কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

‘ত্রান্সজেন্দার’ ও প্রশ্নমালা

post title will place here

[‘ত্রান্সজেন্দার’ বানান ইচ্ছে করেই ভুল রাখলাম, কারণ পাঠকদের বলে দেওয়ার সম্ভবত দরকার নেই। তারা ভালোই জানেন কেন?]

এ বিষয় নিয়ে অনেক দিন ধরেই ভাবছি লিখব। তবে সমস্যা হচ্ছে যথাযথভাবে না জেনে লিখতে চাই না। তাই আজ কিছু জিজ্ঞাসাই তুলে ধরব কেবল।

[পাঠক দয়া করে বিভ্রান্ত হবেন না। এ বিষয়ে ইসলামের বিধান নিয়ে অনেক লেখাই নেটে পাবেন। এর মূল বিধান হচ্ছে হারাম। আমার মতে, এটা অনেক বেশিই মারাত্মক। একটা গোটা সমাজ বা জাতিই এর কারণে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ইসলামের বক্তব্য নিয়ে পরে কোনো লেখায় আলোচনা করব ইনশা-আল্লাহ।]

বি.দ্র. হিজড়া ও ত্রান্স এক নয়। অতএব পুরো লেখায় কেউ ত্রান্স বলতে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে বুঝবেন না। ইসলামে হিজড়াদের অধিকার ও বিধান স্বীকৃত ও সুস্পষ্ট।

[১]

‘ত্রান্সজেন্দার’ ইস্যুর সবচেয়ে কমন সংজ্ঞা হচ্ছে, কোনো পুরুষ নিজেকে নারী মনে করা কিংবা কোনো নারী নিজেকে পুরুষ মনে করা। পাঠক! মনে রাখবেন, এখানে অন্যতম মূল শব্দ (kআলাইহিস সালামy word) হচ্ছে ‘মনে করা’।

আমার সমস্যা এখানেই। আচ্ছা, কে নিজেকে কী মনে করল সেটা কি জানবার কোনো উপায় আছে? সাধারণত, বাহ্যিক বেশভূষা বা আকার-আকৃতি দেখে আমরা নারী-পুরুষ, এমনকি হিজড়াদের চিনতে পারি। কিন্তু এই ‘মনে করা’ সবাইকেই বিপদে ফেলে দিচ্ছে।

ধরে নিন, কেউ যদি সংসদে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, মাননীয় স্পিকার আপনি কি নর, না-কি নারী? তখন আম পাবলিক স্পিকার হয়ে গেলেও ঐ প্রশ্নকারীর কী হবে তা নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। এরূপ জিজ্ঞেস করাটা কিন্তু অযৌক্তিক নয়। কারণ সম্বোধন ও বক্তব্যের ক্ষেত্রে রাযিয়াল্লাহু আনহুমাআলাইহিস সালাম/sরাযিয়াল্লাহু আনহুমাআলাইহিস সালাম জানাটা জরুরী। এক্ষেত্রে কেউ নিজে থেকে না জানালে তাকে জিজ্ঞেস করাটাই তো নিয়ম।

কিংবা ধরুন, বাসে করে যাচ্ছি। কোনো একজন জোয়ান মর্দ শ্মশ্রুমণ্ডিত পুরুষ মহিলা সিটে বসে রইল। শত মহিলা দাঁড়িয়ে থাকলেও সে নির্বিকারভাবে বসা। কারণ সে মনে মনে নারী। এমতাবস্থায় জনগণ কিছুটা উত্তমমধ্যম দিলে এর দায়ভার কার?

কিংবা বাসের সেই পুরুষের দেহে আটকে থাকা নারীকে যদি বলি, ‘ভাই! একটু চাপেন’। আর তাতে যদি উনি মনে মনে আহত হন সেটা কার দোষ? উনার শরীরের না-কি আমার চোখের?

আবার এও হতে পারে। দীর্ঘক্ষণের জ্যামে বাসে দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে নিজেকে মহিলা ভাবতে শুরু করে দিলাম। সাথে সাথে সিটের আবদার। তারপর বাস থেকে নেমেই আবার পুরুষ হয়ে গেলাম। সম্ভব? প্রিয় পাঠক! কী বলেন?

