কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

উপেক্ষিত ধর্ম, নির্বাসিত মূল্যবোধ

১৭৯৯ সালে ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। এ বিপ্লবের পেছনে দুটি সামাজিক উপাদান বড় প্রভাব ফেলেছিল। এর মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ফরাসি সমাজ ও রাষ্ট্র এ সময় নীতিহীনতায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিল। সামাজিক বৈষম্যের কারণে দেশে দারিদ্র্য বেড়ে গিয়েছিল। ফলে সমাজে অস্থিরতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। সমাজ থেকে মূল্যবোধ হারিয়ে গিয়েছিল। সময়ের ব্যবধানে সমাজের মুক্তিকামী জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। তারা নীতিহীনতার বিরুদ্ধে আপসহীন ভূমিকা প্রদর্শন করেছিলেন। মূল্যবোধ উপাদানটি এ সময় ফরাসি সমাজে আপসহীনতায় রূপান্তরিত হয়েছিল। ফলে ১৭৮৯ সালে সূচিত হওয়া বিপ্লব ১৭৯৯ সালে চূড়ান্তভাবে সংঘটিত হয়েছিল। একই সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশে এ মূল্যবোধের যথেষ্ট চর্চা ছিল।

প্রাচীন ভারতে বহু ধর্মের লোক এক সমাজে পাশাপাশি বসবাস করত। তাদের মাঝে একে অপরের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাবোধ ছিল। পাশাপাশি বসবাস করলেও কারো প্রতি কোনো হিংসা-বিদ্বেষ ছিল না। এর মূল কারণ ছিল উন্নত মূল্যবোধ। প্রাচীন ভারতের ধর্মীয় জীবন ছিল খুবই উন্নত। ধার্মিকরা ছিলেন চরম পরমতসহিষ্ণু ও পরধর্মসহিষ্ণু। ফলে তাদের সামাজিক মূল্যবোধ হয়ে উঠেছিল অনেক উন্নত। এ সময় বাংলায় মূল্যবোধের অনুশীলন ছিল চোখে পড়ার মতো। সুনীতি, সুশিক্ষা আর সুবিচার ছিল বাংলার শাসন ব্যবস্থার অনন্য শ্রেষ্ঠ উপাদান। সহনশীলতা, উদারতা, মায়া-মমতা আর মানবতা ছিল প্রাচীন বাংলার সমাজ জীবনের প্রতিচ্ছবি। ফলে পুরো উপমহাদেশ হয়ে উঠেছিল মূল্যবোধের পাঠশালা। কিন্তু বর্তমানের অবস্থাটা খুবই হতাশাজনক। বর্তমানে মূল্যবোধের চর্চা এখানে অনেকটাই উপেক্ষিত। বলা হয়ে থাকে, ‘যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ’। বাংলার বর্তমান অবস্থাটা এ প্রবাদের প্রতিচ্ছবিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ভালোটা যেন সমাজ থেকে দিন দিন উঠে যেতে বসেছে। আগের সমাজের মানুষ ধনের চেয়ে নিজেদের সম্মানটাকে বড় করে দেখত। মান-সম্মানকে মানুষ বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করত। কিন্তু বর্তমান সমাজটা একবারেই পালটে গেছে। সমাজের মানুষ বিরামহীন ছুটে চলছে বিত্তের পেছনে। বিরামহীন ছুটতে গিয়ে তারা জলাঞ্জলি দিচ্ছে তাদের সততা ও নৈতিকতা। জড়িয়ে পড়ছে তারা নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে। আর এটা এখন শুধু দেশের একটি সেক্টরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এ অনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন দেশের প্রতিটি সেক্টরে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের প্রভাবশালীদের অনেকে দুর্নীতির অভিযোগে জেলে রয়েছেন। ‘ভবিষ্যতে অনেককেই জেলে যেতে হবে’ ভয়ে বাঁচবার জন্য তারা এখন থেকেই অনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

