কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

জেরুযালেম ও বায়তুল ‍মুক্বাদ্দাস: ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা (পর্ব-৯)

ফিলিস্তীনের বুকে ইসরাঈল সৃষ্টির ভয়ংকর ইতিহাস: পূর্বের আলোচনাতে আমরা দেখেছি কীভাবে মুসলিম বিশ্ব মামলূকদের হাত ধরে একই সাথে মঙ্গোলীয় ও ক্রুসেডারদের হাত থেকে মুক্তি লাভ করেছে। আজকে এই পর্বে আমরা আলোচনা করব দীর্ঘ সাড়ে ৭০০ বছর পর পুনরায় কীভাবে জেরুযালেম মুসলিমদের হাতছাড়া হয়ে গেল, কীভাবে ফিলিস্তীনের বুক চিরে আরব বিশ্বের বিষফোঁড়া ইসরাঈল প্রতিষ্ঠিত হলো। এই বিষয়গুলো ভালোভাবে জানতে হলে অবশ্যই আমাদেরকে উছমানীয় সাম্রাজ্য সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

উছমানীয়দের অধীনে মসজিদে আক্বছা: ঠিক যে সময় মঙ্গোলীয়দের হাতে বাগদাদের পতন হয়, সেই সময় আজকের তুরস্কের সীমন্তবর্তী এশিয়া মাইনর এলাকায় উছমানীয়দের আবির্ভাব হয়। তারা জীবন ও জীবিকার তাগিদে সবসময় মঙ্গোলীয় ও ক্রুসেডার উভয়ের সাথেই লড়াই চালিয়ে যেত। তাদের এই লড়াইকেই একসময় মহান আল্লাহ এমনভাবে কবুল করেন যে, তাদের হাত ধরেই দীর্ঘদিনের অজেয় ইস্তাম্বুল বা কনস্টান্টিনোপল বিজয় হয়। যে ইস্তাম্বুল দীর্ঘ ক্রুসেড ‍যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ক্রুসেডারদের হেডকোয়ার্টার ছিল। শুধু তাই নয় অর্ধ-ইউরোপ উছমানীয়দের করতলগত হয়ে যায়। আজকের ইউক্রেন, গ্রীস, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, মেসিডোনিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও রোমানিয়াসহ অসংখ্য ইউরোপিয়ান দেশ উছমানীয় সাম্রাজ্যের অধীন ছিল। যদিও উছমানীয় খেলাফতের শুরুর দিকে কখনোই মুসলিম অঞ্চলের উপর আধিপত্যের ইচ্ছা তাদের ছিল না। বরং তাদের মন ও মননে একমাত্র লক্ষ্য ছিল ইউরোপ। তবে আব্বাসীয় খেলাফতের দুর্বলতার কারণে এবং ‍উছমানীয় খেলাফতের শক্তি ও ক্ষমতার কারণে স্বাভাবিকভাবেই মুসলিম দেশগুলো উছমানীয়দের নিজেদের খলীফা মানা শুরু করে। এভাবে একসময় আজকের আরব বিশ্ব তথা ফিলিস্তীনসহ অন্যান্য আরব দেশ উছমানীয় খেলাফতের অধীনে চলে যায়। তথা পৃথিবীর তিনটি শ্রেষ্ঠ মসজিদের উপর একসাথে একত্রে খেদমত করার সুযোগ তারা পেয়ে যান। পাশাপাশি বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপলও তাদের অধীন হয় তথা এককথায় মুসলিমদের ইতিহাসের স্বর্ণযুগ অতিক্রম হয়।