[২]

প্রিয় ভাই! বিভ্রান্ত হবেন না। এসব কল্পিত গল্প আপনারা আমার চাইতে অনেক ভালো লিখতে পারবেন। কিন্তু গল্প হলেও এসব কিন্তু কিছু প্রশ্ন রেখে যায়।

() মানসিক এই ভেবে নেওয়ার প্রবণতার সিদ্ধান্ত কে নির্ধারণ করে দেবেন? চেয়ারম্যান, মেম্বার, না-কি ডিসি? কেউ একজনকে তো সিদ্ধান্ত দিতে হবে, যেহেতু সামাজিক পরিচিতির দোহাই দিয়েই এ কাজ করা হচ্ছে।

() ধরে নিলাম একজন ডিসি এসব সার্টিফিকেট দেবেন যে, অমুক আজ থেকে নারী। তো উনি কি সার্টিফিকেট গলায় ঝুলিয়ে বেড়াবেন যাতে মানুষ চিনতে পারে? নচেৎ উনি যেমন মহিলা সিটে বসে গণপিটুনির শিকার হতে পারেন, তেমনই পুরুষদের সুবিধাও যখনতখন নিয়ে নিতে পারেন।

পাশ্চাত্যে প্রথম যখন প্রফেসররা রাযিয়াল্লাহু আনহুমাআলাইহিস সালাম/রাযিয়াল্লাহু আনহুমাim বা sরাযিয়াল্লাহু আনহুমাআলাইহিস সালাম/রাযিয়াল্লাহু আনহুমাআলাইহিস সালামr লিখতেন, তখন ভাবতাম হয়তো নিজের পরিচয় প্রকাশের জন্য লিখছে। কারণ সেখানে কেবল নাম দিয়ে অনেক সময়ই নর-নারী বুঝা মুশকিল। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি এটা তো ত্রান্সজেন্দারদের কারণে, আর এর দ্বারা পরোক্ষভাবে তাদের সমর্থনই করা হচ্ছে। একসময় প্রফেসরদের মতো আমিও রাযিয়াল্লাহু আনহুমাআলাইহিস সালাম/রাযিয়াল্লাহু আনহুমাim লিখব ভেবেছিলাম। কিন্তু তওবা করছি, একাজ ভুলেও করা যাবে না।

অতএব, গলায় ঝুলানো ছাড়া বাহ্যিক আইডেন্টিফিকেশন হচ্ছে না। তবে বাকী সবাই যদি হোচিমিন এর মতো হন, তাহলে সমস্যা নেই। সেটা দেখেই বুঝা যাবে।

আশ্চর্য লাগে, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক আইডেন্টিটির কথা বলে ত্রান্সজেন্দারকে জায়েয করতে চাওয়া লোকগুলো তাদের কীভাবে আইডেন্টিফাই করবে, তারই কোনো গ্রহণযোগ্য সমাধান দিতে পারছে না।

() তৃতীয় প্রশ্ন হচ্ছে, চেয়ারম্যান বা ডিসি মহোদয়গণ কীসের ভিত্তিতে কাউকে ‘ত্রান্সজেন্দার’ ঘোষণা দেবেন। মেডিক্যাল টেস্ট? ড. সারোয়ার ভাই কিন্তু একথা প্রায় সব লেকচারেই বলেন।

সেটা কীভাবে করবেন যদি মনে মনে নিজেকে কিছু মনে করে? কারণ বায়োলজিক্যাল সমস্যায় মেডিক্যাল টেস্ট কাজে আসে। মনের চিকিৎসায় কীভাবে? যেখানে মানব মনই হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে দ্রুত পরিবর্তনশীল জিনিস।

কিছুদিন আগেও ‘ত্রান্সজেন্দার’ হতে গেলে সার্জারি বা হরমোনাল চেঞ্জ এর বিষয় ছিল। তাতে আইডেন্টিফিকেশন কিছুটা সহজ ছিল। আর ঘনঘন পরিবর্তনের বিষয় ছিল না। কিন্তু মনে মনে ভাবার বিষয়ই যখন প্রাধান্য পাচ্ছে, তখন এসব প্রশ্ন থেকেই যায়।

() কত দিন, কত সময় পর এসব আইডেন্টিটি চেঞ্জ করা যাবে? সকালে আমার মনে হলো আমি নারী, বিকেলে আবার পুরুষ। তখন চেয়ারম্যান বা ডিসির তো অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ার জোগাড় (যদি আইডেন্টিফিকেশন প্রদানের দায়িত্ব তাদের বা অন্য কারো হতে থাকে)। এমতাবস্থায় উনারা নিজেকে পাগল মনে করলেও কিছু করার নেই।

সত্যি বলতে কি, সকাল-বিকাল চেঞ্জ করতে পারলে অনেকেই এ নিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করতে পারে। যেমন, সকালে রোকেয়া হল, বিকেলে ছেলেদের এসএম হল আর সন্ধ্যায় ইডেনে। কর্তৃপক্ষ কী করবেন? বারবার সার্টিফিকেট পাল্টাবেন?

