কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (৩) : স্বামী শিরকী ও কুফরী আক্বীদার হলে স্ত্রী হিসেবে আমার করণীয় কী? উক্ত স্বামীর হেদায়াতের জন্য কী কী কাজ করতে পারি?

উত্তর : স্বামী যদি শিরকী বা কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী হয়, তাহলে স্ত্রীর করণীয় হলো তাকে সঠিক পথের দিশা দেওয়া এবং তার এ পথ ও মত যে ভুল তাকে তা বোঝানো এবং এ পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানানো। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজে ও স্বীয় পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও’ (আত-তাহরীম, ৬৬/৬)। তিনি আরো বলেন, ‘সময়ের কসম! নিশ্চয় সকল মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। তবে তারা নয় যারা ঈমান আনয়ন করে, সৎ আমল করে, একে অপরকে হক্বের উপদেশ দেয় এবং ধৈর্যের উপদেশ দেয়’ (আছর, ১০৩/১-৩)। এভাবে স্বামীকে বিনয়ের সাথে সৎ উপদেশ দিয়ে যেতে হবে। এ অবস্থায়ও তার হক্ব আদায়ের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। যেহেতু এখনো সে তার স্বামী। এরপরও যদি উপদেশ কোনো কাজে না আসে এবং সে আপন অবস্থায় অটল থাকে, তাহলে সে (স্ত্রী) চাইলে এ অবস্থায়ও তার সাথে সংসার করতে পারে বা চাইলে তার কাছে খুলা তালাক্ব নিতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি তোমরা ভয় কর যে, দুইজনে আল্লাহর সীমারেখাগুলো রক্ষা করতে পারবে না, তাহলে উভয়ের কোনো গুনাহ হবে না স্ত্রী যার বিনিময়ে নিজকে মুক্ত করবে তার মাঝে’ (আল-বাক্বারা, ২/২২৯)। ইবনু আব্বাস রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, ছাবেত ইবনু কায়েসের স্ত্রী নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি ছাবেত ইবনু কায়েসের আচার-আচরণের অভিযোগ করছি না; তবে আমি ইসলামের মধ্যে থেকে তার অবাধ্য হওয়া অপছন্দ করছি। তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি তাকে তার বাগান ফেরত দিতে চাচ্ছ? সে বলল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘ছাবেত! তুমি তোমার বাগান ফিরিয়ে নাও এবং তাকে এক তালাক দাও’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫২৭৩; ইবনু মাজাহ, হা/২০৫৬)। উল্লেখ্য যে, স্বামী-স্ত্রীর কোনো একজন যদি দ্বীন ইসলামের কোনো বিধানকে অস্বীকারবশত মুরতাদ হয়ে যায়, তাহলে তার সাথে ঘর সংসার করা কোনো মুসলিম নর-নারীর জন্য বৈধ হবে না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা (মুমিন নারী) তাদের জন্য (কাফেরদের জন্য) বৈধ হবে না এবং তারা কাফেররা ‍মুমিন নারীদের জন্য হালাল হবে না’ (সূরা মুমতাহিনা, ৬০/১১)। তিনি বলেন, ‘তোমরা মেয়েদের মুশরিকের সাথে বিবাহ দিও না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনয়ন করে’ (আল-বাক্বারা, ২/২২১)।

প্রশ্নকারী : আবূ সাঈদ সিনান

ডিমলা, নীলফামারী।


Magazine