দেশের বর্তমান সমাজ ও অর্থনীতির প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রই নীতিহীনতায় নিমজ্জিত। সমাজে এ নীতিহীনতাই মূল্যবোধের অবক্ষয় হিসেবে পরিচিত। দেশে নীতির চর্চা এখন অনেকটা বোকাদের কাজে রূপান্তর লাভ করেছে। নীতিবান লোককে এখন সমাজে তেমন আর সম্মান করা হয় না। সম্মান এখন টাকা ও অর্থ দ্বারা বিবেচনা করা হয়। অথচ এ দেশেই এককালে নীতিবান হতদরিদ্র ব্যক্তিকেও সম্মানের চোখে দেখা হতো। প্রাচীন বাংলায় এসব নীতিবান ব্যক্তিই গুণীজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এ সমস্ত গুণীজনকে সমাজের সকলেই সম্মানের চোখে দেখত। কিন্তু বর্তমানে বাংলায় সেদিন আর অবশিষ্ট নেই। নীতি আর মূল্যবোধ চর্চাকে এখন বিদ্রুপের চোখে দেখা হয়। সমাজ এখন ‘টাকা যার, সম্মান তার’ নীতিতে পরিচালিত হচ্ছে। নীতিবান গুণীজনেরা সমাজে অনেকটা অপাঙক্তেয় ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বাংলার সমাজ এখন আর নীতিবান গুণীজনদের কদর করে না। তারা কদর করে সূদখোর টাকাওয়ালা মহাজনদের। এসব টাকাওয়ালা ব্যক্তিবর্গ এখন সমাজের পরিচালক ও নীতি নির্ধারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ফলে তারা প্রচণ্ড প্রভাবশালী, ক্ষমতাশালী আর দেশের নিয়ন্ত্রকে পরিণত হয়েছেন। তাদেরকেই সমাজের লোকজন এখন তৈল মারায় ব্যস্ত থাকেন সারাক্ষণ। সমাজ এখন এসব প্রভাবশালীকেই সম্মান-তাযীম ও সংবর্ধনা প্রদান করে। সংবর্ধনা সভায় এ নীতিহীন মানুষগুলোর মুখ থেকেই আবার নীতিবাক্য উচ্চারিত হয়!

মুখের উচ্চারণ আর কাগজের মাঝেই দেশের মূল্যবোধ এখন আটকে রয়েছে। প্রভাবশালীদের অনৈতিক শক্তিতে শিকলবন্দি হয়ে পড়েছে দেশের মূল্যবোধ। বাংলাদেশে মূল্যবোধের অবস্থা বর্তমানে শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী প্রজন্ম মনুষ্যত্বকে হারিয়ে একেবারে পশুতে পরিণত হতে পারে। নিকট ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্ম মূল্যবোধকে রূপকথার কল্পকাহিনি হিসেবে খুঁজে ফিরবে। আধুনিক যুগে বাংলাদেশের সামগ্রিক বৈশিষ্ট্য অত্যন্ত দুর্বল এবং প্রশ্নবিদ্ধ। অথচ ১৯৭১ সালে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধ ছিল মূল্যবোধকে পুঁজি করে। একই বছরের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করা হয়েছিল। এ ঘোষণাপত্রটি ছিল মূল্যবোধে উজ্জীবিত এক অসামান্য মূলনীতি। মূল্যবোধের দিক থেকে এ ঘোষণাপত্রটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য এক দলীল। এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান। ছিল রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়ার আইনি দলীল। এ ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে— ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করনার্থে, সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্ররূপে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করিলাম।’ মৌলিক মানবীয় মূল্যবোধে রচিত এ সংবিধান আজ বলতে গেলে দেশের সবক্ষেত্রে উপেক্ষিত। স্বাধীন দেশের মানুষের জন্য এটা একদিকে যেমন দুঃখজনক, তেমনি লজ্জাজনকও বটে। কারণ জারিকৃত উক্ত নীতির ভিত্তিতে আজকের বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে না।[1] মূলত জারিকৃত উল্লেখিত মূল্যবোধের অনুপস্থিতিটাই হলো আমাদের সামাজিক অবক্ষয়। সমাজে যখন নৈতিক স্খলন ঘটে, যখন চ্যুতি-বিচ্যুতি ঘটে, তখনই তাকে সামাজিক অবক্ষয় বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ আজ নানামুখী অবক্ষয়ে জর্জরিত। বাংলাদেশের সমাজে মাদক এবং ইয়াবার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। গাঁজা, ফেনসিডিলের ব্যবসাও রমরমা। মাদকতার স্রোতে দেশের যুবসমাজ আজ ভেসে যেতে বসেছে। দেশের কোনো কোনো জনপ্রতিনিধি এ ব্যবসার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি দেশের জনপ্রিয় কয়েকজন নায়ক-নায়িকা মদের ব্যবসার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া দেশের নামিদামি অনেকেই এ ব্যবসায় জড়িত বলে মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেছে।