() আর যদি সার্টিফাই করার প্রয়োজনীয়তা বা ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। আগের রাজা-বাদশাহদের মুখের কথাই যেমন আইন ছিল, এর ফলে আমরা সবাই রাজা। আমাদের মনের কথাই আইন হয়ে যাবে।

ইসলামে হারাম ঘোষণা না থাকলে অনেক মানুষই যে এ ফায়দা নিত, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ মনোজগতের এ পরিবর্তন করা যাবে না বলে তো কোনো আইন নেই। ফলে শাস্তিও নেই। শুনেছিলাম, জার্মানীতে না-কি এক বছরে একবার মাত্র পরিবর্তনের আইন হয়েছে [আমি নিজে এমন আইন দেখিনি]। আর ইউকের Nরাযিয়াল্লাহু আনহুমাS তো একবার মাত্র সার্জারি বিনামূল্যে করবে। বাকী দায় নেওয়ার শক্তি বা সামর্থ্য এখনো কারো হয়নি। এটাতো সার্জারির ক্ষেত্রে, কিন্তু মনে মনে ভাবার ক্ষেত্রে এর সময়কাল বা পরিধি কত কে জানে?

ফলে যখন সুবিধা আমি নর, আর নারীতে যখন সুবিধা তখন আমি নারী। পাঠক! নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, যাদের ধর্মীয় সংশ্লিষ্টতা কম বা নেই, তারাই এ ‘ত্রান্স’-এর পক্ষে। কেন? সুবিধা নিতে তারাই যে পটু। ধর্মের চেতনা নেই, আর দেশে এ সংক্রান্ত আইনই নেই। তখন সুবিধা নিতে কে ঠেকায়?

() মানলাম, আমি নিজেকে ডিসি বা ভিসি এসব মনে করতে পারব না। কারণ এসব ব্যক্তিগত আইডেন্টিটির বিষয় না। তবে শ্বেতাঙ্গ বা কৃষ্ণাঙ্গ তো মনে করতে পারব। জেন্ডার যদি মনে করা দ্বারা চেঞ্জ করা যায়, তাহলে গায়ের কালার চেঞ্জ তো কোনো বিষয়ই না। সেক্ষেত্রে হোয়াইট সুপ্রিমেসীর কী হবে? কীভাবে bloody রাযিয়াল্লাহু আনহুoloআলাইহিমাস সালামrআলাইহিস সালামd বলা যাবে?

হয়তো ভাবছেন, এইতো একটা ইতিবাচক দিক পাওয়া গেল। পাঠক! এতে গ্যাঞ্জাম তো আরো বেশি লাগবে। সব কালো নিজেকে হোয়াইট ভাববে তা কেন ভাবছেন? তাছাড়া কোনো কৃষ্ণাঙ্গ যদি নিজেকে শ্বেতাঙ্গ ভাবে আর আপনি গালি দেন, তারপরের মারামারির দায়ভার কে নেবে?

[৩]

সুধী পাঠক! উপরের বক্তব্য খুবই শিশুসুলভ মনে হচ্ছে? আমার নিজের কাছেও তাই মনে হচ্ছে। কিন্তু কোনো উত্তর খুঁজে পাচ্ছি না।

‘ত্রান্সজেন্দার’ নিয়ে একটা দেশের আইন দেখলাম। কিন্তু তাতে এসবের কোনো উত্তর নেই। আছে কেবল তাদের অধিকার দিতে হবে, কীভাবে দিতে হবে, না দিলে কী হবে এসব হাবিজাবি। আমাদের খসড়াতেও সম্ভবত তা-ই আছে। দেখিনি, দেখতে পারিনি। যদি এসবের উত্তর না থাকে, তাহলে আমরা পাবলিকরা কীভাবে তাদের অধিকার দেব তাইত বুঝতে পারছি না।

দেখা গেল, তাগড়া এক মর্দকে ভাই (ত্রান্সজেন্দার) ডেকে নিজেই ফেঁসে গেলাম। কোনদিকে যে আইনে ধরা খেয়ে গেলাম বলতেই পারলাম না। কারণ ভাই তো দেখতে ভাইই। আর আমি তো মনের কারিগর নই। ফলে এমন ধরা আপনি আমি সবাই খেতে পারি।