ইসরাঈলের জন্ম: উছমানীয় খেলাফতের শেষের দিকে তুরস্কে তুর্কী জাতীয়তাবাদের এবং আরবে আরব জাতীয়তাবাদের উত্থান হয়। জাতীয়তাবাদের এই বিষবাষ্প মুসলিম ভ্রাতৃত্বকে টুকরো টুকরো করে দেয়। তুরস্কে যেমন কামাল পাশারা তুর্কী জাতীয়তাবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, ঠিক তেমনি বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মক্কার ইমাম বা শাসক ছিলেন শরীফ হুসাইন। তিনি এ আন্দোলনের গতি বৃদ্ধিতে বিস্তর ভূমিকা রাখেন। এই সময়ের কিছু পূর্বেই ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে জায়নিজম (Zionism) নামে একটি আন্দোলন শুরু হয়। এই জায়নিজম আন্দোলনের উদ্ভব হয় ভিয়েনা শহরে। থিওডোর হারজল নামক একজন হাঙ্গেরীয় ইয়াহূদী সাংবাদিক ভিয়েনার ইয়াহূদীদের নিয়ে শুরু করেন জায়োনিস্ট আন্দোলন। ১৮৯৭ সালে তিনি সুইজারল্যান্ডে প্রথম ‘আন্তর্জাতিক জায়োনিস্ট কংগ্রেস’ আহ্বান করেন।[1]

এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল ইয়াহূদীদের জন্য একটি আলাদা আবাসভূমি তৈরি করা। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে থিওডোর দাবি করলেন, প্যালেস্টাইন ছিল ইয়াহূদীদের আদি নিবাস। অতএব, সব ইয়াহূদীকে সেখানে ফিরে যেতে হবে, গড়তে হবে পৃথক আবাসভূমি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আরব জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অন্যতম নেতা শরীফ হুসাইন প্রতিশ্রুতি দেন যে, তিনি তুরস্কের বিরুদ্ধে ব্রিটেনকে সহযোগিতা করবেন আর ব্রিটিশ সরকার তাকে আরব সাম্রাজ্য গড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। অন্যদিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিলেতে এসিটনের দারুণ অভাব দেখা দেয়। ঐ সময় জায়োনিস্ট আন্দোলনের বিখ্যাত নেতা ও রসায়নবিদ হাইম ওয়াইজম্যান, যিনি বিলেতের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন। তিনি ব্রিটিশ সরকারকে বলেন, তিনি এসিটন উৎপাদন করতে পারবেন। ব্রিটিশ সরকারকে তিনি এ বিষয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করতে রাজি; তবে শর্ত হচ্ছে যে, যুদ্ধে জিতলে প্যালেস্টাইনে গড়তে দিতে হবে ইয়াহূদীদের বিশেষ আবাসভূমি।[2]

ইয়াহূদীদের দাবি অনুযায়ী ১৯১৭ সালে ব্রিটিশ সরকার নানা স্বার্থকে সামনে রেখে ইয়াহূদীদের জাতীয় আবাসভূমি সম্পর্কে একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এটাকে ‘বেলফোর ঘোষণা’ (Belfour Declaration) বলা হয়।[3] এখান থেকেই শুরু ফিলিস্তীন সমস্যার। যাহোক প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হারার পর ফিলিস্তীন আসে ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণে। ফলে বহু ইয়াহূদী ইউরোপ থেকে গিয়ে ফিলিস্তীনে বসবাস করতে শুরু করে। তারা কিনতে শুরু করে জলাভূমি। ইয়াহূদীরা এসব জলাভূমি সেচে বের করে আবাদি ভূমি। এরকম একটি জলাভূমি সেচে তারা তৈরি করে তেলআবিব শহর এবং প্রতিষ্ঠা করে একটি বিশ্ববিদ্যালয়। ক্রমে আরবগণ নিজ দেশে পরবাসীতে পরিণত হতে থাকে। ব্রিটিশ সরকারের নীতির ফলে আরবদের অসন্তোষ বেড়ে চলল। এ অসন্তোষ আত্মপ্রকাশ পেল আরব-ইয়াহূদী দাঙ্গার মধ্য দিয়ে। ১৯২১, ১৯২৯ ও ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে আরব ও ইয়াহূদীদের মধ্যে যে দাঙ্গা হয়েছিল, তাতে অসংখ্য লোক হতাহত হয়। ব্রিটিশ সরকার সামরিক শক্তির সাহায্যে এসব দাঙ্গা বন্ধ করে। ১৯৩৬ সালে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ব্রিটিশ সরকার একটি ‘রয়েল কমিশন’ (Royal Commission) নিয়োগ করে। কিন্তু এই কমিশনের প্রস্তাব আরব-ইয়াহূদী উভয়ই প্রত্যাখ্যান করে। ফলে কোনো সমাধান ছাড়াই আরব-ইয়াহূদী সংঘর্ষ বৃদ্ধি পেতে থাকে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফিলিস্তীনের অবস্থার পরিবর্তন হলো। আরব ও ইয়াহূদীরা কিছু সময়ের জন্য সংগ্রাম হতে নিরত হয়ে মিত্রশক্তির খেদমতে আত্মনিয়োগ করল। এ সময় ইয়াহূদীরা আমেরিকার সাথে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে তাদের সাহায্য লাভ করে। আমেরিকারও মধ্যপ্রাচ্যে একটি শক্তিশালী ঘাঁটির প্রয়োজন ছিল। তারা মনে করল ইয়াহূদী-ফিলিস্তীনী দ্বন্দ্ব তার সে প্রয়োজন মেটাতে পারে। সুতরাং সে ফিলিস্তীনে ইয়াহূদীদের জাতীয় আবাসভূমি সৃষ্টির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানাল। ১৯৪২ সালে ডা. হাইম ওয়াইজম্যান ও আরও কয়েকজন ইয়াহূদী নেতা আমেরিকার সাথে এক বৈঠকে মিলিত হয় এবং সেখানে বিটমোর প্রোগ্রাম (Bitmore Programme) নামে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়। এ প্রস্তাব অনুসারে ইয়াহূদী সাধারণতন্ত্র হিসেবে ফিলিস্তীন প্রতিষ্ঠার দাবি করা হয়। এ সংবাদে সমগ্র আরব জাহান ক্ষেপে ওঠে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৫ সালে আরব লীগ গঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে আরব লীগের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাশ হয় ফিলিস্তীনকে বিভক্ত করে ইসরাঈল নামে ইয়াহূদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব। ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর এর প্রেসিডেন্ট হন হাইম ওয়াইজম্যান।[4]


