উত্তর : ঋণ দেওয়া সম্পদের নিরাপত্তার জন্য যে সম্পদ ঋণদাতার মালিকানায় সোপর্দ করা হয়, তাই বন্ধক (আল বাক্বারা, ২৮৩)। বন্ধকে রাখা সম্পদ ঋণদাতার ভোগের জন্য নয়। বরং তা শুধু তার সম্পদের নিরাপত্তার জন্য। তাই ঋণদাতা উক্ত সম্পদ ভোগ করতে পারবে না। কারণ ‘যে ঋণে লাভ নিয়ে আসে, সেটাই সূদ’ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, হা/২০৬৯০; সুনানে কুবরা, বায়হাক্বী, হা/১০৯৩৩)। উল্লেখ্য যে, বন্ধকের সম্পদ যদি এমন হয় যে, তার পিছনে খরচ করা লাগে, যেমন- গরু, ছাগল, উট ইত্যাদি, তাহলে যতটুকু খরচ করবে, ততটুকু তার থেকে উপকার গ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ প্রাণীকে খড়-ঘাস খাওয়াবে, তার বিনিময়ে সে প্রাণীর দুধ খাবে বা তার পিঠে আরোহণ করবে (ছহীহ বুখারী, হা/২৫১২; মিশকাত, হা/২৮৮৬)। খরচের চেয়ে বেশি উপকার গ্রহণ করলে তা সূদ বলে গণ্য হবে। দুগ্ধদানকারী বকরী বন্ধক গ্রহণকারী সম্পর্কে ইবরাহীম নাখাঈ বলেন,شَرِبَ الْمُرْتَهِنُ مِنْ لَبَنِهَا بِقَدْرِ ثَمَنِ عَلَفِهَا فَإِنِ اسْتَفْضَلَ مِنَ اللَّبَنِ بَعْدَ ثَمَنِ الْعَلَفِ فَهُوَ رَبًّا ‘সে তার খড়-ঘাসের খরচ সমপরিমাণ দুধ পান করবে। যদি খড়-ঘাসের মূল্যের চেয়ে বেশি দুধ গ্রহণ করে, তাহলে তা সূদ হবে’ (ফাতহুল বারী, ৫/১৪৪; নায়লুল আওত্বার, ৫/২৭৯; তুহফাতুল আহওয়াযী, ৪/৩৮৭)। তাই বন্ধকে নেওয়া জমিতে উৎপাদিত সম্পূর্ণ ফসল ভোগ করা হারাম। এই ফসল খেয়ে ইবাদত কবুল হবে না (ছহীহ মুসলিম, হা/১০১৫)। তবে যদি চাষাবাদের খরচ হিসাবে সমাজে প্রচলিত আধি বা বর্গা হিসাবে ফসল নিয়ে অবশিষ্ট ফসল জমির মূল মালিককে ফেরত দেয় কিংবা সেই ফসলের মূল্য সমপরিমাণ টাকা ঋণ থেকে মওকূফ করে দেয়, তাহলে তা হালাল হবে এবং তাতে ইবাদত কবুলে কোনো বাধা থাকবে না।
প্রশ্নকারী : সৌরভ
লালমনিরহাট।