কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ঈমানের আলো ও মুনাফেক্বীর অন্ধকার (পর্ব-৩)

post title will place here

(১৬) বিশুদ্ধ ঈমান সন্দেহ ও সংশয় দূর করে এবং সমস্ত সন্দেহ প্রতিরোধ ও ছিন্ন করে। যেগুলো অধিকাংশ মানুষের সামনে এসে তাদের দ্বীনের মধ্যে ক্ষতি করে। মানুষ ও জিন শয়তান এবং কুমন্ত্রণা দানকারী আত্মা যে সংশয় ঢুকিয়ে দেয়, সে সংশয় রোগের কোনো ঔষধ নেই ঈমান বাস্তবায়ন ছাড়া। আল্লাহ তাআলা বলেন,إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا ‘মুমিন কেবল তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারপর সন্দেহ পোষণ করেনি’ (আল-হুজুরাত, ৪৯/১৫)। এই কুমন্ত্রণাগুলোর প্রতিকার চারটি বিষয়ের মাধ্যমে হয়:

(ক) এই শয়তানী কুমন্ত্রণাগুলো থেকে বিরত থাকা।

(খ) এই কুমন্ত্রণাগুলো যে ঢুকিয়ে দিয়েছে, তার থেকে আশ্রয় চাওয়া। সে হলো শয়তান।

(গ) শক্তভাবে ঈমান ধারণ করা। সুতরাং সে বলবে, آمَنْتُ بِاللهِ ‘আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি’।

(ঘ) এগুলোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা থেকে বিরত থাকা’।[1]

(১৭) আল্লাহর প্রতি ঈমান মুমিনদের আশ্রয়স্থল, তাদের কাছে যা আসে তার সর্বক্ষেত্রে। যেমন আনন্দ, দুঃখ, ভয়, নিরাপত্তা, আনুগত্য, অবাদ্ধতা আরো অন্যান্য বিষয়, যেগুলো প্রতিটি মানুষের জীবনে অনিবার্য। সুতরাং পছন্দনীয় বিষয় ও আনন্দের সময় তারা ঈমানের আশ্রয় নেয়। তাই তারা আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান গায় এবং নেয়ামতরাজিকে পছন্দনীয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করে। একইভাবে কষ্ট ও দুশ্চিন্তার সময় কয়েক দিক থেকে ঈমানের আশ্রয় নেয়: তারা তাদের ঈমান ও ঈমানের মাধুর্যে বিনোদিত হয় এবং এর উপর যে ছওয়াব সাব্যস্ত হয় তা নিয়ে প্রশান্ত হয়। তারা দুঃখ-চিন্তার মোকাবিলা করে প্রশান্ত অন্তর ও (হায়াতে ত্বায়্যেবা) পবিত্র জীবনে প্রতাবর্তনের মাধ্যমে, যা দুঃখ-চিন্তাকে দূর করে। ভয়ের সময় তারা ঈমানের আশ্রয় নেয়। ঈমানের কাছে প্রশান্তি পায় এবং এটা তাদের ঈমান, দৃঢ়তা, মযবূত ও সাহসিকতা বৃদ্ধি করে। তাদের নিকট আপতিত ভয় দূর হয়। ছাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا وَقَالُوا حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ - فَانْقَلَبُوا بِنِعْمَةٍ مِنَ اللهِ وَفَضْلٍ لَمْ يَمْسَسْهُمْ سُوءٌ وَاتَّبَعُوا رِضْوَانَ اللهِ وَاللهُ ذُو فَضْلٍ عَظِيمٍ ‘যাদেরকে মানুষেরা বলেছিল যে, নিশ্চয়ই লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে সমবেত হয়েছে। সুতরাং তাদেরকে ভয় করো। কিন্তু তা তাদের ঈমান বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তারা বলেছিল, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক! অতঃপর তারা ফিরে এসেছে আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত ও অনুগ্রহসহ। কোনো মন্দ তাদেরকে স্পর্শ করেনি এবং তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছিল। আর আল্লাহ মহাঅনুগ্রহশীল’ (আলে ইমরান, ৩/১৭৩-১৭৪)