জাতিসংঘের অবিচারে হতাশ হয়ে আরব বিশ্ব সশস্ত্র পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। আরব লীগের সমস্ত সদস্য অস্ত্রশক্তি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল। ফলশ্রুতিতে ১৯৪৮ সালে ইয়াহূদী ও আরবদের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ বাধে। আরবগণ যখন নিশ্চিত বিজয়ের পথে, তখন জাতিসংঘ ৪ সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি করতে বলে। এই সুযোগে ইসরাঈল আমেরিকা থেকে অস্ত্রশস্ত্র আমদানি করে। অন্যদিকে উদ্বাস্তু বেশে আমেরিকাও সৈন্য পাঠায়। ফলে ইয়াহূদীরা প্রভূত শক্তি সঞ্চয় করতে সক্ষম হয়। অতঃপর পুনরায় যুদ্ধ শুরু হলে আরবরা আর পেরে উঠেনি। ইয়াহূদীরা ফিলিস্তীনের একটি অংশ অধিকার করে ইসরাঈল নামে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। এভাবে দীর্ঘ ষড়যন্ত্র-সংগ্রামের পর ইয়াহূদীরা একটি কৃত্রিম রাষ্ট্র গঠনে সক্ষম হয়।[5]

সারমর্ম হিসেবে আমরা বলতে পারি, ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর খেলাফতকালে ফিলিস্তীন সর্বপ্রথম ইসলামী খেলাফতের অধিকারভুক্ত হয়। অতঃপর দীর্ঘ ৪০০ বছর পর ১০৯৬ সালে ক্রুসেডাররা মুসলিমদের হাত থেকে ফিলিস্তীন দখল করে নেয়। পুনরায় ১১৮৭ সালে গাজী ছালাহুদ্দীন আইয়ূবী রাহিমাহুল্লাহ-এর নেতৃত্বে মুসলিমরা জেরুযালেম পুনরুদ্ধার করে। ১৫১৭ সালে সুলতান প্রথম সেলিম ফিলিস্তীন রাষ্ট্রটি মামলূক সুলতান কানজুল ঘোরীর নিকট থেকে উছমানীয় খেলাফতের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। ১৯১৮ সালে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর ফিলিস্তীন কার্যত ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। ব্রিটিশদের ধোঁকা, তুর্কী ও আরব জাতীয়তাবাদের উত্থান, ইসরাঈলের সন্ত্রাস সব মিলিয়ে ১৯৪৮ সালে জন্ম হয় ইসরাঈল নামক বিষফোঁড়ার।