আবার ধরা না খেলেও, খাওয়াতে তো পারি। যদি জরিমানা আমার পকেটে আসে বা আপনাকে ফাঁসানোর নিয়্যত থাকে, তবে ‘ত্রান্সজেন্দার’ হতে পারে মোক্ষম অস্ত্র।

[৪]

এবার বাস্তব কিছু সমস্যার কথা বলি।

() ধরুন শরীফা নিজেকে শরীফ বলে দাবি করে মসজিদে জামাআতের প্রথম কাতারে দাঁড়িয়ে গেল। আমরা কি করব তাকে বের করে দেব? কিন্তু আইনগত অধিকার বলে কথা। এমতাবস্থায় নিজেরা মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া ছাড়া আর তো কোনো উপায় দেখি না।

মনে রাখা ভালো, পুরুষ-মহিলা একসাথে দাঁড়ালে পুরুষের ছালাত বাতিল। এক্ষেত্রে ‘ত্রান্সজেন্দার’ যাই দাবি করুক, আল্লাহর আছে সে কিন্তু শরীফাই। এতে ছালাত যাবে আমাদের। ফলে মসজিদ ছেড়ে বের না হয়ে কি কোনো উপায় আছে?

() বিয়ের ক্ষেত্রে কী হবে? ‘ত্রান্স’ শরীফ [মূলত শরীফা] কি কোনো মাসুদ (স্যরি, একটা নাম উল্লেখ করলাম বুঝার সুবিধার্থে, মাসুদ নামের কেউ আশা করি মন খারাপ করবেন না) বিয়ে করবে? তাহলে কি আমাদের আইনানুযায়ী সমকামিতা (গে) হয়ে যায় না? কারণ আইনে তো সে শরীফ বা পুরুষ। অথচ সংবিধানে তা নিষেধ।

আবার ‘ত্রান্স’ শরীফা [মূলত শরীফ] যদি কোনো মাসুদাকে বিয়ে করে, তাহলে সেখানেও কি আমাদের আইনানুসারে সমকামিতা (লেসবিয়ান) হয়ে যায় না? তবে যদি ‘ত্রান্স’ শরীফ মাসুদাকে আর ‘ত্রান্স’ শরীফা মাসুদকে বিয়ে করে, তবে তো আদতেই সমকামিতা হবে।

সবচেয়ে হাস্যকর হলো, যদি একজন ত্রান্স আরেক ত্রান্সকে বিয়ে করে। যেমন ত্রান্স শরীফ (মূলত শরীফা) বিয়ে করল ত্রান্স মাসুদাকে (মূলত মাসুদ)। এমন বিয়েতে পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো গর্ভধারণ করেও আইনানুযায়ী বাবা হলো শরীফ [মূলত শরীফা], আর গর্ভধারণ না করে মা হলো একজন মাসুদা (মূলত মাসুদ)। পাঠক! এমন হলে, আমার আন্তরিক সহমর্মিতা থাকবে বাচ্চাটার প্রতি। কাকে কি ডাকবে সে কনফিউশন সম্ভবত সে জীবনেও দূর করতে পারবে না।

সুধী পাঠক! এই আলোচনা কিছুটা গোলমেলে লাগলেও কিছু করার নেই। আমি এর চাইতে সহজে লিখতে পারব না। এটুকু [উপরের খ অংশ] লিখতেই আমার স্বাভাবিকের চেয়ে তিন গুণ সময় বেশি লেগেছে। আমি নিজেই কনফিউজড হয়ে পড়েছিলাম। এখনো যে পুরোপুরি নিশ্চিত তাও বলতে পারছি না। এবার বাস্তব জীবনের কনফিউশন কেমন হবে আল্লাহু আ‘লাম।

() উত্তরাধিকার আইন বণ্টন নিয়েও মারামারির সমূহ সম্ভাবনা। হোচিমিনের ক্ষেত্রেও সেরকমটাই দেখেছি ফেবুতে। এর সত্যাসত্য জানি না। তবে এটি সত্য না হলেও, এমন সম্ভাবনা আসবেই। অর্থাৎ নিজেকে নারী দাবি করলেও উত্তরাধিকার বণ্টনে সে পুরুষের মতো ভাগ চায়। কারণ সে বায়োলজিক্যালি পুরুষ।

হয়তো বলবেন, দেশীয় আইন যা বলবে তা-ই। আইন যদি ত্রান্সের রূপান্তরকে অস্বীকার করে পুরাতন জৈবিক পরিচয়কেই সম্পত্তি বণ্টনে প্রাধান্য দেয়, তবে কেন ত্রান্সের নাটক করা? আর যদি সম্পদের ক্ষেত্রে আপনি নারী দাবি করেও পুরুষই থাকতে চান, তাহলে বুঝা যায় আপনি সুবিধাবাদী। আর যদি নারী দাবি করে নারীর অংশই আইনের মাধ্যমে প্রাপ্ত হন, তা মেনে নিবেন কি?

