কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

জেরুযালেম ও বায়তুল ‍মুক্বাদ্দাস : ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা (পর্ব-৪)

post title will place here

আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এরসাথে জেরুযালেমের সম্পর্ক :

বায়তুল মুক্বাদ্দাস খ্রিষ্টানদের হাতে আসায় খুশি হলেন মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম : মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় সর্বপ্রথম ফিলিস্তীন বা বায়তুল মুক্বাদ্দাসের নাম যখন উচ্চারিত হয় বা পবিত্র কুরআন এবং হাদীছে পাওয়া যায়, তা সূরা আর-রূম।

আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট : তৎকালীন যুগে সমগ্র পৃথিবী দুই সাম্রাজ্যে বিভক্ত ছিল। একটি হচ্ছে রোমান সাম্রাজ্য, আরেকটি হচ্ছে পারস্য সাম্রাজ্য। রোমান শব্দ রোম থেকে এসেছে, যেটা কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে আর রোম হচ্ছে ইতালির রাজধানী। ইতালির রাজধানী রোমকেন্দ্রিক খ্রিষ্টানদের যে একটা বলয়, যেটাকে আমরা এখন ইউরোপ নামে জানি সেই ইউরোপকেই মূলত আরবীতে রোম বলা হয়। আর পারস্য সাম্রাজ্য হচ্ছে বর্তমান ইরান। যাকে আরবীতে ফুর্স বা ফারিস বলা হয়। সেই ফারিস থেকেই আমরা বলি পারস্য, পারসিক। যারা ফারসী ভাষায় কথা বলে।

পারস্য সাম্রাজ্যের কেন্দ্র ছিল ইরান আর রোমান সাম্রাজ্যের কেন্দ্র ছিল ইউরোপ। এই দুই বৃহৎ সাম্রাজ্যে পৃথিবী বিভক্ত ছিল। রোমানরা ছিল আহলুল কিতাব তথা তারা খ্রিষ্টান হিসেবে ঈসা আলাইহিস সালাম-এর দ্বীনের অনুসারী ছিল। অন্যদিকে পারস্য ছিল অগ্নিপূজক। তারা আহলুল কিতাব নয়।

জেরুযালেম নিয়ে রোমান এবং পারসিকদের মধ্যে যুদ্ধ লেগেই থাকত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কায় তখন পারসিকরা রোমানদের পরাজিত করে বায়তুল মুক্বাদ্দাস দখলে নিয়ে নেয়। এই ঘটনায় মক্কার মুশরিকরা খুশি হয় এবং মুসলিমরা কষ্ট পায়। মুশরিকরা খুশি হয় এই জন্য যে পারসিকরা অগ্নিপূজক, তাদের উভয়ের মিল আছে, উভয় মুশরিক। মুসলিমরা কষ্ট পায় এই জন্য যে খ্রিষ্টানরা আহলুল কিতাব তথা মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসার আগ পর্যন্ত কেউ যদি দ্বীনে হক্ব খুঁজতে চায়, তাহলে সেক্ষেত্রে দ্বীনে হক্ব ছিল ঈসা আলাইহিস সালাম-এর দ্বীন। আহলুল কিতাবদের পরাজয়ে এবং মুশরিকদের বিজয়ে মক্কার মুশরিকরা খুশি হয় আর মক্কার মুসলিমরা কষ্ট পায়। তখন আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে আয়াত অবতীর্ণ করেন,غُلِبَتِ الرُّومُ - فِي أَدْنَى الْأَرْضِ وَهُمْ مِنْ بَعْدِ غَلَبِهِمْ سَيَغْلِبُونَ - فِي بِضْعِ سِنِينَ لِلَّهِ الْأَمْرُ مِنْ قَبْلُ وَمِنْ بَعْدُ وَيَوْمَئِذٍ يَفْرَحُ الْمُؤْمِنُونَ ‘রোমানরা নিকটবর্তী অঞ্চলে পরাজিত হয়েছে। আর তাদের এই পরাজয়ের পর কয়েক বছরের মধ্যেই তারা অচিরেই বিজয় লাভ করবে। আর পূর্বের ও পরের সকল সিদ্ধান্ত আল্লাহ তাআলার। সেদিন মুমিনগণ খুশি হবেন’ (আর-রূম, ৩০/২-৪)

যে বছরে মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয় ঠিক সেই বছরেই রোমানরা পারসিকদের পরাজিত করে বায়তুল মুক্বাদ্দাস দখলে নেয়। তখন মুসলিমরা একত্রে দুটি খুশির উপলক্ষ্য লাভ করে। একটা বদরের বিজয়ের খুশি, অন্যদিকে আহলে কিতাবদের বিজয়ের খুশি। এটা হচ্ছে বায়তুল মুক্বাদ্দাসের সাথে মুসলিমদের বা মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র কুরআন এবং হাদীছ খুঁজলে প্রথম সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ঘটনা প্রমাণ করে, বায়তুল মুক্বাদ্দাস আহলে কিতাবের হাতে থাকায় মুসলিমরা খুশি হচ্ছে আর অগ্নিপূজকদের হাতে থাকায় মুসলিমরা কষ্ট পাচ্ছে। এখান থেকে আমাদের জন্য বর্তমান সময়ে শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। বায়তুল মুক্বাদ্দাস যদি একজন অগ্নিপূজকের হাতে থাকার চাইতে একজন আহলে কিতাবের হাতে থাকার কারণে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তুষ্ট হন, তাহলে ইয়াহূদীদের হাতে থাকার চাইতে খ্রিষ্টানদের হাতে থাকা ভালো, খ্রিষ্টানদের হাতে থাকার চাইতে একজন মুসলিম, যার আক্বীদা খারাপ তবুও তার হাতে থাকা ভালো।

বায়তুল মুক্বাদ্দাসে স্বয়ং আল্লাহর নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম : এরপর দ্বিতীয় যখন বায়তুল মুক্বাদ্দাসের নাম পবিত্র কুরআন এবং ইতিহাসের পাতায় দেখা যায়, সেটা হচ্ছে মি‘রাজের ঘটনা। মি‘রাজের ঘটনায় আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআন মাজীদে বলেছেন,سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ ‘মহাপবিত্র সেই সত্তা, যিনি তার বান্দাকে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আক্বছায় নৈশ্যভ্রমন করিয়েছেন, যে মসজিদে আক্বছার চারিদিক বরকতময় করেছি’ (আল-ইসরা, ১৭/১)

এখানে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা সরাসরি বায়তুল মুক্বাদ্দাসের নাম উচ্চারণ করেছেন, এটাই হচ্ছে মি‘রাজের ঘটনা। যেটার বর্ণনা হাদীছে এসেছে, আবূ যার গিফারী রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, فُرِجَ عَنْ سَقْفِ بَيْتِى وَأَنَا بِمَكَّةَ ، فَنَزَلَ جِبْرِيلُ فَفَرَجَ صَدْرِى ، ثُمَّ غَسَلَهُ بِمَاءِ زَمْزَمَ ، ثُمَّ جَاءَ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ مُمْتَلِئٍ حِكْمَةً وَإِيمَانًا ، فَأَفْرَغَهُ فِى صَدْرِى ثُمَّ أَطْبَقَهُ ، ثُمَّ أَخَذَ بِيَدِى فَعَرَجَ بِى إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا ‘আমার বাড়ির ছাদ ফেড়ে জিবরীল আলাইহিস সালাম অবতরণ করেন, এমতাবস্থায় আমি মক্কায় ছিলাম, তারপর তিনি আমার সীনা চাক বা বক্ষ উন্মুক্ত করেন এবং যমযম এর পানি দিয়ে তিনি আমার সীনা ধৌত করলেন, তারপর হিকমত এবং ঈমানে পরিপূর্ণ একটি পাত্র নিয়ে আসেন এবং তা আমার বুকে ঢেলে দেন। তারপর তিনি তা বন্ধ করে দেন, তারপর তিনি আমাকে নিয়ে দুনিয়ার আসমানের দিকে উঠেন’।[1]

আনাস ইবনু মালেক রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর বর্ণনায় তাঁর এই চলার বর্ণনাটা পাওয়া যায়। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমার নিকটে নিয়ে আসা হয়েছে বোরাককে, যেটা খচ্চরের চাইতে ছোট কিন্তু গাধার চাইতে একটু বড়। তার দৃষ্টিশক্তি যতদূর ততদূর পর্যন্ত সে তার পা রাখে। আমি সেটাতে আরোহণ করলাম, আমাকে আরোহণ করতে বলা হলো, তারপরে আমি চলে আসলাম বায়তুল মুক্বাদ্দাসে। আমি এই বোরাককে বাঁধলাম ঐ জায়গার সাথে যেই জায়গায় আম্বিয়ায়ে কেরাম বাঁধতেন। তারপর আমি প্রবেশ করলাম মসজিদে আক্বছায় এবং সকল নবীকে সাথে নিয়ে দুই রাকআত ছালাত আদায় করলাম’।[2] কেননা অতীতে চলে যাওয়া অধিকাংশ নবীর স্মৃতিবিজড়িত স্থান হচ্ছে বায়তুল মুক্বাদ্দাস।

তাহলে ইসলামের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার যখন বায়তুল মুক্বাদ্দাসের নাম আমরা দেখতে পাচ্ছি, তখন আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় আর সেটা হচ্ছে মি‘রাজের ঘটনা। যেটা আল্লাহ পবিত্র কুরআনেও বর্ণনা করেছেন এবং যেটা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীছেও পাওয়া যায়।

প্রথম ক্বেবলাবায়তুল মুক্বাদ্দাস : মুসলিমদের প্রথম ক্বেবলা বায়তুল মুক্বাদ্দাস। অথচ সর্বশ্রেষ্ঠ ঘর কা‘বা। সর্বপ্রথম যে ঘর ইবাদতের জন্য তৈরি করা হয়েছে সেটা মক্কায়, সেটাই কা‘বা, সেটাই সর্বশ্রেষ্ঠ, এতে কোনো সন্দেহ নাই। সর্বশ্রেষ্ঠ ঘরের পাশে থেকেও মুসলিমরা ছালাত আদায় করেছে বায়তুল মুক্বাদ্দাসমুখী হয়ে। যেমন, ইবনু কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় দুই রুকনের মাঝে দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করতেন। ফলে তিনি যুগপৎভাবে কা‘বা ও বায়তুল মুক্বাদ্দাস উভয়ের সামনে রেখে ছালাত আদায় করেন। কিন্তু যখন তিনি মদীনায় হিজরত করেন, তখন এভাবে সমন্বয় করে ছালাত আদায় করা সম্ভব ছিল না। কেননা মদীনা হলো উভয়ের মাঝামাঝি এজন্য তখন তিনি বায়তুল মুক্বাদ্দাসের দিকে মুখ করে ছালাত আদায় করার নির্দেশ দেন। এভাবে ১৬/১৭ মাস মদীনায় বায়তুল মুক্বাদ্দাসের দিকে মুখ করে ছালাত আদায় করেন।[3] এখানে আরো একটি আশ্চর্যের বিষয় যে, তৎকালীন জাহেলী যুগে তারা তো মুশরিক, তারা তো আহলে কিতাব নয়, তাদের কাছে আহলে কিতাবের গ্রন্থ বা পুস্তক সেইভাবে ছিল না। খ্রিষ্টান বা ইয়াহূদী ধর্মের প্রচার তাদের কাছে সেইভাবে ছিল না, তারা সবাই ছিল মুশরিক। তাদের কাছে জাহেলী যুগ থেকে সবচেয়ে সম্মানিত, সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য, সবচেয়ে দামী ঘর হচ্ছে মক্কার কা‘বা এবং কাফেররা পর্যন্ত সেখানে হজ্জ করার জন্য যেত। যেই পরিবেশে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেড়ে উঠেছেন, সেই পরিবেশে বায়তুল মুক্বাদ্দাসকে এত মূল্যায়ন করার কথা নয়। কেননা তাঁর আশেপাশের সবাই কা‘বাকে সবচেয়ে বেশি মূল্যায়ন করে, তিনি নিজে কা‘বাকে সবচেয়ে বেশি মূল্যায়ন করেন। অথচ কা‘বার পাশে থেকে তিনি ছালাত আদায় করছেন বায়তুল মুক্বাদ্দাসমুখী হয়ে। এর মধ্যে হিজরত সংঘটিত হলো, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করে এসে কুবায় সর্বপ্রথম মসজিদ তৈরি করলেন। সেই মসজিদটি নির্মিত হলো বায়তুল মুক্বাদ্দাসমুখী হয়ে। যেহেতু তখনও ক্বেবলা ছিল বায়তুল মুক্বাদ্দাস। কিন্তু রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মন সবসময় চাইতো যে তিনি কা‘বামুখী হয়ে ছালাত আদায় করবেন। যেটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা পবিত্র কুরআনে বর্ণনা করেছেন,قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ‘আমরা অবশ্যই আপনার বারবার আসমানের দিকে তাকানো লক্ষ করি। সুতরাং আমরা অবশ্যই আপনার ক্বেবলা পরিবর্তন করে দিব, যাতে আপনি সন্তুষ্ট হবেন। অতএব আপনি আপনার মুখমণ্ডল ফিরিয়ে নিন কা‘বার দিকে’ (আল-বাক্বারা, ২/১৪৪)

সুতরাং ১৬ থেকে ১৭ মাস মুসলিমরা যেই ক্বেবলামুখী হয়ে ছালাত আদায় করেছে কা‘বার পাশে ও মদীনাতে এবং প্রথম মসজিদ নির্মিত হয়েছে বায়তুল মুক্বাদ্দাসমুখী হয়ে, সেটাই হচ্ছে জেরুযালেমের বায়তুল মুক্বাদ্দাস। তাহলে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় আমরা এটা তৃতীয় ঘটনা দেখলাম বায়তুল মুক্বাদ্দাস-কেন্দ্রিক।

বায়তুল মুক্বাদ্দাসকে দ্বীন ইসলামের প্রথম ক্বেবলা করার মাধ্যমে বায়তুল মুক্বাদ্দাসের সাথে মুসলিমদের সম্পর্ক চিরন্তন ও চিরস্থায়ী করে দেওয়া হয়েছে। অতীতের সকল নবীর পবিত্র স্থানের প্রকৃত দাবিদার এখন মুসলিমরাই। সকল দ্বীনের উপর ইসলামের প্রাধান্য লাভ করা এবং সকল জাতির উপর ইসলামের বিজয় লাভ করার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে জেরুযালেম মুসলিমদের হাতে থাকা।

সারা পৃথিবী যদি আমাদের দখলে থাকে আর বায়তুল মুক্বাদ্দাস যদি ইয়াহূদী নাছারার দখলে থাকে, তাহলে ইয়াহূদী-নাছারার কোনো সমস্যা নাই, তাতে তাদের কোনো কিছু যায় আসে না। সমগ্র আমেরিকা, সমগ্র ইউরোপ যদি ইসলামের দখলে আসে; কিন্তু বায়তুল মুক্বাদ্দাস দখলে না আসে তাহলে এটাতে ইসলামের সার্বজনীন বিজয় পরিপূর্ণতা পায় না। কেননা শুধু ঐ জেরুযালেমই যদি ইয়াহূদী-খ্রিষ্টানের অধীনস্থ থাকে, তাহলে এটাই তাদের জন্য যথেষ্ট বলে তারা মনে করে।

পৃথিবীর প্রধানতম তিনটি ধর্মের সকলেই দ্বীনে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর দাবিদার। আর ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর দুই সন্তান। এক সন্তান ইসমাঈল আলাইহিস সালাম আছেন কা‘বার পাশে। আরেক সন্তান ইসহাক্ব আলাইহিস সালাম আছেন বায়তুল মুক্বাদ্দাসের পাশে। ইসহাক্ব আলাইহিস সালাম-এর বংশধরেরা সবাই বায়তুল মুক্বাদ্দাস-কেন্দ্রিক। আর ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর বংশধরেরা সবাই কা‘বা-কেন্দ্রিক। উম্মাতে মুহাম্মাদীর বিজয় কা‘বায় প্রতিষ্ঠিত হয় মক্কা বিজয়ের সময় আর বায়তুল মুক্বাদ্দাসে প্রতিষ্ঠিত হয় উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর সময়। এই দুই মসজিদের মাধ্যমে দ্বীনে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর একচ্ছত্র প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়।

(চলবে)

ফাযেল, দারুল উলূম দেওবান্দ, ভারত; বি. এ (অনার্স), মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,
সঊদী আরব; এমএসসি, ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ইউনিভার্সিটি অফ ডান্ডি, যুক্তরাজ্য।


[1]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৯।

[2]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৮৮৭।

[3]. তাফসীর ইবনু কাসীর, ১/৪৫৩।

Magazine