বিভক্ত ফিলিস্তীনীদের ভাগ্য বিড়ম্বনা : অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজ ভাগ্যবিড়ম্বিত ফিলিস্তীনী জাতি দুইভাগে বিভক্ত— গাযাপন্থি হামাস বনাম পশ্চিম তীরপন্থি ফাতাহ। মিশরের ‘ইখওয়ানুল মুসলিমীন’ (ইসলামী ভ্রাতৃসংঘ)-এর আদর্শে গঠিত হয় হামাস। মিশরে ইখওয়ানের উদয় হয় ১৯২৬ সালে। এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন হাসান আল-বান্না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই দল মিসরে খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠে। মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুন নাছের দলটিকে নিষিদ্ধ করেন। দলটি এখনো মিসরে বেআইনী। গাযায় হামাস দল হিসেবে প্রথম আত্মপ্রকাশ করে ১৯৮৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর। এরপর থেকেই জনসমর্থন সঞ্চয় করে চলেছে এ সমাজসেবামূলক রাজনৈতিক দলটি। পাশাপাশি ফিলিস্তীনকে ইসরাঈলের করাল গ্রাস থেকে উদ্ধার করার জন্য তারা সশস্ত্র সংগ্রামেও যুক্ত হয়েছে। ফিলিস্তীনের মুক্তি সংগ্রামে আশা-ভরসার প্রতীক হয়ে ওঠায় সংগঠনটি ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিজয় লাভ করে। কিন্তু হামাসকে সন্ত্রাসী দল আখ্যা দিয়ে আমেরিকা-ব্রিটেনসহ বিশ্বমোড়লরা তাদেরকে ফিলিস্তীনের শাসনভার গ্রহণে স্বীকৃতি দেয়নি। বরং তাদেরকে নির্বাচিত করার অপরাধে (?) শাস্তিস্বরূপ গাযার অধিবাসীদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অবরোধ। ফলে এক অঘোষিত কারাগারে পরিণত হয়েছে গাযা। বিশ্ববাসীর চোখের সামনে আজ এক বুক শূন্যতা নিয়ে খাদ্যসহ জীবনোপকরণের অভাবে ধুঁকে ধুঁকে দিনাতিপাত করছে সেখানকার কয়েক লক্ষ বনু আদম। অথচ হামাস কোনো সন্ত্রাসী দল নয়। এটা জনসমর্থিত বিপ্লবী রাজনৈতিক দল। সন্ত্রাসবাদ ও বিপ্লববাদ সমার্থক নয়। সন্ত্রাসীদের সাথে বৃহত্তর সমাজের যোগাযোগ থাকে না, কিন্তু বিপ্লবীদের থাকে। জাতিসংঘ চার্টারের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, ‘কোনো দেশ যদি শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং তার নাগরিকরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে, তখন সেই দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানের এবং সমস্ত নাগরিকের এককভাবে বা সংঘবদ্ধভাবে থেকে তাদের আত্মরক্ষার পূর্ণ অধিকার রয়েছে’। সেই হিসেবে হামাসের পূর্ণ অধিকার রয়েছে ইসরাঈলের বিরুদ্ধে লড়াই করার। কেননা তারা হলো অত্যাচারিত ফিলিস্তীনী জাতির মুক্তিকামী সংগঠন। অন্যদিকে Palestine Liberation Organization (PLO)-এর একটি অংশ হচ্ছে আল-ফাতাহ, যা ১০ অক্টোবর ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি ইয়াসির আরাফাতের আপসহীন সাহসী নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের লেজুড়দের বিরুদ্ধে তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এই ফাতাহ এর সংগ্রামের ফসল হিসেবে ১৯৮৮ সালের ১৫ নভেম্বর স্বাধীন ফিলিস্তীনের ঘোষণা আসে। সর্বশেষ ২০০১ সালে শান্তি প্রক্রিয়ার সকল চড়াই-উতরাই পেরোনোর শেষ পর্যায়ে বিল ক্লিনটনের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ দিকে দ্বিতীয় ক্যাম্প ডেভিড চুক্তিতে ইসরাঈল-ফিলিস্তীন উভয়পক্ষকেই স্বাক্ষর করানোর জন্য একত্রিত করা হয়েছিল। কিন্তু আরাফাত ঐ প্রতারণামূলক চুক্তির কতগুলো Volted line-এ স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে আমেরিকা-ইসরাঈলের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় ইয়াসিরকে দৃশ্যপট থেকে সরানো। তাই তারা তাকে আল-ফাতাহ এর সদর দপ্তর রামাল্লায় টানা দুই বছর বন্দী করে রাখে। অতঃপর রহস্যজনকভাবে ১১ নভেম্বর, ২০০৪ সালে প্যারিসের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এভাবে বিদায় ঘটে এককালের মাযলূম জনতার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর ইয়াসির আরাফাতের। এরপর দলটির হাল ধরেন তারই ডেপুটি আপসকামী মাহমূদ আব্বাস। নেতৃত্বের পরিবর্তনে বিপ্লবী আপসহীন দলটি এখন মার্কিন-ইসরাঈল চক্রের আজ্ঞাবহ হয়ে পড়েছে। ফলে মার্কিন-ইসরাঈলী ষড়যন্ত্রকে বাস্তবে রূপদান করতে আরাফাতের আল-ফাতাহ এখন আর কোনো বাধা নয়।