লোকাল এডুকেশন এন্ড ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্টের মতে, বাংলাদেশে প্রায় ২৫ লাখ শিশু আছে, যাদেরকে পথশিশু বলা হয়। এদের মধ্যে ১৯ শতাংশ শিশু হিরোইন আসক্ত। ৪০ শতাংশ ধূমপায়ী। ২৮ শতাংশ শিশু ট্যাবলেটে আসক্ত। আর ৮ শতাংশ শিশু আছে যারা ইনজেকশনে আসক্ত। এটা জাতি-রাষ্ট্রের জন্য ভয়ানক এক অশুভ ইঙ্গিত। এটা মানবিক মূল্যবোধের চরমতম অবক্ষয়। দেশে বন্যার পানির মতো পর্নোগ্রাফির আসক্তি বেড়ে গেছে। তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীরা বর্তমানে পর্নোগ্রাফির ভয়াল নেশায় মত্ত। আর শুধু শিক্ষার্থীদের মাঝেই এ নেশা সীমিত নয়। মধ্যবয়সি নারী-পুরুষও এ মরণ নেশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক তথ্য মতে, রাজধানী ঢাকার স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের শতকরা ৮০ ভাগ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। ফলে পর্নোগ্রাফি আসক্তি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ফলশ্রুতিতে অপরিণত ও অসংগতিপূর্ণ যৌনাচার সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। আর এসব অবক্ষয়ের সাথে জড়িত অধিকাংশই শিক্ষিত জনশক্তির অন্তর্ভুক্ত।

উল্লেখিত অবক্ষয়সৃষ্ট অস্থিরতার কারণে সমাজে সৃষ্টি হয়েছে নানা জটিলতা। এ অবক্ষয়ের ব্যাপ্তি সর্বগ্রাসী রূপ লাভ করেছে। ফলে নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের ক্ষেত্রে সততা ও স্বচ্ছতার অভাব দেখা দিয়েছে। তারা ধৈর্য, উদারতা ও শিষ্টাচার হারিয়ে ফেলেছে। কর্মে তাদের নান্দনিকতা, নিয়মানুবর্তিতা ও সৃজনশীলতা লোপ পেয়েছে। তারা তাদের অধ্যাবসায়, দেশপ্রেম, কল্যাণবোধ ও দায়িত্ববোধ প্রভৃতি নৈতিক গুণাবলি নষ্ট করে ফেলেছে। সামগ্রিক জটিলতার কারণে মানবিক মূল্যবোধের জায়গায় স্থান পেয়েছে সামাজিক অবক্ষয়। দেশের সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় অবক্ষয় এখন জয়-জয়কার অবস্থা।

