কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

ভ্রান্ত সুন্নীদের গুরু আহমাদ রেজা খানের ইতিহাস

post title will place here

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে মুসলিমদের ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য ইংরেজ বেনিয়ারা নামে মুসলিম আর কর্মে শিরক ও বিদআত সম্পাদনকারী কিছু লোক খুঁজছিল। কারণ ইংরেজরা ভালো করেই জানে, মুসলিম জাতি হলো বীরের জাতি। তারা যদি একতাবদ্ধ হয়ে থাকে, তাহলে তাদের অন্তরে গ্রথিত ভারত শাসনের রঙিন স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে, বাস্তবে তা কখনোই ধরা দিবে না। তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত দু’জন ব্যক্তিকে অবশেষে পেয়ে গেল। একজন হলো মির্জা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী এবং অপরজন হলো আহমাদ রেজা খান। এই দু’জন ব্যক্তির মাধ্যমে ভারতীয় মুসলিমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা দু’জন মুসলিমদের ঐক্য বিনষ্ট করে। একজন নিজেকে নবী দাবি করে আর আরেকজন অলী-আউলিয়া ও নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে। আজ পাঠক সমীপে আহমাদ রেজা খানকে নিয়ে কিছু কথা লিখব। আমরা আশাবাদী অনুসন্ধিৎসু পাঠকমহল অবশ্যই উপকৃত হবেন ইনশা-আল্লাহ। তো চলুন জেনে আসি রেজা খান সম্পর্কে। আর হ্যাঁ, কথিত সুন্নীরা[1] আহমাদ রেজা খানকে আলা হযরত নামেও ডাকে!

জন্ম : আহমাদ রেজা খান ১৪ জুন, ১৮৬৫ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বেরেলী শহরে জন্মগ্ৰহণ করে। তার জন্ম হয় এক সাহিত্যমনা পরিবারে। তার বাবা নকী আলী ও তার দাদা রেজা আলী হানাফী মাযহাবের আলেম ছিল। তার মা তার নাম রাখে আমান মিয়া। তার বাবা তার নাম রাখে আহমাদ মিয়া। তার দাদা তার নাম রাখে আহমাদ রেজা। কিন্তু সে সবার নাম উপেক্ষা করে নিজের নাম দেয় আব্দুল মুস্তাফা।[2]

স্বভাব : সে ছিল বদমেজাযী ও রাগী স্বভাবের। তার মুখের ভাষা ছিল নেহায়েত নোংরা। সে তার বিরোধী লোকদের গালাগালি করত। যেমন- সে তার বিরোধীদের বলত, শয়তান, অভিশপ্ত, ইবলীসের ভেড়া, দাজ্জালের গাধা, মুনাফেক্ব, ওয়াহাবী, নজদী ইত্যাদি। দেওবন্দী ও গায়রে মুক্বাল্লিদদের সে জাহান্নামের কুকুর বলত। শাহ ইসমাঈল শহীদ রহিমাহুল্লাহ-কে সে বলত, বিদ্রোহী, শয়তান, অভিশপ্ত ও সম্মানহীন লোক।[3]

সে আরও বলত, ওয়াহাবীদের সাথে উঠাবসা, চলাফেরা করা যাবে না। তাদের সাথে বিবাহ-শাদী দেওয়া যাবে না। তাদের মসজিদে টাকা দেওয়া জায়েয নেই। সে মুসলিমদের ঢালাওভাবে কাফের বলত। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, আল্লামা ইকবাল ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হককে কাফের বলে ঘোষণা দেয়।[4]

সুধী পাঠক! বর্তমানেও আপনি দেখতে পাবেন, তার অনুসারী কথিত সুন্নীরা আহলেহাদীছ ও দেওবন্দীদের কাফের, ওয়াহাবী, নজদী বলে থাকে। তারা আরও বলে, ওয়াহাবীদের পেছনে ছালাত বিশুদ্ধ হবে না, তাদের কাছে মেয়ে বিয়ে দেওয়া বা তাদের মেয়েদের বিয়ে করা জায়েয হবে না। কথাগুলো যাচাই করার জন্য ইউটিউবে সার্চ দিলেই তাদের বক্তাদের গালিগালাজ শুনতে পাবেন। আপনি দেখতে পাবেন আহমাদ রেজা খানের সাথে তাদের কত মিল! সে যেমন হক্বপন্থী আলেমদের গালিগালাজ করত, বর্তমানে তার অনুসারীরাও গালিগালাজ করে। আমরা আল্লাহর কাছে এই কাজ থেকে আশ্রয় চাই।