জরাজীর্ণ এই সংগঠনটি এখন দুর্বলচিত্ত আব্বাসের পরিচালনায় একটি জনসমর্থনহীন দলে পরিণত হয়েছে। এমতাবস্থায় ফিলিস্তীনী জনগণ আরাফাতের ফাতাহ-এর বিকল্প খুঁজতে থাকে এবং পেয়ে যায় আরাফাতের জীবদ্দশায় নিষ্ক্রিয় থাকা সংগঠন হামাসকে। এভাবেই দৃশ্যপটে আগমন হামাসের। ইসরাঈলের জন্য স্পর্শকাতর ইস্যুগুলো যেমন ফিলিস্তীনী উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তন, প্রস্তাবিত ফিলিস্তীন রাষ্ট্রে জেরুযালেমের অন্তর্ভুক্তি ইত্যাদি দাবিতে হামাস আপসহীন ও অটল। ফলশ্রুতিতে হামাস একদিকে যেমন ইসরাঈলের চক্ষুশূলে পরিণত হয়, অন্যদিকে পরিণত হয় ফিলিস্তীনীদের নয়নমণিতে, যা প্রতিফলিত হয় ২০০৬ সালের ২৫ জানুয়ারির নির্বাচনে। নির্বাচনে মাহমূদ আব্বাস-এর নেতৃত্বাধীন দল পরাজিত হলেও সঊদী আরবের মধ্যস্থতায় ফাতাহ ও হামাস উভয়ের অংশগ্রহণে কোয়ালিশন সরকার গঠন করা হয়। এরপর থেকে এই কোয়ালিশন সরকারকে ভেঙে দেওয়ার জন্য ইসরাঈল তার সর্বশক্তি নিয়োগ করে। অবশেষে পশ্চিমাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রেসিডেন্ট মাহমূদ আব্বাস কোয়ালিশন সরকার ভেঙে দেন। এহেন মুহূর্তে আসন্ন বিপদ বুঝতে পেরে হামাস দারিদ্র্যপীড়িত গাযার অধিকার গ্রহণ করে এবং ফাতাহ পশ্চিম তীরের অধিকার গ্রহণ করে। এইভাবে একটি জাতি হিসেবে ফিলিস্তীন বিভক্ত হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে ফিলিস্তীন জাতির একতাবদ্ধ শক্তিও ভেঙে দুটুকরো হয়ে যায়।

০ বছরের রক্তস্নাত পথ:বর্তমানে ইসরাঈল পশ্চিম তীরের চারিদিকে আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থী একটি নিরাপত্তা প্রাচীর তৈরি করেছে, যা সেখানে বসবাসরত ৩০ লাখ ফিলিস্তীনীকে বস্তুত খাঁচাবন্দী করে রেখেছে। এছাড়া প্রতিমাসে বসবাসরত হাজার হাজার ইয়াহূদীর সাথে যোগ হচ্ছে আরও অগণিত ইয়াহূদী। অন্যদিকে ইসরাঈল সরকার পশ্চিম তীরের ইফরাত এলাকার ৪২৫ একর (১৭২ হেক্টর) ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে। এই ভূখণ্ডে অন্তত ২৫০০ নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। এই ভবনগুলোতে অন্তত ৩০ হাজার ইসরাঈলীর থাকার ব্যবস্থা করা হবে।[6]

