উত্তর: রিযিকে প্রশস্ততা লাভের অনেক মাধ্যম কুরআন হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। জ্ঞাতার্থে কয়েকটি উল্লেখ্য করা হলো- ১. তাক্বওয়ার (আল্লাহভীতি) পথ অবলম্বন করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরী করে দেন। আর তাকে তার ধারণাতীত উৎস থেকে দান করবেন রিযিক’ (আত-তালাক্ব, ৬৫/২-৩)। ২. পাপের জন্য ক্ষমা চাওয়া। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর বলেছি, ‘তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তানাদি বাড়িয়ে দেবেন’ (নূহ, ৭১/১০-১২)। ৩. আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখা। উমার রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা যদি আল্লাহর উপর প্রকৃতভাবে ভরসা করতে পারো তাহলে, তিনি তোমাদেরকে পাখির ন্যায় রিযিক দান করবেন। অর্থাৎ পাখি যেমন খালি পেটে সকালে বের হয় সন্ধায় ভর্তি পেটে ফিরে আসে (মুসনাদে আহমাদ, হা/২০৫; ইবনু মাজাহ, হা/৪১৬৪)। ৪. বেশি বেশি দান করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ সূদকে মিটিয়ে দেন এবং দানকে বর্ধিত করেন’ (আল বাকারা, ২/২৭৬)। ৫. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। আনাস রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি স্বীয় রিযিক বৃদ্ধি ও দীর্ঘজীবী হতে চাই সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখে (ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৪০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৫৭)। ৬. বিবাহ করা। আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা তিন প্রকারের মানুষকে সাহায্য করা নিজের কর্তব্য হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদকারী, মুকাতাব গোলাম- যে চুক্তির অর্থ পরিশোধের ইচ্ছা করে এবং বিবাহে আগ্রহী লোক- যে বিবাহের মাধ্যমে পবিত্র জীবন যাপন করতে চাই (আত তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৯; মুসনাদে বাযযার, হা/৮৫০০)। ৭. ছালাতুয যুহা আদায় করা। আবূ উমামা রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান! তুমি আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দিনের শুরভাগে চার রাকআত ছালাত আদায় করো আমি তোমার জন্য দিনের শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হয়ে যাবো’ (আল মুজামুল কাবীর, হা/৭৭৪৬; শারহুস সুন্নাহ লিল বাগাবী, ৪/১৪৪ পৃ.)। ৮. বেশি বেশি দু‘আ করা। (ক). اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْفَقْرِ وَالْقِلَّةِ وَالذِّلَّةِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ (খ). اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ، وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَيْءٍ، مُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْآنِ الْعَظِيمِ، أَنْتَ الْأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ، اقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ (আবূ দাউদ, হা/১৫৪৪; ইবনু মাজাহ, হা/৩৮৩১)। এছাড়াও হাদীছে বর্ণিত অন্যান্য দু‘আসহ নিজ ভাষায় আল্লাহর নিকট রিযিক চাইতে হবে।
প্রশ্নকারী : ফারহাদ হোসেন
সখিপুর, শরিয়তপুর।