তার শিক্ষক : তার শিক্ষক ছিল মির্জা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর ভাই মির্জা গোলাম কাদের বেগ। রেজা খানের বাবা ও দাদা হানাফী মাযহাবের আলেম হলেও তার বিরোধীরা বলছেন, তারা শীআ মতাদর্শী ছিল। তবে একটা কথা নিশ্চিত বলতে পারি, রেজা খান অবশ্যই শীআদের আদর্শ লালন করত। যার প্রমাণ মিলে তার বই-পুস্তক থেকে। তার অনুসারীদের মাঝে বর্তমানে শীআপ্রীতি বিদ্যমান। মাথায় শীআদের মতো টুপি, গায়ে শীআদের মতো কাপড়, হাসান ও হুসাইন রযিয়াল্লাহু আনহুমা-কে নিয়ে বাড়াবাড়ি আর ইয়াযীদকে গালমন্দ করা, নিজেদের ফাতেমা রযিয়াল্লাহু আনহা-এর বংশধর দাবি করা, আরও কত কী! ভালো করে অবলোকন করুন তাহলেই শীআদের আদর্শ যে তাদের মাঝে রয়েছে তা প্রতিভাত হয়ে যাবে।

আয়ের উৎস : তার ভক্তরা অতিরঞ্জন করে বলে, তার নাকি তালাবদ্ধ সিন্দুক ছিল, সেখান থেকে সে টাকা-পয়সা, অলংকার, গহনা, কাপড়চোপড় যা ইচ্ছে বের করত। আসলে বিষয়টা তা নয়। আসল ঘটনা হলো সে ছিল ব্রিটিশদের দালাল। তারা তাকে সহযোগিতা করত। আরো একটা কথা হলো তার সম্পত্তি ছিল দান ও মানুষের আমানত‌। মানুষ তাকে জ্ঞানী মনে করে আমানত রাখত আর সে এগুলো ভোগ করত।[5]

অভ্যাস : সে সর্বদা পান চিবাতো। সে এতই পান চিবানোতে অভ্যস্ত ছিল যে, ইফতারের পরই সে পান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকত। সে হুকা ভীষণ পছন্দ করত। হুকা পানের সময় সে বিসমিল্লাহ বলত না, যেন শয়তান তার সাথে অংশগ্রহণ করতে পারে। তার আরও অভ্যাস ছিল মানুষের পদচুম্বন করা। কেউ হজ্জ করে ফিরে আসলে সে তার পদচুম্বন করত।[6] বর্তমানে তার অনুসারীরাও কদমবুসি করাকে খুব ভালো কাজ মনে করে।

বাচনভঙ্গি : সে অনর্থক ও অর্থহীন শব্দ বেশি ব্যবহার করত। এর দ্বারা সে নিজেকে জ্ঞানী বুঝাতে চাইত। কারণ ওই সময় নিয়ম ছিল, যে যত জ্ঞানী তার ভাষা তত দুর্বোধ্য। সে তার বিরোধীদের ব্যাপারে কঠিন শব্দ ব্যবহার করত। কুকুর, শূকর, লম্পট আরো কত কী!

রচনাবলি : তার ভক্তরা অতিরঞ্জন করে বলে, সে ২০০টি বই লিখেছে। আবার কেউ বলে, ৩৫০টি বই লিখেছে। আবার কেউ বলে, ৪৪০টি বই লিখেছে। আবার কেউ বলে, ৫০০টি বই লিখেছে। আবার কেউ বলে, ৬০০-এর অধিক বই লিখেছে। আবার কেউ বলে, ১০০০০-এর অধিক বই লিখেছে। কিন্তু আসল কথা হলো তার রচিত বই ১০-এর অধিক নয়।[7]

জিহাদের বিরোধিতা ও ইংরেজদের সমর্থন : তদানীন্তন সময়ে যারাই জিহাদের কথা বলত, সে তাদের ওয়াহাবী, নাজদী, কাফের বলত। রেজা খান ব্রিটিশদের বাছাইকৃত লোকদের মাঝে শীর্ষে ছিল।[8]

সে ওই সময় জিহাদ করা যাবে না বলে ফতওয়া দেয়। ভারতকে দারুল হারবের পরিবর্তে দারুল ইসলাম বলে। অথচ সব আলেম দারুল হারব বলেন। সে এ বিষয়ে চটি বই লেখে। এর নাম দেয়,إعلام الإعلام بأن هندوستان دار الإسلام (ই‘লামুল ইলাম বিআন্না হিন্দুস্তান দারুল ইসলাম) এই বইয়ে সে ওয়াহাবীদের কাফের, মুরতাদ আখ্যা দেয়। আরও লিখে তাদের ক্ষমা করা যাবে না। তাদের পেছনে ছালাত হবে না, তাদের যবেহ করা পশু খাওয়া যাবে না, তাদের সাথে সামাজিক আচরণ চলবে না, তাদের একঘরে করে রাখতে হবে। তাদের নারীদের দাসী বানানো উচিত।[9] সে অসহযোগ আন্দোলনের বিরোধিতা করে। সে বলে, জিহাদ ভারতে ফরয নয়। জিহাদ থেকে মানুষকে ফিরানোর লক্ষ্যে সে বলত,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنْفُسَكُمْ لَا يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ إِلَى اللَّهِ مَرْجِعُكُمْ جَمِيعًا فَيُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকো। তোমরা সঠিক পথে থাকলে তোমাদের কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারবে না। আল্লাহর কাছেই তোমাদের সকলকে ফিরে যেতে হবে। তারপর তোমরা যা করেছ সে সম্পর্কে তিনি তোমাদের অবহিত করবেন’ (আল-মায়েদা, ৫/১০৫)