পশ্চিম তীরের ইয়াহূদী বসতিগুলোতে বর্তমানে প্রায় ২ লাখ ৯০ হাজার ইসরাঈলী বসবাস করে। ২০০১ সালে এই সংখ্যা ছিল ২ লাখের নিচে। অন্যদিকে গাযা থেকে রকেট ছোড়া হলেও পশ্চিম তীর থেকে কোনো রকেট ছোড়া হয়নি। তারপরও ২০০৮ সালে সেখানে ইসরাঈলী হামলায় ৫০ জন ফিলিস্তীনী নিহত হয়।[7]

অন্যদিকে গাযা মূলত একটি বড় আকারের শরণার্থী শিবির, যার ৮৩ ভাগ মানুষ দরিদ্র। গাযার ফিলিস্তীনীদের সাথে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তীনীদের বৈবাহিক সম্পর্কও নেই। এমনকি গাযার ছাত্র পশ্চিম তীরের কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনারও সুযোগ পায় না। এইভাবে একটি জাতিকে অত্যন্ত নিষ্ঠুরতার সাথে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে ইসরাঈল। ১৯৬৭ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত গাযা এলাকা ইসরাঈলের দখলে ছিল। ফিলিস্তীনীদের অবিরাম প্রতিরোধ-আন্দোলনে অপদস্থ ইসরাঈলীরা ২০০৫ সালে গাযা ছেড়ে গেলেও অত্যাচারী প্রতারক ইসরাঈল গাযার উপর অবরোধ চাপিয়ে দেয়। তারা গাযায় ঢোকার ও বেরোনোর সব পথ বন্ধ করে দেয়। দক্ষিণ মিসরের সিনাইয়ের দিকে একটা প্রবেশপথ (রাফাহ ক্রসিং) আছে। কিন্তু মার্কিন-ইসরাঈলের চাপের মুখে মিসর সে পথটিও বন্ধ করে দেয়।

এই অবরুদ্ধ গাযার উপর তারা ২০০৬ সালে বিমান হামলা চালিয়ে ২৯০ জন নিরীহ গাযাবাসীকে হত্যা করে। তারপর ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে গাযায় বিমান হামলা চালিয়ে ১৪০ জনকে হত্যা করে। এরপর ২০০৮ সালের জুন মাসে ৬ মাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে গাযায় ইসরাঈলের অবরোধ প্রত্যাহার এবং গাযা থেকে রকেট নিক্ষেপ বন্ধে সম্মত হয় হামাস।

কিন্তু ইসরাঈল ৪ ও ১৭ নভেম্বর আকাশ ও স্থলপথে গাযায় হামলা চালিয়ে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করলেও বারাক ওবামার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত মিডিয়ায় তা ধামাচাপা পড়ে যায়। ১৯ ডিসেম্বর, ২০০৮ সালে ইসরাঈল-হামাস ৬ মাসের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর ২৭ ডিসেম্বর যুদ্ধবিরতি ভঙ্গকারী ইসরাঈল গাযায় নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করে। বিনা উসকানিতে ঠাণ্ডা মাথায় গাযার ঘুমন্ত, নিরীহ জনগণের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরাঈল। ইসরাঈলী যুদ্ধ বিমানগুলো আকাশপথে, যুদ্ধ জাহাজগুলো নৌপথে এবং ট্যাংক বহরের দুর্ভেদ্য নিরাপত্তাব্যূহ নিয়ে ইসরাঈলী পদাতিক বাহিনী প্রায় ২২ দিন যাবৎ মানবতার বিরুদ্ধে সভ্য দুনিয়ার সামনে এক নযিরবিহীন নৃশংস তাণ্ডব চালায়। নবাবিষ্কৃত ফসফরাস বোমায় মানবহত্যার নিষ্ঠুর পরীক্ষা তারা চালায়। এমনিতেই দীর্ঘ অবরোধের কারণে গাযাবাসী নিঃস্ব, অসহায় ও সম্বলহারা। নেই তাদের পর্যাপ্ত খাদ্য-পানীয়। তার উপর নিষ্ঠুর ইসরাঈলী বাহিনীর বর্বর আক্রমণে গাযাবাসী অসহায় হয়ে পড়ে। টানা ২২ দিনের মর্মন্তুদ হত্যাকাণ্ডে গাযা পরিণত হয় এক সাক্ষাৎ বধ্যভূমিতে। ফিলিস্তীনের সরকারি পরিসংখ্যান মতে এই হামলায় ৪১০ জন শিশু ও ১০০ জন নারী সহ ১৩০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়, আহত হয় ৫ হাজার ৩০০ লোক। ৪ হাজার ১০০ বাড়িঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। অন্যদিকে ইসরাঈলী সেনা মারা যায় মাত্র ১৩ জন।