দেশের ব্যাংক ব্যবসায় দুর্নীতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক এবং রাষ্ট্রীয় ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরি দেশের মূল্যবোধের বড় অবক্ষয়ের নির্দেশক। শেয়ারমার্কেট, ডেসটিনি, যুবক আর হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা নৈতিক মূল্যবোধ বিচ্যুতির নির্দেশ প্রদান করে। দেশে নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও চুরির ঘটনা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডাকাতি, ছিনতাই, গুম ও খুন এখন স্বাভাবিক নিয়মের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছে। সন্ত্রাস, রাহাজানি ও নৈরাজ্য সামাজিক অবক্ষয় বিস্তৃতির এক মারাত্মক বহিঃপ্রকাশ। এসব অবক্ষয়ের মূলে রয়েছে পারস্পরিক অসহিষ্ণুতা, সর্বগ্রাসী অশ্লীলতা ও মাদকতা। পাশাপাশি রয়েছে ধর্মবিমুখতা, ধর্মের অপব্যবহার ও ধর্মব্যবসা। অথচ যুগযুগ ধরে ধর্মই মানুষকে ভদ্র করে গড়ে তুলেছে। ধর্মের সঠিক অনুশীলন ও শিক্ষা মানুষকে রুচিশীল ও সাংস্কৃতিবান করেছে। ধর্ম ধার্মিকদেরকে করেছে ভদ্র ও মার্জিত। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, নবী মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনের সময়কালে আরবের প্রায় সকল মানুষ ছিল ইতর, বর্বর আর নিকৃষ্ট। ছিল তারা অভদ্র, নির্দয়, নিষ্ঠুর আর অত্যাচারী-পাপী। অথচ ধর্মের সঠিক শিক্ষা ও অনুশীলনের মাধ্যমে সেই তারাই বিশ্বসেরা ভালো মানুষে পরিণত হয়েছিলেন। ধর্মের যথাযথ অনুশীলন তাদেরকে তৎকালীন বিশ্বসেরা গুণীজন হিসেবে ভূষিত করেছিল। গুণীজন হিসেবে তারা শুধু পৃথিবীতেই সেরা মানুষ ছিলেন না; বরং পরকালের জন্য নির্বাচিত সেরা মানুষের স্বীকৃতিটাও এ পৃথিবী থেকে পেয়ে গিয়েছিলেন। ‘আল্লাহ তাদের (ছাহাবীদের) উপর খুশী আর তারাও আল্লাহর প্রতি খুশী’ (আল-বাইয়্যেনাহ, ৯৮/৮)। হাদীছে এসেছে, ‘আবূ বকর, উমার, আলী, উছমান, তালহা ইবনু উবায়দুল্লাহ, যুবায়র ইবনুল আওয়াম, আব্দুর রহমান ইবনু আওফ, সা‘দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস, সাঈদ ইবনু জায়েদ ও আবূ ওবায়দা ইবনু যাররাহ রহিমাহুমুল্লাহ এ ১০ জন ছাহাবী দুনিয়া থেকে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়ে গেছেন’।[2] এরকম মূল্যবোধে সিক্ত মানুষ আর পৃথিবীতে আসবে না। বিশ্বের সকল ইতিহাস এটাই জানান দেয় যে, পৃথিবীর সকল সভ্যতা গড়ে উঠেছিল কোনো না কোনো ধর্মকে কেন্দ্র করে। তাই মূল্যবোধে সিক্ত একটি সমাজ গড়তে প্রয়োজন ধর্মের ব্যাপক শিক্ষা ও তার যথার্থ অনুশীলন। প্রয়োজন ধর্ম লালন ও তার সম্প্রসারণ। ইসলামী চিন্তাবিদ সাইয়েদ কুতুব রহিমাহুল্লাহ তাই বলেছেন, ‘যে সমাজে মানবীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতার প্রাধান্য থাকে, তাকে সভ্য সমাজ বলে’।

(আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)

ড. মো. কামরুজ্জামান

অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।


[1]. বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১০ এপ্রিল, ২০১৬।

[2]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৯৯৬।

Magazine