(১৮) বিশুদ্ধ ঈমান বান্দাকে ধ্বংসাত্মক বিষয়মূহে পতিত হওয়া থেকে রক্ষা করে। আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,لاَ يَزْنِى الزَّانِى حِينَ يَزْنِى وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَسْرِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ ‘কোনো ব্যভিচারী মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোনো চোর মুমিন অবস্থায় চুরি করে না। কোনো মদ্যপায়ী মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না’।[2] আর এটা যার মধ্যে ঘটেছে, তা তার দুর্বল ঈমান, তার নূর (আলোর) বিলুপ্তি ও আল্লাহর প্রতি লজ্জাশীলতা চলে যাওয়ার কারণে। এটা স্পষ্ট জানা বিষয়। কারণ বিশুদ্ধ সত্য ঈমানের সাথে থাকে আল্লাহর প্রতি লজ্জাশীলতা, তাঁর প্রতি ভালোবাসা, এর ছওয়াবের দৃঢ় আশা, শাস্তির ভয় ও নূর (আলো) অর্জনের আকাঙ্ক্ষা। এই বিষয়গুলো ব্যক্তিকে প্রতিটি কল্যাণকর কাজের আদেশ দেয় এবং প্রতিটি অকল্যাণ থেকে বাধা দেয়।

(১৯) সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি দুই প্রকার। তারা হলো ঈমানদারগণ। আবূ মূসা আল-আশআরী রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,مَثَلُ الْمُؤْمِنِ الَّذِى يَقْرَأُ الْقُرْآنَ مَثَلُ الأُتْرُجَّةِ رِيحُهَا طَيِّبٌ وَطَعْمُهَا طَيِّبٌ وَمَثَلُ الْمُؤْمِنِ الَّذِى لاَ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ مَثَلُ التَّمْرَةِ لاَ رِيحَ لَهَا وَطَعْمُهَا حُلْوٌ وَمَثَلُ الْمُنَافِقِ الَّذِى يَقْرَأُ الْقُرْآنَ مَثَلُ الرَّيْحَانَةِ رِيحُهَا طَيِّبٌ وَطَعْمُهَا مُرٌّ وَمَثَلُ الْمُنَافِقِ الَّذِى لاَ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ كَمَثَلِ الْحَنْظَلَةِ لَيْسَ لَهَا رِيحٌ وَطَعْمُهَا مُرٌّ ‘যে মুমিন কুরআন মাজীদ পাঠ করে, তার উদাহরণ হলো কমলালেবু- যা স্বাদে ও গন্ধে উত্তম। আর যে মুমিন কুরআন মাজীদ পাঠ করে না, তার উদাহরণ হলো খেজুর- যার সুগন্ধ না থাকলেও স্বাদে মিষ্ট। আর যে মুনাফেক্ব কুরআন পাঠ করে, তার উদাহরণ হলো রায়হানা ফুল- যার সুগন্ধি আছে এবং স্বাদ তিক্ত। আর যে মুনাফেক্ব কুরআন পাঠ করে না, তার উদাহরণ হলো হানযালা (মাকাল)- যার কোনো সুগন্ধি নেই এবং স্বাদে খুব তিক্ত’।[3] সুতরাং মানুষ চার প্রকার:

প্রথম প্রকার : নিজের মধ্যে কল্যাণ আছে এবং তার কল্যাণ অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এটাই সর্বোত্তম প্রকার। এই প্রকার মুমিন, যে কুরআন শিখে, দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করে অতঃপর সে নিজের জন্য এবং অন্যের জন্য উপকারী হয়। যেখানেই থাকুক না কেন সে বরকতময়।

দ্বিতীয় প্রকার : নিজে ভালো, কল্যাণের অধিকারী। এই প্রকার মুমিনের কাছে এমন কোনো জ্ঞান থাকে না, যা অন্যের নিকট নিয়ে যাবে। এই দুই প্রকারের মুমিন সৃষ্টির সেরা। তাদের মধ্যে থাকা কল্যাণ তাদের অপূর্ণ ঈমানের দিকে ফিরে আসে এবং মুমিনদের অবস্থা অনুযায়ী তার উপকার অন্যের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে।

