গুনাহ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার একমাত্র কারণ। পৃথিবীতে এমন কিছু গুনাহ রয়েছে, যা ক্ষমার অযোগ্য। আবার কিছু গুনাহ আছে, যেগুলো খালেছভাবে তওবা করলে আল্লাহ ক্ষমাও করতে পারেন। বক্ষ্যমান প্রবন্ধে আমরা পর্যায়ক্রমে এমন কিছু গুনাহ নিয়ে আলোচনা করব, যা কাবীরা গুনাহ হিসেবে পরিগণিত।
(১) শিরক : এটা এমন একটি পাপ, যার কোনো ক্ষমা নেই। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন,وَإِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ ‘স্মরণ করুন! যখন লুক্বমান তার ছেলেকে নছীহত করে বলেছেন, হে বৎস! আল্লাহর সাথে কোনো শিরক করো না। শিরক হচ্ছে অবশ্যই বিরাট যুলম’ (লুকমান,৩১/১৩)।
অন্য গুনাহ আল্লাহর কাছে তওবা করলে মাফ হতে পারে; কিন্তু শিরকের গুনাহ মাফ হবে না।
(২) আল্লাহর প্রতি কুধারণা রাখা : আল্লাহ তাআলা বলেন, قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالْإِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَنْ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَأَنْ تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ ‘বলুন! আমার প্রতিপালক অবশ্যই প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা, পাপ, অন্যায়, বিরোধিতা, আল্লাহর অংশীদার স্থির করা যে ব্যাপারে তিনি কোনো প্রমাণ নাযিল করেননি, আর আল্লাহ সম্পর্কে তোমাদের অজ্ঞতাপ্রসূত কথাবার্তা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন’ (আল-আ‘রাফ, ৭/৩৩)।
(৩) মুসলিমের প্রতি কুধারণা রাখা : আল্লাহ তাআলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ ‘হে মুমিনগণ! তোমরা অধিক ধারণা হতে বিরত থাকো। কতক ধারণা পাপের অন্তর্ভুক্ত। তোমরা অন্যের দোষ খোঁজাখুঁজি করো না, একে অন্যের অনুপস্থিতিতে দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করো না। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো সেটাকে ঘৃণাই করে থাকো। আল্লাহকে ভয় করো, আল্লাহ খুব বেশি তওবা কবুলকারী, অতি দয়ালু’ (আল-হুজুরাত, ৪৯/১২)।
(৪) আল্লাহর আযাব থেকে নিজেকে নিরাপদ ভাবা : আল্লাহ তাআলা বলেছেন,وَيَا آدَمُ اسْكُنْ أَنْتَ وَزَوْجُكَ الْجَنَّةَ فَكُلَا مِنْ حَيْثُ شِئْتُمَا وَلَا تَقْرَبَا هَذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ الظَّالِمِينَ ‘আর হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বাস করতে থাকো, দুজনে যা পছন্দ হয়, খাও আর এই গাছের কাছে যেয়ো না, তাহলে যালেমদের দলে শামিল হয়ে যাবে’ (আল-আ‘রাফ, ৭/১৯)।
(৫) আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া : আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا بَنِيَّ اذْهَبُوا فَتَحَسَّسُوا مِنْ يُوسُفَ وَأَخِيهِ وَلَا تَيْأَسُوا مِنْ رَوْحِ اللَّهِ إِنَّهُ لَا يَيْأَسُ مِنْ رَوْحِ اللَّهِ إِلَّا الْقَوْمُ الْكَافِرُونَ ‘হে আমার ছেলেরা! তোমরা যাও, গিয়ে ইউসুফ আর তার ভাইয়ের খোঁজখবর নাও; আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। কেননা কাফের সম্প্রদায় ছাড়া আল্লাহর রহমত হতে কেউ নিরাশ হয় না’ (ইউসুফ, ১২/৮৭)।
(৬) প্রাণ হত্যা করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছাকৃত হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম। যাতে সে স্থায়ীভাবে থাকবে, তার উপর আল্লাহর ক্রোধ ও অভিসম্পাত। আল্লাহ তার জন্য মহাশাস্তি নির্দিষ্ট করে রেখেছেন’ (আন-নিসা, ৪/৯৩)।
(৭) অপমান ও অপদস্থ করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে ঠাট্টা-বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর নারীরা যেন অন্য নারীদেরকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারিণীদের চেয়ে উত্তম। তোমরা একে অন্যের নিন্দা করো না, একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমান গ্রহণের পর (ঈমানের আগে কৃত অপরাধকে যা মনে করিয়ে দেয় সেই) মন্দ নাম কতই না মন্দ! (এসব হতে) যারা তওবা না করে, তারাই যালেম’ (আল-হুজুরাত, ৪৯/১১)।
(৮) চোগলখোরি করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَةٍ ‘দুর্ভোগ এমন মানুষের জন্য যে (সামনাসামনি) মানুষকে নিন্দা করে আর (অসাক্ষাতে) দুর্নাম করে’ (আল-হুমাযাহ, ১০৪/১)।
(৯) সত্য প্রত্যাখ্যান করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ وَشَاقُّوا الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْهُدَى لَنْ يَضُرُّوا اللَّهَ شَيْئًا وَسَيُحْبِطُ أَعْمَالَهُمْ ‘যারা কুফরী করে আর আল্লাহর পথে চলতে বাধা সৃষ্টি করে, আর তাদের নিকট সত্য পথ স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও রাসূলের বিরোধিতা করে, তারা আল্লাহর কোনোই ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ তাদের যাবতীয় আমল নষ্ট করে দিবেন’ (মুহাম্মাদ, ৪৭/৩২)।
(১০) মূর্তি বা ছবি তৈরি করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُهِينًا ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশপ্ত করেছেন। আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক শাস্তি’ (আল-আহযাব, ৩৩/৫৭)।
(১১) জুয়া খেলা : আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ‘হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া আর মূর্তি ও ভাগ্য নির্ধারক তির ঘৃণিত শয়তানী কাজ, তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো’ (আল-মায়েদা, ৫/৯০)।
(১২) লটারি খেলা : আল্লাহ তাআলা বলেন,إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ ‘মদ আর জুয়ার মাধ্যমে শয়তান তো চায় তোমাদের মাঝে শত্রুতা আর বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে, আল্লাহর স্মরণ আর ছালাত থেকে তোমাদেরকে বাধা দিতে। কাজেই তোমরা কি এসব থেকে বিরত থাকবে?’ (আল-মায়েদা, ৫/৯১)।
(১৩) আমানতের খেয়ানত করা : আল্লাহ তাআলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَخُونُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ وَتَخُونُوا أَمَانَاتِكُمْ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ ‘হে মুমিনগণ! তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করো না, আর যে বিষয়ে তোমরা আমানতপ্রাপ্ত হয়েছো, তাতেও বিশ্বাস ভঙ্গ করো না’ (আল-আনফাল, ৮/২৭)।
(১৪) ঘুষ খাওয়া : মহান আল্লাহ বলেন,وَلَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوا بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوا فَرِيقًا مِنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالْإِثْمِ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ ‘তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধনসম্পত্তির কিছু অংশ জেনে-বুঝে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারককে উৎকোচ দিয়ো না’ (আল-বাক্বারা, ২/১৮৮)।
(১৫) সূদ খাওয়া : আল্লাহ তাআলা বলেন,الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَى فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ وَمَنْ عَادَ فَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ ‘যারা সূদ খায়, তারা সেই লোকের মতো দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা বেহুঁশ করে দেয়, এ শাস্তি এজন্য যে, তারা বলে, ক্রয়-বিক্রয় সূদের মতোই; অথচ ব্যবসাকে আল্লাহ হালাল করেছেন এবং সূদকে করেছেন হারাম। সুতরাং যার নিকট তার প্রতিপালকের উপদেশবাণী পৌঁছল এবং সে (সুদ থেকে) বিরত হলো, পূর্বে যা (সূদের আদানপ্রদান) হয়ে গেছে, তা তারই (উপর বর্তাবে)। আর যে আবার আরম্ভ করবে, তারাই হবে অগ্নির বাসিন্দা, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে’ (আল-বাক্বারা, ২/২৭৫)।
(১৬) সাক্ষ্য গোপন করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,وَلَا تَكْتُمُوا الشَّهَادَةَ وَمَنْ يَكْتُمْهَا فَإِنَّهُ آثِمٌ قَلْبُهُ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ ‘তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না, যে ব্যক্তি তা গোপন করে, তার অন্তর পাপী। তোমরা যা করো আল্লাহ সে সম্পর্কে বিশেষভাবে অবহিত’ (আল-বাক্বারা, ২/২৮৩)।