২০১২ সালের নভেম্বরে হামাস নেতা আহমেদ জাবারিকে হত্যার অজুহাতে ইসরাঈল আবার গাযায় হামলা শুরু করে দেয়। এরপর ২০১৪ সালের ৮ জুলাই হামাসের রকেট হামলার উত্তরে ইসরাঈল গাযা এলাকায় বড় আকারের আক্রমণ শুরু করে। প্রায় দুই মাসের কাছাকাছি চলা এ যুদ্ধে প্রায় শতাধিক বেসামরিক নারী ও শিশু নিহত হয়। এসময় পুরো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও নেতারা এর তীব্র নিন্দা করে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ ও ২০১৭ সালেও ইসরাঈল তাদের আক্রমণ চালিয়ে যায়। (২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুযালেমকে ইসরাঈলের রাজধানী ঘোষণা দেন। ইসরাঈল রাষ্ট্রের জন্ম হলেও তাদের দাবিকৃত জেরুযালেমকে রাজধানী হিসেবে কোনো রাষ্ট্রই স্বীকৃতি দেয়নি। কারণ জেরুযালেম মুসলিম ও ইয়াহূদী তথা ইসরাঈল ও ফিলিস্তীনীদের জন্য পবিত্র জায়গা। জেরুযালেমকে ইসরাঈলের রাজধানী ঘোষণা করায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক সমালোচিত হয়েছেন। এদিকে ইসরাঈল এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২১ সালেও কিছু খণ্ড খণ্ড হামলার ঘটনা ঘটে। তবে স্মরণকালের সকল হামলার চেয়ে ভয়ঙ্করতম হামলা, আরব-ইসরাঈলের যুদ্ধের পর এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ শুরু হয় গত ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে। জেরুযালেমকে রাজধানী ঘোষণা করা, আরবের বিভিন্ন দেশের সাথে ইসরাঈলের উঞ্চ সম্পর্কের সূচনা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ফিলিস্তীন ইস্যু দুনিয়ার মুসলিম ও পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে বসেছিল। তাই নিজেদের গুরুত্ব বুঝাতে এবং নিজেদের আওয়াজ ‍দুনিয়ার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে শিয়ালের মতো ধুঁকে ধুঁকে মরার চেয়ে সিংহের মতো একদিন বেঁচে থাকাকে শ্রেয় মনে করে হামাসই এবারের যুদ্ধ শুরু করে। ইসরাঈল হয়তো অজুহাত দিতে পারে হামাস গাযা থেকে রকেট ছুঁড়লে তার জবাবে আমরা এই হামলা চালিয়েছি। অথচ হামাসের রকেট হামলায় ইসরাঈলের ক্ষয়ক্ষতি নাই বললেই চলে আর তার জবাবে ইসরাঈল গত কয়েক মাসে হত্যা করেছে ৩০ হাজারের অধিক মানুষকে! এরপরেও কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, শক্তির ব্যবধানে বহুগুণ পিছিয়ে থেকেও খামোখা রকেট হামলা চালিয়ে ইসরাঈলকে উসকানি দেওয়ার পিছনে হামাসের যুক্তি কী? হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান খালিদ মিশাল এর উত্তরে লিখেন, আমাদের ঘরে বানানো রকেটগুলো আর কিছুই নয়, দুনিয়ার কাছে আমাদের ফরিয়াদ। যেন তারা শুনতে পায় যে, আমরা এখনো বেঁচে আছি, মরে যাইনি। ইসরাঈল ও মার্কিন শক্তি চাচ্ছে আমরা মরব; কিন্তু আওয়াজ করব না। আমরা বলছি, আমরা মরব; তবু নীরব হব না।[8]

