উত্তর: উক্ত বক্তব্য সঠিক নয়। কারণ রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমত কুরআনের সাথে হাদীছ মিলে যাওয়ার ভয়ে লিখতে নিষেধ করলেও পরবর্তীতে কুরআনের সাথে মিলে যাওয়ার আশঙ্কা হতে মুক্ত হলে ভুলে যাওয়ার ভয়ে লিখার অনুমতি দিয়েছেন। আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মক্কা বিজয় কালে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের উদ্দেশ্যে দাঁড়ান..... এমন সময় ইয়ামানের আবূ শাহ নামক এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলে, হে আল্লাহর রাসূল! আপনারা আমাকে লিখে দিন। তখন রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বলেন, তোমরা আবূ শাহকে লিখে দাও (ছহীহ বুখারী, হা/২৩০২)। আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ছাহাবীদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ছাড়া এমন কেউ ছিল না যে, সে আমার হতে বেশি হাদীছ জানতো। কারণ সে লিখতো আর আমি লিখতাম না (ছহীহ বুখারী, হা/১১৩)। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি হাদীছ সংরক্ষনের উদ্দেশ্যে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে যাই শ্রবণ করতাম তাই লিখে ফেলতাম। এরপর কুরাইশরা আমাকে লিখতে নিষেধ করে বলে, তুমি রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে যা শ্রবণ করছো তাই লিখে ফেলছো? অথচ রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষ হিসাবে রাগান্বিত ও খুশির অবস্থায় কথা বলেন। এরপর আমি লিখা হতে বিরত থেকে রাসূলের কাছে বিষয়টি উল্লেখ করলাম তখন তিনি তার আঙ্গুল দ্বারা তার মুখের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, তুমি লেখ। ঐ সত্ত্বার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে। আমার মুখ হতে শুধু সত্যই বের হয়ে থাকে (আবূ দাউদ, হা/৩৬৪৬)। উক্ত হাদীছগুলো আদেশ বাচক। সুতরাং রাসূলের যুগে হাদীছ লেখা হয়নি এমন দাবী ভিত্তিহীন। তবে তা একত্রে সংকলিত আকারে ছিল না। যেমন আব্দুল্লাহ ইবনু আমরের কাছে একটি ছহীফা ছিল; যার নাম ছিল ‘ছাদেক্বা’ ও আলী রযিয়াল্লাহু আনহু-এর কাছে একটি ছহীফা ছিল; যার মধ্যে মুক্তিপন, দিয়াত ইত্যাদি বিষয় লিপিবদ্ধ ছিল। এরপর খেলাফতের যুগে উমার রযিয়াল্লাহু আনহু হাদীছ লেখার ইচ্ছা করলেও অবস্থার দিকে লক্ষ্য করে লেখতে সক্ষম হননি। পরবর্তীতে সংকলন আকারে সর্বপ্রথম হাদীছ একত্রিত করেন উমার ইবনু আব্দুল আযিয (ফাতহুল বারী, ১/২৩৪)। যা ছিল ১০০ হিজরীর শেষের দিকে (ছহীহুল কুতুবুত তিসআ‘, পৃ. ২২)।
প্রশ্নকারী : মো: মিনহাজ পারভেজ
হড়গ্রাম, রাজশাহী।