উত্তর: শুধুমাত্র নিয়তের কারণে কোনো নির্দিষ্ট খাতে দান করা আবশ্যক হয়ে যায় না। ফলে কোনো ব্যক্তি কোনো স্থানে বা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে দান করার মনস্থ করলে সেটি অন্যত্র দান করা বৈধ। কেননা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় ছাহাবায়ে কেরাম ছাদাকা করার মনস্থ করতেন এবং রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে পরামর্শ করতেন, তখন রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে অন্য কোনো কল্যাণকর কাজে সেটি দান করার জন্য উৎসাহিত করলে তারা সেটি পালন করতেন। যেমনটি আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, মদীনার আনছারদের মধ্যে আবূ তালহা রাযিয়াল্লাহু আনহু সবচেয়ে বেশি খেজুর বাগানের মালিক ছিলেন। মসজিদে নববীর নিকটবর্তী বায়রুহা নামক বাগানটি তার নিকট অধিক প্রিয় ছিল। আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বাগানে প্রবেশ করে এর সুপেয় পানি পান করতেন। আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলো, ‘তোমরা যা ভালোবাস তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পুণ্য লাভ করবে না’ (আলে ইমরান, ৩/৯২), তখন আবূ তালহা রাযিয়াল্লাহু আনহু আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা যা ভালোবাস তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পুণ্য লাভ করবে না’ আর বায়রুহা বাগানটি আমার কাছে অধিক প্রিয়। এটি আল্লাহর নামে ছাদাকা করা হলো, আমি এর কল্যাণ কামনা করি এবং তা আল্লাহর নিকট আমার জন্য সঞ্চয়রূপে থাকবে। ফলে আপনি যাকে দান করা ভালো মনে করেন তাকে দান করুন। তখন আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমাকে ধন্যবাদ, এ হচ্ছে লাভজনক সম্পদ, এ হচ্ছে লাভজনক সম্পদ। তুমি যা বলেছ তা শুনলাম। আমি মনে করি, তোমার আপনজনদের মধ্যে তা বণ্টন করে দাও’। আবূ তালহা রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি তাই করব। অতঃপর তিনি তার আত্মীয়-স্বজন, আপন চাচার বংশধরের মধ্যে তা বণ্টন করে দিলেন (ছহীহ বুখারী, হা/২৬১৭)। আলোচ্য হাদীছে উল্লেখিত হয়েছে যে, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরামর্শে আবূ তালহা রাযিয়াল্লাহু আনহু তার নিয়তের পরিবর্তন করে দান অন্যত্র বণ্টন করেছিলেন। সুতরাং প্রশ্নোল্লিখিত অবস্থায় নিয়ত পরিবর্তন করে জমি বিক্রয় করে অন্য মসজিদের নির্মাণ কাজে ব্যয় করা বা অন্যত্র জমি ক্রয় করা বৈধ হবে এবং এতে ছওয়াবের ক্ষেত্রে কোনো তারতম্য হবে না।