উত্তর: অপবিত্র অবস্থায়ও কুরআন স্পর্শ করে পড়া যাবে। আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকির করতেন (ছহীহ মুসলিম, হা/৩৭৩; সুবুলুস সালাম, ১/১০২, হা/৭২)। ইবরাহীম রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, (হায়েয অবস্থায়) আয়াত পাঠে কোনো দোষ নেই। ইবনু আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা জুনুবীর জন্য কুরআন পাঠে কোনো দোষ মনে করতেন না। নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকির করতেন। উম্মু আতিয়্যা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন, (ঈদেন দিন) হায়েয অবস্থায় মহিলাদের বাইরে নিয়ে আসার জন্য আমাদের বলা হতো, যাতে তারা পুরুষদের সাথে তাকবীর বলে ও দু‘আ করে। ইবনু আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা আবূ সুফিয়ান রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন যে, হিরাক্লিয়াস (রোম সম্রাট) নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্র চেয়ে নিলেন এবং তা পাঠ করলেন। তাতে লেখা ছিল, ‘দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে। (আপনি বলুন!) হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই, যেন আমরা আল্লাহ ব্যতীত কারো ইবাদত না করি। কোনো কিছুকেই তাঁর সাথে শরীক না করি এবং আমাদের কেউ কাউকে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে রবরূপে গ্রহণ না করি। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়; তবে বলুন, তোমরা সাক্ষী থাকো যে, আমরা মুসলিম’। আত্বা রাহিমাহুল্লাহ জাবির রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন যে, আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা হায়েয অবস্থায় কা‘বা তওয়াফ ছাড়া হজ্জের অন্যান্য আহকাম পালন করেছেন, কিন্তু ছালাত আদায় করেননি। হাকাম রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, আমি জুনুবী অবস্থায়ও যবেহ করে থাকি। অথচ আল্লাহর বাণী হলো, ‘তোমরা আহার করো না সে সব প্রাণী, যার উপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়নি’ (ছহীহ বুখারী, হা/৩০৫)। উল্লেখ্য, ওযূ ছাড়া কুরআন মাজীদ স্পর্শ করা যাবে না মর্মে لَا يَمَسُّهُ إِلَّا الْمُطَهَّرُونَ আয়াতটি পেশ করা হয়। কিন্তু আয়াতটি উক্ত অর্থে বলা হয়নি এবং তার পক্ষের দলীলও নয়। বিস্তারিত দেখুন- নায়লুল আওত্বার, শাওক্বানী, ২য় খণ্ড, ২৫৯-২৬৫ পৃ.; তামামুল মিন্নাহ, ১০৭ পৃ.।
–শাহিন আলম
লালমনিরহাট।