তৃতীয় প্রকার : যার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। কিন্তু তার ক্ষতি অন্যের দিকে ছড়ায় না।

চতুর্থ প্রকার : যার মধ্যে নিজের জন্য ও অন্যের জন্য অনিষ্টতা আছে। এটা হলো সবচাইতে নিকৃষ্ট প্রকার।

সুতরাং সমস্ত কল্যাণ ঈমান ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলির দিকে ফিরে আসে এবং অকল্যাণ ঈমান শূন্যতা ও ঈমানের বিপরীত বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার দিকে ফিরে আসে’।[4]

(২০) ঈমান যমীনে প্রতিনিধিত্ব এনে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَعَدَ اللهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُمْ مِنْ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا وَمَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে আল্লাহ তাদেরকে এ মর্মে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি নিশ্চিতভাবে তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব প্রদান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব প্রদান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য শক্তিশালী ও সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দ্বীনকে, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তিনি তাদের ভয়-ভীতি শান্তি-নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করে দিবেন। তারা আমারই ইবাদত করবে, আমার সাথে কোনো কিছুকে শরীক করবে না। আর এরপর যারা কুফরী করবে, তারাই ফাসেক্ব (পাপাচারী)’ (আন-নূর, ২৪/৫৫)

(২১) ঈমানের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাকে সহযোগিতা করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, وَكَانَ حَقًّا عَلَيْنَا نَصْرُ الْمُؤْمِنِينَ ‘আর মুমিনদের সাহায্য করা তো আমার কর্তব্য’ (আর-রূম, ৩০/৪৭)

(২২) ঈমান বান্দার জন্য সম্মান এনে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَلِلهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلَكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ ‘কিন্তু সকল মর্যাদা তো আল্লাহর, তাঁর রাসূলের ও মুমিনদের; কিন্তু মুনাফক্বরা তা জানে না’ (আল-মুনাফিকূন ৬৩/৮)

(২৩) ঈমান মুমিনদের উপর শত্রুদের আধিপত্যহীনতা এনে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَلَنْ يَجْعَلَ اللهُ لِلْكَافِرِينَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ سَبِيلًا ‘আর আল্লাহ কখনো মুমিনদের বিপক্ষে কাফেরদের জন্য পথ রাখবেন না’ (আন-নিসা, ৪/১৪১)

(২৪) পরিপূর্ণ নিরাপত্তা ও সঠিক পথ প্রাপ্তি। আল্লাহ তাআলা বলেন,الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ أُولَئِكَ لَهُمُ الْأَمْنُ وَهُمْ مُهْتَدُونَ ‘যারা ঈমান এনেছে এবং স্বীয় ঈমানকে যুলুমের সাথে সংমিশ্রণ করেনি, তাদের জন্যই নিরাপত্তা এবং তারাই হেদায়াতপ্রাপ্ত’ (আল-আনআম, ৬/৮২)

(২৫) মুমিনদের চেষ্টা-পরিশ্রম সংরক্ষিত। আল্লাহ তাআলা বলেন,إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ إِنَّا لَا نُضِيعُ أَجْرَ مَنْ أَحْسَنَ عَمَلًا ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, নিশ্চয়ই আমি কারো প্রতিদান নষ্ট করব না, যে সৎকর্ম করেছে’ (আল-কাহফ, ১৮/৩০)

(২৬) মুমিনদের ঈমান বৃদ্ধি। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَإِذَا مَا أُنْزِلَتْ سُورَةٌ فَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ أَيُّكُمْ زَادَتْهُ هَذِهِ إِيمَانًا فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا فَزَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَهُمْ يَسْتَبْشِرُونَ ‘আর যখনই কোন সূরা নাযিল করা হয়, তখন তাদের কেউ কেউ বলে, এটি তোমাদের কার ঈমান বৃদ্ধি করল? অতএব যারা মুমিন, নিশ্চয়ই তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করেছে এবং তারা আনন্দিত হয়’ (আত-তওবা, ৯/১২৪)

(২৭) মুমিনদের মুক্তি। ইউনুস আলাইহিস সালাম-এর ঘটনায় আল্লাহ তাআলা বলেন,فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ وَكَذَلِكَ نُنْجِي الْمُؤْمِنِينَ ‘অতঃপর আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম এবং দুশ্চিন্তা থেকে তাকে উদ্ধার করেছিলাম। আর এভাবেই আমি মুমিনদেরকে উদ্ধার করে থাকি’ (আল-আম্বিয়া, ২১/৮৮)

(২৮) মুমিনদের জন্য মহাপুরস্কার। আল্লাহ তাআলা বলেন, وَسَوْفَ يُؤْتِ اللهُ الْمُؤْمِنِينَ أَجْرًا عَظِيمًا ‘আর অচিরেই আল্লাহ মুমিনদেরকে মহাপুরস্কার দান করবেন’ (আন-নিসা, ৪/১৪৬)

(২৯) মুমিনদের জন্য আল্লাহর সাহচর্য। আর এটা হলো বিশেষ সাহচর্য। তা হচ্ছে- তাওফীক্ব, ইলাহী অনুপ্রেরণা ও শুদ্ধ করার সাহচর্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, وَأَنَّ اللهَ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ ‘আর নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের সাথে আছেন’ (আল-আনফাল, ৮/১৯)

(৩০) মুমিনগণ ভয় ও দুঃখ-চিন্তা থেকে নিরাপত্তায় থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন,فَمَنْ آمَنَ وَأَصْلَحَ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ‘অতএব যারা ঈমান এনেছে এবং নিজেকে সংশোধন করে নিয়েছে, তাদের নেই কোনো ভয় এবং তারা চিন্তিত হবে না’ (আল-আনআম, ৬/৪৮)

(৩১) মহাপ্রতিদান। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَيُبَشِّرُ الْمُؤْمِنِينَ الَّذِينَ يَعْمَلُونَ الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ أَجْرًا كَبِيرًا ‘যে মুমিনগণ সৎআমল করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার’ (আল-ইসরা, ১৭/৯)

(৩২) অশেষ প্রতিদান। আল্লাহ তাআলা বলেন,إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍ ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন প্রতিদান’ (ফুচ্ছিলাত, ৪১/৮)

(৩৩) বস্তুত কুরআন মুমিনদের জন্য হেদায়াত ও রহমতস্বরূপ’ (ইউনুস, ১০/৫৭)। (শিফা) আরোগ্য ও রহমতস্বরূপ’ (ফুচ্ছিলাত, ৪১/২৪)

(৩৪) ঈমানদারগণের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন,لَهُمْ دَرَجَاتٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ ‘তাদের জন্য রয়েছে তাদের প্রতিপালকের নিকট উচ্চ মর্যাদাসমূহ এবং ক্ষমা ও সম্মানজনক রিযিক্ব’ (আল-আনফাল, ৮/৪)

(চলবে)

মূল : ড. সাঈদ ইবনু আলী ইবনু ওয়াহাফ আল-ক্বাহত্বানী রহিমাহুল্লাহ

অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন

নারায়ণপুর, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।


[1]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৮৩।

[2]. ছহীহ বুখারী, ‘অত্যাচার, ক্বিছাছ এবং লুণ্ঠন’ অধ্যায়, ‘মালিকের অনুমতি ব্যতীত লুটপাট করা’ অনুচ্ছেদ, ১/১৪৬, হা/২৪৭৫; ছহীহ মুসলিম, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘গুনাহ দ্বারা ঈমানের ক্ষতি হয় এবং গুনাহে লিপ্ত থাকা অবস্থায় ঈমান থাকে না’ অনুচ্ছেদ, ১/৫৭, হা/৫৭ শব্দ বিন্যাস তাঁরই।

[3]. ছহীহ মুসলিম, ‘কুরআনের মর্যাদাসমূহ ও এতদসংশ্লিষ্ট বিষয়’ অধ্যায়, হাফেযুল কুরআনের মর্যাদা’ অনুচ্ছেদ, ১/৫৪৯, হা/৭৯৭।

[4]. সা‘দী, আত-তাওযীহু ওয়াল বায়ান লি শাজারাতিল ঈমান, পৃ. ৬৩-৯০।

Magazine