চলমান এই হামলার প্রথম দিকে গাযার উত্তর দিক থেকে হামলা শুরু করে ইসরাঈল। বায়ত হানুন, বায়ত লাহিয়া ও গাযা সিটিতে বিমান হামলা করে বধ্যভূমিতে পরিণত করে। অতঃপর স্থলহামলার মাধ্যমে হামাসের সুড়ঙ্গ তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকে। উত্তর গাযা থেকে মানুষজন পালিয়ে যখন দক্ষিণ গাযায় আশ্রয় নিয়েছে। প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ যখন তাঁবুতে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে, তখন ইসরাঈল আবার গাযার দক্ষিণ দিক তথা রাফাহ ক্রসিংয়ের দিক থেকে আক্রমণ শুরু করেছে। পাশাপাশি একই সাথে উত্তর গাযায়ও হামলা অব্যাহত আছে। তথা সমগ্র গাযায় এখন আর গাযাবাসীর জন্য কোনো নিরাপদ আশ্রয়স্থল নেই। ইসরাঈল এমন এক নিষ্ঠুর দেশ, যারা ফিলিস্তীনের মানুষকে তাদের দেশের অন্তর্ভুক্ত করে নাগরিকত্বও দিবে না, আবার তাদেরকে আলাদা স্বাধীন দেশও প্রতিষ্ঠিত করতে দিবে না। হয়তো পৃথিবীর ইতিহাসে এত ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতা মানুষের চর্মচক্ষু আর প্রত্যক্ষ করেনি। তবে এবারের এই ভয়াবহ আক্রমণের একটি পজিটিভ দিক হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে সমগ্র দুনিয়াতে মানুষ গাযাবাসীর অবস্থা সরাসরি তাদের থেকে জানার সুযোগ পাচ্ছে। যা একমুখী মিডিয়ার আধিপত্য ধ্বংস করে দিয়ে পাশ্চাত্য ছাত্র ও সাধারণ জনগণের মনে ফিলিস্তীনের প্রতি ব্যাপক সফট্ কর্নার তৈরি করেছে, যা অতীতে কখনো কোনো দিন ছিল না। কলম্বিয়া, হার্ভার্ড, এমআইটি থেকে শুরু করে আমেরিকা ও ইউরোপের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ ছাত্ররা ফিলিস্তীনের পক্ষে স্মরণকালের ঐতিহাসিক যে আন্দোলন করেছে, তা অবশ্যই ফিলিস্তীনের স্বাধীনতায় ভবিষ্যতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

(ইনশা-আল্লাহ চলবে)

 ফাযেল, দারুল উলূম দেওবান্দ, ভারত; বি. এ (অনার্স), মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব

এমএসসি, ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ইউনিভার্সিটি অফ ডান্ডি, যুক্তরাজ্য।


[1]. অধ্যাপক কে আলী, মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস, পৃ. ৩৩৮

[2]. এবনে গোলাম সামাদ, ইহুদীদের জাতীয় পরিচয়, দৈনিক নয়া দিগন্ত, ১৯ জানুয়ারি, ২০০৯, পৃ.

[3]. অধ্যাপক কে আলী, মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস, পৃ. ৩৩৮

[4]. প্রাগুক্ত

[5]. প্রাগুক্ত

[6]. দৈনিক নয়া দিগন্ত, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯, পৃ.

[7]. খালেদ মিশাল, কোন বর্বরতাই মুক্তির সংকল্প দমাতে পারবে না, অনুবাদ: ফারুক ওয়াসিফ, দৈনিক প্রথম আলো, ৭ জানুয়ারি, ২০০৯, পৃ. ১১

[8]. দৈনিক প্রথম আলো, ৭ জানুয়ারি, ২০০৯, পৃ. ১১

Magazine