কিন্তু যদি আইন হয়, ‘ত্রান্স’ হিসেবে যা নির্ধারিত হবে সে অনুযায়ীই সম্পত্তি প্রাপ্ত হবে, তবে মেয়েরা অধিক সম্পত্তির লোভে যে ছেলে হিসেবে দাবি করবে না, তার গ্যারান্টি কে দেবে?

() ধর্মীয় ক্ষেত্রে এসব সমস্যা আরও মারাত্মক। জন্ম থেকে নিয়ে মৃত্যু, এমনকি মরার পরে কাফন-দাফন, গোসল ইত্যাদিসহ, সব ক্ষেত্রেই সমস্যা হবে।

সবচেয়ে বড় দুইটি সমস্যার একটি হলো— পর্দা রক্ষা। ত্রান্সদের আমাদের নারী আর পুরুষরা কীভাবে রক্ষা পাবে? সম্প্রতি চালু হওয়া মেট্রো রেলের মহিলা কামরায় ‘ত্রান্স’ উঠে গেলে কারই বা কী করার আছে। দ্বিতীয় হলো— সমকামিতা ও অশ্লীলতার।

দুইটাই হারাম। ইসলামের মূল সংস্কৃতির সাথে জড়িত। ফলে এটা যদি আদতেই আমাদের দেশে জেঁকে বসে, তবে ধর্মীয় মূল্যবোধ ধ্বংসের জন্য ইসলামবিদ্বেষীদের আর কিছু না করলেও চলবে। যা করবার ত্রান্সরাই করবে।

[৫]

জানি না উপরের জিজ্ঞাসার উত্তর কী? কেউ যদি জানেন তাহলে বলবেন নিশ্চয়ই, বিশেষজ্ঞ কেউ বললে আরো ভালো হয়। আমি জানি, সারা দেশের মানুষেরও প্রায় একই জিজ্ঞাসা।

সুধী পাঠক! এসব জিজ্ঞাসা কেবল ত্রান্সদের কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের কমন কৌতূহল। এসবের যদি কোনো সদুত্তর না থাকে, তবে ‘ত্রান্স’ ইস্যু তো যৌক্তিকভাবেই অযৌক্তিক।

মনে রাখবেন, ইসলামী বিধান মতে ত্রান্সদের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এসব হারাম। আপনি যদি সদুত্তর দিতেও পারেন, তবুও আমরা একে হারামই বলব। আমৃত্যু বিরোধিতাও করে যাব। কারণ ঈমান, ইসলামই আমাদের কাছে সবার আগে। এ নিয়েই আমরা মহীয়ানের সাথে দেখা করতে চাই। ‘ত্রান্স’ ইস্যু হয়তো প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মাধ্যমে আমাদের গুনাহসমূহ মুছে ফেলার একটা সুযোগ এনে দিয়েছে।

পাঠক! কী করবেন, নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিন। ইসলামের পক্ষে থাকলে আওয়াজ তুলুন, নিদেনপক্ষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন। হয়তো আপনাকে দেখে একজন হলেও ইসলামের পক্ষে দাঁড়াবে।

যদি মনে করেন, কী লাভ নিজের অবস্থা স্পষ্ট করে। তবে কিন্তু আপনি যতই মনে মনে ইসলামের পক্ষে থাকুন, আপনার কার্যকলাপ কিন্তু ইসলামের মূল শিক্ষার বিপরীতই কাজ করল। এমন অবস্থান নিয়ে দুনিয়া ও আখেরাত দুইটাই হারানো ছাড়া আপনার আর কিছুই করার থাকবে না।

বিভিন্ন সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ন্যূনতম এটুকু তো লেখা বা বলাই যায়, ‘আমি ইসলামের পক্ষে, ট্রান্সদের বিপক্ষে’। তাও অবস্থান স্পষ্ট করুন। ক্বিয়ামতে এটিও হতে পারে আপনার পক্ষের দলীল।

মুস্তফা মনজুর

 সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Magazine