ওই সময় ভারতীয় আলেমরা তুর্কি খেলাফত পুনরায় ফিরিয়ে আনতে চাইলে সে বলে, ফিরানোর প্রয়োজন নেই। কারণ খলীফা হওয়ার জন্য কুরাইশী হওয়া শর্ত। আর তুর্কিরা কুরাইশী নয়।[10]

ব্রিটিশরা ১৮৫৭ সালের পর থেকে আলেমদের ফাঁসি ও কারাবদ্ধ করা শুরু করে এবং নানা নির্যাতন করে তাদের জীবন বিষিয়ে তোলে। তারা আলেম ও সাধারণ মিলে ১ লক্ষ মানুষকে হত্যা করে। আর ওই সময় সে দিব্যি আয়েশ করে চলছিল। তাকে ব্রিটিশরা কিছুই বলছিল না। যে সকল আলেম কাররুদ্ধ হন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মিয়াঁ নাযীর হুসাইন দেহলবী রহিমাহুল্লাহ।[11]

ব্রিটিশ সাংবাদিক ফ্রান্সিস রবিনস বলেন, রেজা খান ব্রিটিশদের সমর্থক ছিল। ১৯২১ সালে খেলাফত আন্দোলনের সময় সে ব্রিটিশদের একজন মদদদাতা ছিল। ওই সময় সে তার অনুসারীদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করে, যারা সবাই অসহযোগ আন্দোলনের বিরোধী ছিল।[12] রেজা খান এতটাই ইংরেজ প্রেমিক ছিল, যার দরুন তার অনেক ভক্ত তাকে ছেড়ে চলে যায়। কারণ তারা কিছু হলেও বুঝত।[13]

সুতরাং আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, সে ইংরেজদের দালাল ছিল। কিন্তু হাস্যকর বিষয় হলো তার ভক্তরা তার বিষয়টা ঢাকার জন্য হক্বপন্থি আলেমদের ইংরেজদের দালাল বলে থাকে। এ যেন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা। সে যদি ইংরেজদের দালাল না হতো, তাহলে কীভাবে এত আয়েশ করে চলত?

তার বিশেষ কিছু আক্বীদা :

সে পীর, অলী-আউলিয়াদের ভক্তি করে আল্লাহর আসনে বসিয়ে দিয়েছে। আব্দুল ক্বাদের জিলানী রহিমাহুল্লাহ-কে অতি ভক্তি করে আল্লাহর চেয়ে বড় বানিয়ে দিয়েছে। তার নাম দিয়েছে গাউছুল আ‘যম (মহান সাহায্যকারী)। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন নূরের তৈরি, তিনি গায়েব জানেন, তিনি তার উম্মতের আমলের খবর রাখেন, তিনি হাযির নাযীর, তিনি পৃথিবী থেকে মৃত্যুবরণ করেননি, বরং তিনি জীবিত। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সৃষ্টি করা না হলে আসমান-যমীন সৃষ্টি করা হতো না। অথচ রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,لاَ تُطْرُونِي كَمَا أَطْرَتِ النَّصَارَى ابْنَ مَرْيَمَ، فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدُهُ فَقُولُوا عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ ‘তোমরা আমার প্রশংসা করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করো না, যেমন ঈসা ইবনু মারইয়াম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে খ্রিষ্টানরা বাড়াবাড়ি করেছিল। আমি তাঁর বান্দা। তাই তোমরা বলবে, আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল’।[14]

রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন,يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِيَّاكُمْ وَالْغُلُوَّ فِي الدِّينِ فَإِنَّمَا أَهْلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمُ الْغُلُوُّ فِي الدِّينِ ‘হে মানব সকল! দ্বীনের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে তোমরা সাবধান থাকো। কেননা তোমাদের পূর্বেকার লোকদেরকে দ্বীনের ব্যাপারে তাদের বাড়াবাড়ি ধ্বংস করেছে’।[15] অন্যত্র নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, أَلاَ هَلَكَ الْمُتَنَطِّعُونَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ‘সাবধান! চরমপন্থীরা ধ্বংস হয়েছে’। তিনি একথা তিন বার বললেন।[16]

