উত্তর: প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী স্ত্রী এক তালাক হয়েছে। কেননা একসাথে এক তালাকের বেশি তালাক কার্যকর হয় না। তালাকের সঠিক পদ্ধতি হলো স্ত্রী পবিত্র থাকাবস্থায় শুধু এক তালাক দিয়ে রেখে দেওয়া। তিন কুরু (মোটামুটি তিন মাস) অতিক্রান্ত হলে স্বাভাবিকভাবেই স্ত্রী বিচ্ছিন্ন (বায়েন) হয়ে যাবে। তখন উক্ত মহিলা অন্য কোথাও বিয়ে বসতে পারে। আবার স্বামী চাইলে নতুন বিবাহের মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু যদি কেউ একসঙ্গে তিন তালাক দিয়ে ফেলে, তাহলে তা তিন তালাক বলে গণ্য হবে না। বরং এক তালাক বলেই গণ্য হবে। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রযিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, আবু রুকানা নামে একজন লোক তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রীকে তার কাছে ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, এটা এক তালাক হয়েছে (মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৮৭ হাদীছ ছহীহ; বায়হাকী, হা/১৪৭৬৪)। তাই কেউ যদি স্ত্রীকে একসাথে দুই বা তিন তালাক দিয়ে দেয় তাহলে, সেটা এক তালাক বলে গণ্য হবে। আর উক্ত স্বামী তার স্ত্রীকে মোটামুটি তিন মাসের মধ্যে নতুনভাবে বিবাহ পড়ানো ছাড়াই ফিরিয়ে নিতে পারবে। যদি তিন মাস অতিক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে, নতুনভাবে মোহরানা ধার্য করে বিবাহ পড়ানোর মাধ্যমে ফিরিয়ে নিতে পারবে। সুতরাং আপনি যেহেতু স্ত্রীকে এক মজলিসে তিন তালাক প্রদান করেছেন সেহেতু তা এক তালাক হিসাবে গণ্য। আর তিন মাস অতিক্রম হওয়ার পূর্বেই স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছেন এবং সংসার করছেন তাই আপনাদের সংসার জীবন শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ। এর জন্য নতুন করে বিবাহ পড়ানোর প্রয়োজন নেই। উল্লেখ্য যে, সমাজে প্রচলিত চুক্তিভিত্তিক ‘হালালা বা হিল্লা’ পদ্ধতি সম্পূর্ণ শরীয়ত পরীপন্থী হারাম কাজ। উক্ববা ইবনু আমের রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের ভাড়াটে পাঁঠা সম্পর্কে জানাবো না? সেই পাঁঠা হলো হিল্লাকারী। আর আল্লাহ হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয়কে অভিশাপ করেছেন’ (ইবনু মাজাহ, হা/১৯৩৬)। তাই এমন পথ অবলম্বন করা হতে বিরত থাকা বাঞ্চনীয়।
প্রশ্নকারী : আব্দুর রহমান
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা।