উত্তর: টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় হবে না। দেশের প্রধান খাদ্য থেকে ফিতরা আদায় করতে হবে। আবূ সাঈদ খুদরী রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে ঈদের দিন এক সা‘ পরিমাণ খাদ্য ছাদাকাতুল ফিতর হিসেবে আদায় করতাম। আবূ সাঈদ রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমাদের খাদ্যদ্রব্য ছিল যব, কিসমিস, পনির ও খেজুর (ছহীহ বুখারী, হা/১৫১০)। আর টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা যাবে না। কেননা ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে মুদ্রার প্রচলন ছিল। তবুও তিনি ফিতরা হিসেবে মুদ্রা প্রদানের কথা বলেননি এবং ছাহাবী, তাবেঈ থেকে টাকা দিয়ে ফিতরা দেওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। আবূ সাঈদ খুদরী রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে (জীবিত) ছিলেন, তখন আমরা ছাদাকায়ে ফিতর আদায় করতাম, প্রত্যেক ছোট, বড়, স্বাধীন ও ক্রীতদাসের পক্ষ থেকে এক সা‘ পরিমাণ খাদ্য (খাদ্যশস্য) বা এক সা‘ পরিমাণ পনির বা এক সা‘ বার্লি বা এক সা‘ খেজুর অথবা এক সা‘ পরিমাণ কিসমিস। আমরা এই হিসেবে ছাদাকায়ে ফিতর দিয়ে যাচ্ছিলাম এবং অবশেষে মুআবিয়া রযিয়াল্লাহু আনহু হজ্জ অথবা উমরার উদ্দেশ্যে আগমন করেন। অতঃপর তিনি মিম্বরে আরোহণ পূর্বক ভাষণ দেন এবং লোকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সিরিয়া থেকে আগত দুই মুদ গম এক সা‘ খেজুরের সমপরিমাণ। তখন লোকেরা তাই গ্রহণ করেন। কিন্তু আবূ সাঈদ আল-খুদরী রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি যতদিন জীবিত আছি, ছাদাকায়ে ফিতর এক সা‘ হিসেবেই প্রদান করতে থাকব (সুনান কুবরা, বায়হাকী, হা/৭৭৭৬; আবূ দাঊদ, হা/১৬১৬)। মুসলিমের বর্ণনায় আছে, আবূ সাঈদ রযিয়াল্লাহু আনহু-এর বিরোধিতা করলেন এবং বললেন, রসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় যেভাবে এক সা‘ খেজুর বা কিসমিস বা যব বা পনির দিতাম এখনো আমি সে পরিমাণেই দিব (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৭৭)। আবূ সাঈদ খূদরী রযিয়াল্লাহু আনহু-এর নিকটে রামাযানের ফিতরা সম্পর্কে আলোচনা করা হলে তিনি বলেন, আমি শুধু তাই বের করব যা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে বের করতাম। তা হলো এক সা‘ খেজুর বা গম বা যব অথবা পনির। এক লোক বলল, দুই মুদ গম (বের করলে ফিতরা আদায় হবে না)? তিনি বলেলেন, এটা মুআবিয়া রযিয়াল্লাহু আনহু-এর পরিমাণ। আমি তা গ্রহণ করব না আর এর প্রতি আমলও করব না (সুনান কুবরা, বায়হাকী, হা/৭৭৭৮)।
প্রশ্নকারী : সুমাইয়া
টঙ্গী, ঢাকা।