মীলাদ মাহফিল করা, কবরপূজা, মাযারপূজা, পীরের পায়ে সিজদা করাসহ আরো অসংখ্য শিরকী আক্বীদা তার রয়েছে। আমরা আশ্চর্য হই আহমাদ রেজা খানের আগে কত বিদ্বান গত হয়েছেন, কত বইপুস্তক প্রকাশ পেয়েছে, কিন্তু কোথাও পাওয়া যায় না যে, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েব জানতেন, তিনি নূরের তৈরি, তিনি হাযির নাযীর। হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী রহিমাহুল্লাহ ফাতহুল বারী গ্রন্থ লিখেছেন, সেখানে কত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন! কই তিনি তো আলোচনা করেননি রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েব জানতেন বা তিনি নূরের তৈরি, তিনি হাযির নাযীর। ইমাম নববী রহিমাহুল্লাহ-সহ আরও কত বড় বড় বিদ্বান গত হয়েছেন, কেউ তো এগুলো নিয়ে আলোচনা করেননি। সর্বপ্রথম সেই মুসলিমদের মাঝে ফাটল সৃষ্টি করার মানসে ও ইংরেজদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য এই অনর্থক বিষয় নিয়ে আলোচনার ঝড় তোলে।

সুধী পাঠক! আমরা বলব, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূরের তৈরি এটা বললে কি আপনার ছওয়াব হবে? হবে না। তাহলে কেন এই অনর্থক বিষয় নিয়ে সে আলোচনা করেছে? অবশ্যই এর পেছনে কোনো রহস্য লুক্কায়িত আছে। আমরা হলফ করে বলতে পারি, ইংরেজদের উদ্দেশ্য পূরণ করার জন্যই সে এগুলো করেছে। আপনি তাদের বক্তাদের দেখবেন এই আক্বীদা-বিশ্বাসগুলোই ওয়ায মাহফিলে বলে বেড়ায় আর জনতার মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তাদের মতের বিরোধী আলেমদের গালিগালাজ করাই যেন তাদের ইবাদত। আর তারা গালি দিবে না কেন! তাদের গুরু আহমাদ রেজা খানই তো গালাগালি করত। একটা হাদীছ আছে, وَلَدُ الزِّنَا شَرُّ الثَّلاَثَةِ ‘জারজ সন্তান তিন নম্বর দুষ্ট’।[17] এ হাদীছটা বলা হয় তখন, যখন দুষ্ট পিতার সন্তান তার থেকে বেশি দুষ্ট হয়। আহমাদ রেজা খান আলেমদের কুকুর, শূকর, লম্পট, হীন লোক, কাফের বলত। কিন্তু সে জারজ সন্তান বলত না। তার অনুসারীরা বর্তমানে একধাপ এগিয়ে। তারা বলে, ওয়াহাবীরা জারজ সন্তান। আল্লাহ তাআলা তাদের হেদায়াত দান করুন- আমীন!

মৃত্যু : ১৯২১ সালে ৬৮ বছর বয়সে সে মৃত্যুবরণ করে। তার মৃত্যু সম্পর্কেও আজগুবি কিছু কথা আছে। যেমন বলা হয়, তার লাশ বহন করে ফেরেশতাদের একটি দল। তার কবর থেকে সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে। আরো কত কী! এক কথায় যদি বলি, তার সম্পর্কে তার ভক্তরা যা বলে সবই মিথ্যা।

আল্লাহ তাআলা তার ও তার অনুসারীদের ভ্রষ্টতা থেকে জাতিকে হেফাযত রাখুন- আমীন!

সাঈদুর রহমান

শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, বীরহাটাব-হাটাব, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।


[1]. উল্লেখ্য, সুন্নী একটি স্বীকৃত পরিভাষা, যা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের নিঃস্বার্থ অনুসারীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। কথিত সুন্নীরা নিজেদের বিভ্রান্তি সহজে চালিয়ে দেওয়ার জন্য নামটি নিজেদের ক্ষেত্রে অপব্যবহার করে।

[2]. বেরেলভী মতবাদ, আকীদা বিশ্বাস ও ইতিহাস, পৃ. ২৮।

[3]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৩১।

[4]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১৯।

[5]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৬।

[6]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৭।

[7]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৫০।

[8]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৫১।

[9]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৫৪।

[10]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৫৬।

[11]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৫২।

[12]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৫৮।

[13]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৬০।

[14]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৪৫।

[15]. ইবনু মাজাহ, হা/৩০২৯, হাদীছ ছহীহ।

[16]. আবূ দাঊদ, হা/৪৬০৮, হাদীছ ছহীহ।

[17]. আবূ দাঊদ, হা/৩৯৬৩, হাদীছ ছহীহ।

Magazine