(১৭) পুরুষের গোড়ালির নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা : আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآتِكُمْ وَرِيشًا وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ ذَلِكَ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ ‘হে আদম সন্তান! আমি তোমাদেরকে পোশাক-পরিচ্ছদ দিয়েছি তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করার জন্য এবং শোভাবর্ধনের জন্য। আর তাক্বওয়ার পোশাক হচ্ছে সর্বোত্তম পোশাক। ওটা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে’ (আল-আ‘রাফ, ৭/২৬)।
(১৮) সময় পার করে ছালাত আদায় করা : আল্লাহ তাআলা বলেন, الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ ‘যারা নিজেদের ছালাতের ব্যাপারে উদাসীন’ (আল-মাঊন, ১০৭/৫)।
(১৯) যাকাত না দেওয়া : আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ كَثِيرًا مِنَ الْأَحْبَارِ وَالرُّهْبَانِ لَيَأْكُلُونَ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَيَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ ‘হে ঈমানদারগণ! অবশ্যই আলেম ও দরবেশদের অনেকেই ভুয়া কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষের সম্পদ গ্রাস করে থাকে আর আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে। যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে আর আল্লাহর পথে তা ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন’ (আত-তওবা, ৯/৩৪)।
(২০) হজ্জ না করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ ‘আল্লাহর জন্য উক্ত ঘরের হজ্জ করা লোকদের উপর আবশ্যক, যার সে পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য আছে এবং যে ব্যক্তি অস্বীকার করবে, (সে জেনে রাখুক) নিঃসন্দেহে আল্লাহ বিশ্বজাহানের মুখাপেক্ষী নন’ (আলে ইমরান, ৩/৯৭)।
(২১) জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوهُمُ الْأَدْبَارَ ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা বিশাল বাহিনী নিয়ে কাফেরদের মুখোমুখি হবে, তখন তাদের থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো না’ (আল-আনফাল, ৮/১৫)।
(২২) সামর্থ্য থাকতে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজেবাধা না দেওয়া : আল্লাহ তাআলা বলেন,كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَنْ مُنْكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ ‘তারা যে অন্যায় কাজ করেছিল, তা হতে একে অপরকে নিষেধ করত না; বাস্তবিকই তারা যা করত তা ছিল অত্যন্ত গর্হিত কাজ’! (আল-মায়েদা, ৫/৭৯)।
(২৩) ইলম অনুযায়ী আমল না করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ - كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللَّهِ أَنْ تَقُولُوا مَا لَا تَفْعَلُونَ ‘হে মুমিনগণ! তোমরা এমন কথা কেন বলো, যা তোমরা করো না। আল্লাহর দৃষ্টিতে এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ব্যাপার যে, তোমরা এমন কথা বলবে যা তোমরা করো না’ (আছ-ছফ, ৬১/২-৩)।
(২৪) ব্যভিচার করা : আল্লাহ তাআলা বলেন,وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا ‘আর তোমরা যেনা-ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না, তা হচ্ছে অশ্লীল কাজ আর অতি জঘন্য পথ’ (আল-ইসরা, ১৭/৩২)।
পরিশেষে বলা যায়, উপরিউক্ত শিরোনামে বর্ণিত পাপগুলো অত্যন্ত গর্হিত পাপ। যে পাপগুলো আমাদেরকে পরকালে ভয়াবহ শাস্তির মুখোমুখি করবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে উক্ত পাপগুলো থেকে বেঁচে থেকে তাঁর প্রিয়ভাজন বান্দা হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!
মারুফ ইসলাম
শিক্ষার্থী, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, পবা, রাজশাহী।