েদা, ৫/৮৯)। উল্লেখ্য যে, প্রশ্নোল্লিখিত কসমের বাক্যগুলোর মধ্যে ‘কুরআনকে সামনে, কুরআনকে সাক্ষী রেখে’ চলবে না। কেননা আল্লাহর জাত ও গুনাবলি বাদ দিয়ে এমন বাক্য দ্বারা কসম করা শিরক।

প্রশ্নকারী : মোহাম্মাদ হাসান বিন ইবরাহীম

গাংগনী, মেহেরপুর।


Magazine