কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (৩৭): বাংলাদেশের সামরিক ঘাঁটি বা স্থাপনা পাহারা দেওয়া কি ছওয়াবের কাজ? অনেক সময় দায়িত্ব পালনকালে জুমআর ছালাত জামাআতে আদায় করার সুযোগ থাকে না, এরূপ হলে করণীয় কী?

উত্তর: ‍ইসলামী রাষ্ট্রের সীমান্ত বা সামরিক ঘাঁটি পাহারা দেওয়া ‘আল্লাহর পথে জিহাদ করা’ হিসেবে গণ্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা (আনুগত্যের কাজে) ধৈর্য ধারণ করো, শত্রুর মোকাবেলায় ধৈর্য রাখ এবং শত্রুর বিরুদ্ধে পাহারায় থাক। আর আল্লাহকে ভয় করো, তাহলে তোমরা সফলকাম হতে পারবে’ (আলে ইমরান, ৩/২০০)। সাহল ইবনু সা‘দ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর রাস্তায় একদিন পাহারায় থাকা দুনিয়া ও তন্মধ্যে যা কিছু তার চেয়ে উত্তম...’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৮৯২)। তাছাড়া জীবন রক্ষা, সম্পদ রক্ষা, দেশ ও দেশের অধিবাসীদের বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য সীমান্ত পাহারা দেওয়া কিংবা সামরিক এলাকার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা নিঃসন্দেহে শারঈ জিহাদের অন্তর্ভুক্ত। সাঈদ ইবনু যায়েদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজ সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হলো, সে শহীদ। যে ব্যক্তি নিজ পরিবার রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হলো, সে শহীদ। যে ব্যক্তি নিজ রক্ত (জান) রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হলো, সে শহীদ। যে ব্যক্তি নিজের দ্বীন রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হলো, সে শহীদ’ (আবূ দাঊদ, হা/৪৭৭২)। বাংলাদেশে ইসলামী শাসনব্যবস্থা কায়েম না থাকলেও এদেশের অধিকাংশ মানুষই হৃদয়ে ইসলাম লালন করে এবং বহু মানুষ ইসলামের বিধিবিধান মেনে চলে। তাই কাফিরদের আগ্রাসন থেকে এই দেশ ও তার অধিবাসীদের নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন বাহিনী বা যে কেউ পাহারায় নিয়োজিত থাকলে সেটাও জিহাদ বলে গণ্য হবে। তবে এর জন্য বিশেষভাবে শর্ত হলো- ১. নিছক চাকরির নিয়ত না করে মুসলিম দেশ পাহারার নিয়ত রাখা। ২. নিজের মধ্যে ইসলামের বিধি-বিধান ও রীতিসমূহ ধারণ করা। ৩. চাকরির সুযোগে অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেওয়া। ৪. উক্ত চাকরি ছালাত, ছিয়াম, কুরআন-হাদীছ ও তৎসংশ্লিষ্ট বই-পুস্তক পাঠ, দাড়ি রাখাসহ ইসলামের আনুষঙ্গিক অনুশাসন মেনে চলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হওয়া। তবে সফর বা নিরাপত্তাজনিত কারণে ছালাতের জামাআতে শরীক হতে না পারলেও অসুবিধা হবে না, ইনশা-আল্লাহ। কিন্তু নিরাপত্তার প্রশ্ন না থাকলে জুমআর জামাআতে অবশ্যই শরীক হতে হবে। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অলসতাবশত তিন জুমআ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন’ (আবূ দাঊদ, হা/১০৫২)।

প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ

রাজশাহী।


Magazine